রুশ সামরিক শক্তির কাছে ইসরাইলের আয়রন ডোম কিছু নয়: ইউক্রেন
ইউক্রেনে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রের মুখে টিকতে পারবে না। শনিবার (৯ জুলাই) ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ ফোর্বস শীর্ষ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নাম জানি। কিন্তু এটি শতভাগ সুরক্ষা দিতে সক্ষম নয়।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে আমি ইসরাইলে গিয়েছিলাম এবং তাদের অস্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ও রাষ্ট্রীয় কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। আয়রন ডোম তৈরি করা হয়েছে ধীর, কম উচ্চতার এবং কম ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য। এটি মূলত গ্যারেজে তৈরি হয়েছে। ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর নয় এসব আয়রন ডোম।
গত বছরের মে মাসে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা কয়েক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। কিন্তু ইসরাইলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সে সব ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই ভূপাতিত করতে ব্যর্থ হয়। অথচ এ ব্যবস্থা নিয়ে ইসরাইল ব্যাপক গর্ব করে থাকে।
এদিকে পূর্ব-ইউক্রেনের দোনেৎস্ক এলাকায় রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলায় একটি পাঁচতলা ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আরও অন্তত ২০ জন ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি দোনেৎস্ক অঞ্চলের ক্রামাতোরস্ক ও স্লোভিয়ানস্ক শহরে হামলা আরও জোরদার করে রাশিয়া। লুহানস্ক দখলের পর এখন রাশিয়ার মূল লক্ষ্য দোনেৎস্ক অঞ্চল দখল। পুরো দোনবাস রাশিয়ার অংশ বলে দাবি করে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আরও পড়ুন: পশ্চিমা বিশ্বকে নতুন চ্যালেঞ্জ পুতিনের
এদিকে লুহানস্কের একটি নার্সিং হোমে রুশ সেনাদের হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ইউক্রেনের সেনাদেরও দায়ী করেছে জাতিসংঘ। শনিবার (৯ জুলাই) জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের এক রিপোর্টে এমনটা দাবি করা হয়।
রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর কয়েকদিন পর ১১ মার্চ দোনবাস অঞ্চলের লুহানস্কের স্তারা ক্রাসনিয়াঙ্কার এক নার্সিং হোমে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নার্সিং হোমটিতে ৭১ জন মানুষ ছিল। যাদের বেশিরভাগই ছিল বয়স্ক মানুষ।
এ হামলার ঘটনায় যথারীতি রাশিয়াকে দায়ী করে ইউক্রেন। রুশ বাহিনী নার্সিং হোমে হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধ করেছে বলেও দাবি করে কমিশন। তবে তদন্তের পর জাতিসংঘ এ ঘটনায় সমানভাবে দায়ী করেছে ইউক্রেনকেও।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, ইউক্রেনিয় বাহিনী ওই নার্সিং হোমটিকে মানব দেয়াল (হিউম্যান শিল্ড) হিসেবে ব্যবহার করেছে। তবে জাতিসংঘ তাদের রিপোর্টে ঠিক কোন পক্ষ যুদ্ধাপরাধ করেছে তা স্পষ্ট করে জানায়নি।
সূত্র: রয়টার্স, পার্সটুডে
No comments: