Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » যে কারণে বন্যার ভয়াবহ রূপ দেখছে পাকিস্তান




যে কারণে বন্যার ভয়াবহ রূপ দেখছে পাকিস্তান

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান। প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ করেই কেন দেশটির বন্যা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের চূড়ান্ত রূপ দেখছে পাকিস্তানবাসী। যদিও নদীর তীরে ভবন নির্মাণ ও সরকারের অপরিকল্পিত নগরায়ণকে দুষছেন স্থানীয়রা। পাকিস্তান সরকার বলছে, দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা বর্তমানে পানির নিচে। বিভিন্ন প্রদেশের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে রাস্তা, বাড়িঘর ও ফসলি জমি। সরকারি হিসাবে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ প্লাস্টিকের ব্যাগে করে চিরকুট ছুড়ে সাহায্য চাইছে সাধারণ মানুষ। আরও পড়ুন: পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে, নিঃস্ব সাড়ে তিন কোটি মানুষ দেশটির পার্বত্য অঞ্চলগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারের সাহায্যে আটকেপড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তানে চলমান বন্যা আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় দেড় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। বন্যার কারণে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন ভয়াবহ রূপ নিল এবারের বন্যা? গত সপ্তাহে সোয়াত নদী প্লাবিত হয়ে উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ঢোকে বন্যার পানি। বিশেষ করে প্রদেশটির চরসদ্দা এবং নওশেহরা জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে বন্যার পানি আশপাশের এলাকাতেও ঢোকে। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ বলছে, তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত দেখছে দেশটি। পাকিস্তানের জলবায়ুমন্ত্রী শেরি রেহমান জানান, অন্যান্য বছরে এই সময় বর্ষাকাল বৃষ্টির তিন থেকে চারটি চক্রের মধ্য দিয়ে গেলেও এ বছর এখন বৃষ্টির অষ্টম চক্র চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মূল্য দিচ্ছে পাকিস্তান? বিরামহীন এই বৃষ্টিকে চরম পর্যায়ের জলবায়ুজনিত মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে পাকিস্তান সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তার দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অবহিত করছেন। তার দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের বড় ধরনের মূল্য দিতে হচ্ছে তার দেশকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সব প্রভাব দৃশ্যমান পাকিস্তানে। দেশটির জলবায়ু পরিষদের সদস্য আবিদ কাইয়ুম সুলেরি বলেন, গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত দেখেছে পাকিস্তান। সাধারণত যে বৃষ্টিপাত হয় তার চেয়ে ৭৮০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশেই ৪০০ শতাংশের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা বন্যায় রূপ নিয়েছে। গোটা বিশ্বের ওপরই আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানও এর ব্যতিক্রম নয়। লাহোরভিত্তিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মহসিন হাফিজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। অতিবৃষ্টি, তাপমাত্রা কিংবা দাবদাহ ও ভয়াবহ মাত্রায় বরফ গলার বিষয়ে আগে থেকেই পাকিস্তান নিয়ে সতর্ক করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই চলমান বন্যাকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ বিপর্যয়ের প্রভাব হিসেবেই দেখছেন তারা। আরও পড়ুন: বন্যার কারণে পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা জারি জলবায়ু পরিবর্তনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তাপমাত্রা। অতিবৃষ্টির মতো তাপমাত্রাও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পাকিস্তানে। গত মে মাসে টানা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দেশটিতে। আবহাওয়া বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে পাকিস্তানে চরম তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন তাপপ্রবাহের আশঙ্কা ৩০ গুণ বেড়েছে। তামপাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতাও বেড়ে যায়, যা পরে বন্যার সময় ভয়াবহ উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মাইকেল ওপেনহেইমার বলেন, গোটা বিশ্বেই ভারি বৃষ্টি ও ঝড় আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া দফতরের প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে ভারত ও পাকিস্তানে তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়ায়। কিন্তু এ অঞ্চলে এমন তাপমাত্রা প্রতি তিন বছরে একবার দেখা যেতে পারে। আর এর মূলে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। অপরিকল্পিত নগরায়ণও দায়ী? সরকারি কর্মকর্তারা বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করলেও, অনেকেই বন্যায় এত ক্ষয়ক্ষতির কারণ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন। ২০১০ সালেও পাকিস্তানে বন্যায় প্রায় দুই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাকিস্তান জলবায়ু পরিষদের সদস্য আবিদ কাইয়ুম সুলেরি বলেন, নদীতীরে ঘরবাড়ি বা দালানকোঠা নির্মাণ বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। আরও পড়ুন: বন্যার্তদের দেখতে গিয়ে বোতলের পানি দিয়ে পা ধুলেন এমপি! করোনা মহামারি, রাজনৈতিক পট পরিবর্তন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বাজেট ঘাটতিতে এমনিতেই টালমাটাল পাকিস্তান। তার ওপর এখন নতুন করে অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকট হিসেবে যোগ হয়েছে বন্যা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে পাকিস্তান। কৃষিখাতের ওপরও এর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়বে বলে ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ভয়াবহ এই বন্যা মোকাবিলায় জরুরিভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply