Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: স্বার্থের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমের জয়?




ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর চার মাসে রুশ বাহিনী যে সাফল্য অর্জন করেছিল, মাত্র চার দিনে তা ধুলায় মিশিয়ে দেয়ার দাবি করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চলেও পাল্টা আক্রমণে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর ইউক্রেনের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখনও নিশ্চুপ মস্কো। রুশ বাহিনী কি তাহলে পিছু হটছে? নাকি এটি যুদ্ধের নতুন কোনো কৌশল? ছবি: বিবিসি প্রায় সবারই জানা যে সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে ইউক্রেনের তুলনায় অনেক এগিয়ে রাশিয়া। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুসারে, বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় অবস্থানে রাশিয়া। অন্যদিকে ইউক্রেনের অবস্থান ২২তম। ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার এই শক্তিমত্তা সত্ত্বেও কেন পিছু হটছে রুশ বাহিনী? সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া অনেক শক্তিশালী দেশ হলেও ইউক্রেনের সাফল্যে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে পশ্চিমাদের সরবরাহ করা সামরিক সরঞ্জাম। একে তো সার্বভৌমত্বের লড়াইয়ের স্পৃহা, তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অব্যাহত সামরিক সহায়তা ইউক্রেনের প্রতিরোধযুদ্ধের গতি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। আরও পড়ুন: রুশ হামলায় একদিনে ইউক্রেনের ৮ শতাধিক সেনা নিহত যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার সমমানের গোলাবারুদ ও অস্ত্র ব্যবহার করলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হাতে পায় কিয়েভ। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মানের অস্ত্র সরঞ্জাম হাতে পাওয়ার পর যুদ্ধের মোড় অনেকটাই ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূর পাল্লায় নিক্ষেপযোগ্য অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘হিমার্স’ উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া হাওউইতজার, সুইচেবল ড্রোন, রকেট লঞ্চার, বিমানবিধ্বংসী গোলা, সাঁজোয়া যানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, কৌশলগত সাঁজোয়া যান ইউক্রেনের সাফল্যে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই দেড় হাজার কোটি ডলারের বেশি সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যে সহায়তায় অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল জ্যাভলিন থেকে শুরু করে গোলাবারুদ ও ন্যাটোর রণসরঞ্জামের সমতুল্য সমরাস্ত্রও রয়েছে। অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোও সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনকে। যে কারণে ইউক্রেনে একপ্রকার হিমশিম খাচ্ছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশটির নাম রাশিয়া। ক্যাস্টেলিয়াম এ আইয়ের তথ্য বলছে, গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর ৯ হাজারের বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। যে নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছে বলেও দাবি করা হয়। রাশিয়ায় অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম স্থগিত বা বন্ধ করে দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অ্যাপল, ম্যাকডোনাল্ডস, ভিসা ও মাস্টারকার্ডের মতো আন্তর্জাতিক নামি-দামি প্রতিষ্ঠানও। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জ্বালানি ও গ্যাস রফতানির মাধ্যমে রাশিয়া তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও আধুনিক অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, রাশিয়াও বর্তমানে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশে পরিণত হয়েছে; কেননা তারাও পুরনো অনেক রণসরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও নতুন অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকছে। আর নতুন অস্ত্র কেনার প্রক্রিয়া এটাই প্রমাণ করে যে রাশিয়া রণসরঞ্জামের অভাবে রয়েছে। আমদানি-রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে নতুন অস্ত্র কিনতে পারছে না রাশিয়া। পুতিনের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন থেকে রুশ বাহিনীর পিছু হটার অন্যতম একটি কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। শুরুতে অল্প সময়ের মধ্যে ইউক্রেনকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা হাতে নেন পুতিন। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর লড়াইয়ের স্পৃহা যে এত বেশি হবে তা তিনি অনুমান করতে পারেননি বলে মত সমরবিদদের। আরও পড়ুন: যুদ্ধে ইউক্রেন বাহিনীর অগ্রগতি হয়েছে: ব্লিংকেন শুধু তাই নয়, পশ্চিমা দেশগুলো যে অব্যাহতভাবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেবে তা-ও পুতিনের কল্পনাতীত ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, রাশিয়া তাদের শত্রুবাহিনীকে কখনোই অতটা গুরুত্ব দেয়নি। কৌশলগত ভুল উচ্চাশা ও অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষার কারণে শুরুতেই রাশিয়ার কিছু কৌশলগত ভুল হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। গত এপ্রিলে কিয়েভ ও ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে ইউক্রেনের সেনারা যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তখন রুশ বাহিনী স্বঘোষিত লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের সেনাদের ব্যবহার করে। এমনিতে লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের যোদ্ধারা ইউক্রেনবিরোধী। তাই তারা যে স্পৃহা থেকে যুদ্ধ করেছে, তাদের মানসিকতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে ওঠেনি রুশ সেনারা। কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনারা লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের সেনাদের যখন প্রায় শেষ করে দিয়েছে তখন সে জায়গায় স্থান পায় রুশ সেনারা। বিশ্লেষকদের দাবি, দোনবাসের সেনারা নিজেদের অঞ্চলকে স্বাধীন করার মানসিকতা নিয়ে যুদ্ধ করলেও সাধারণ রুশ সেনাদের অনেকেই শুধু অর্থের জন্য যুদ্ধে যেতে বাধ্য হয়েছে। আর তাদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণও ছিল না বলেও দাবি করা হয়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ইউরি ফেদোরোভ বলেন, খারকিভে যুদ্ধ করার জন্য পাশের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক থেকে অনেককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে বেসামরিক মানুষও ছিলেন, যাদের কাউকেই যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। অনেকের যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা ছিল না। আবার অনেকেই বুঝতে পারেননি যে তারা কেন যুদ্ধ করতে এসেছেন। তাই তাদের সামনে পিছু হটা ছাড়া উপায় ছিল না। ভাড়াটে সেনা বনাম ইউক্রেনের স্বেচ্ছাযোদ্ধা সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধের স্পৃহার সঙ্গে অর্থ বা অন্য কোনো সম্পদেরই তুলনা চলে না। আর ইউক্রেনের যুদ্ধের ময়দানে এটিই বারবার প্রমাণিত হয়েছে। যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে নিজেদের সেনার পাশাপাশি রাশিয়াকে বিদেশি ও ভাড়াটে সেনার ওপর নির্ভরশীল হতে হয়েছে। আর রাশিয়া যখন ভাড়াটে সেনাদের কিনতে ব্যস্ত, তখন ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদী প্রায় সব নাগরিকই যুদ্ধে অংশ নেয়। আর এখানেই যুদ্ধে বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ইউক্রেন। সামরিক ব্যর্থতা নাকি কৌশল? জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব ব্রেমেনের রাশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক নিকোলাই মাইত্রোখিনের মতে, খারকিভে ইউক্রেনের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক প্রশ্ন সামনে এসেছে। সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি উঠছে, তা হলো রুশ সেনারা কেন পিছু হটলেন? নিকোলাইয়ের মতে, এর অন্যতম বড় কারণ মস্কোশাসিত এলাকা দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা। এ জন্যই খারকিভের মতো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়েছে মস্কো। আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: উভয় চাপে জার্মানি বিশ্লেষক নিকোলাই বলেন, খারকিভ থেকে পিছু হটার সিদ্ধান্ত মস্কোর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই এসেছে। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া সেখানকার অবশিষ্ট রসদ ও যোদ্ধাদের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিরাপত্তায় মোতায়েন করেছে। অনেক আগে থেকেই দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে পুতিন সরকার। যদিও সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ইউক্রেনে লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply