জ্বালানি সংকট: চরম বিপাকে জার্মান সরকার
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকেই জ্বালানি সমস্যার এখনও কোনো কূলকিনারা করতে না পেরে জার্মান সরকার চরম বিপাকে। বিশেষ করে দেশটির পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ছে মতবিরোধ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সমৃদ্ধ জার্মানির বড় দুশ্চিন্তার নাম জ্বালানি খাত। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ হওয়ার পর থেকেই আকাশচুম্বী সব ধরনের জ্বালানির দাম। সংকট নিরসনে প্রবল সমালোচনার মুখেও দেশটির পরমাণু শক্তি কেন্দ্রগুলোর দিকে ঝুঁকছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের নেতৃত্বাধীন জার্মানির তিন দলের জোট সরকার।
তবে তেল, গ্যাস ও কয়লা চালিত উৎসগুলোর পরিবর্তে দেশব্যাপী পরমাণু বিদুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে না দিয়ে আপৎকালীন সংকট মোকাবিলায় তা চালু রাখার সময়সীমা নিয়ে ক্ষমতাসীন তিন দলের মধ্যেই দেখা দিয়েছে ব্যাপক মতবিরোধ।
বিশেষ করে দেশজুড়ে চরম জ্বালানি সংকট সত্ত্বেও দেশটির অর্থনীতি ও জ্বালানিমন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেকের গ্রিন দলের চাওয়া, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী অঙ্গরাজ্য বায়ার্নের আইজার ২ ও বাডেন ভুইর্টেমবার্গের নেকারভেস্টহাইম ২-এর মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০২৩ সালের এপ্রিলের পর বন্ধ করে দেয়া।
আরও পড়ুন: গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ভর্তুকি দেবে জার্মানি
কিন্তু বর্তমান সংকটকে মাথায় রেখে এ সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করেন জোটের আরেক শরিকদল অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারের এফডিপি। তাদের চাওয়া, চলতি বছরের শেষে কিংবা আসছে বছরের মাঝামাঝিতে অঙ্গরাজ্য নিদারজাক্সেনের এমসলান্ডসহ অন্য যে কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন বন্ধ করে না দেয়া হয়। এ নিয়ে চ্যান্সেলর শলজের নেতৃত্বে তিন দলের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও সমাধান ছাড়াই শেষ হয় আলোচনা।
দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দেশের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু রাখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। প্রয়োজনে পার্লামেন্টে তা নিয়ে আরও বিশদ আলোচনাও হতে পারে।
ছটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জার্মানির বিদ্যুতের ঘাটতি মেটে ৬ শতাংশ। ৪১ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে। আর কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো থেকে আসে কমপক্ষে আরও ২৮ শতাংশ। জ্বালানি সংকটে সরকারের শরিক দলেই এমন মতপার্থক্য চলমান সমস্যাকে আরও জটিল করবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের
No comments: