কাছাকাছি প্রসেনজিৎ ও দেব, ‘কাছের মানুষ’ থেকে সবচেয়ে জরুরি প্রাপ্তি যেন সেটিই
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও দেবের ‘কাছের মানুষ’ ভাবায়। দুর্গাপুজোর চাকচিক্যের থেকে বেশ দূরে এ ছবির পটভূমি। আবার এ ছবি পুজোর গল্পও বলে বটে।ইন্ডাস্ট্রি ও সাংসদ। কাছাকাছি। তাঁরাই কি কাছের মানুষ হয়ে উঠবেন? কিন্তু কাছের মানুষের অর্থ কী? তার সঙ্গে কি স্বার্থ জড়িয়ে থাকে? নাকি কাছাকাছি আসতে হলে নিঃস্বার্থই হতে হয়?
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও দেবের ‘কাছের মানুষ’ ভাবায়। পুজোর আগে মন ভাল করা ছবির অভাব নেই। তেমনটাই তো সকলে দেখতে চান। দেখে অভ্যস্তও। কিন্তু উৎসব মানে যে সব চিন্তা ভুলে যাওয়া নয়, তা বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে পারেন এমন দুই তারকাই। তাঁরা কাছাকাছি এলেই বুঝি এমনটা হতে পারে। আর তা-ই হল।
দুর্গাপুজোর চাকচিক্যের থেকে বেশ দূরে এ ছবির পটভূমি। সাধারণ যাপন। নিরাপাত্তাহীনতার কথা। হারানোর ভয়। সে সবই তো থাকে রোজের জীবনে। উৎসবের আলো সে সব তো আসলে দূর করতে পারে না। এলআইসি এজেন্ট সুদর্শন ঘোষের (প্রসেনজিৎ) অসুস্থ বোন কুসুমকে (ইশা সাহা) বাঁচানোর চেষ্টার এ কাহিনিতে তা ঘিরেই আসে নানা মোড়। ভালবাসা অন্ধ করে দেয়। অভাব সাধারণ মানুষের ভিতর থেকেও হিংস্র মনোভাব বার করে আনে। এ কি আর পুজোর সময় ভুলে গেলে চলে? সে সব হিংসা, অস্বস্তি, নিরাপত্তাহীনতা— সব দমন করার চেষ্টাই তো লুকিয়ে আছে শক্তির আরাধনার এই আয়োজনে। তাই এ ছবি পুজোর গল্পও বলে বটে। অন্তরের অশুভকে নাশ করে শুভ শক্তি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা। আপনকে আগলে রাখার উদ্যোগের কথা বলতেই যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে কুন্তলের (দেব) ভূমিকা।
এক কালে মত ছিল, দু’জন বড় তারকা এক পর্দায় দেখা না দেওয়াই শ্রেয়। একে অপরকে জায়গা দিতে পারেন না তাঁরা। কিন্তু সময় বদলানোর ডাক অনেক দিন আগেই দিয়েছে বলিউড। এমনকি, অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, হৃতিক রোশনও একসঙ্গে দেখা দিয়েছেন। টলিপাড়াতেও এ প্রবণতা আগে এসেছে আগেই। অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও ঋত্বিক চক্রবর্তী একসঙ্গে দেখা দিয়েছেন ‘ভিঞ্চি দা’-এ। ‘ঘরে বাইরে আজ’-এ অনির্বাণকেই দেখা গিয়েছে যিশু সেনগুপ্তর সঙ্গে। এমনকি, দেবের ‘ককপিট’-এ অল্প সময়ের জন্য দেখা দিয়েছেন প্রসেনজিৎ। তবে টলিপাড়ার সবচেয়ে ভারী দুই নামের মধ্যে দু’জন টানা সওয়া দু’ঘণ্টা একই পর্দায় তো আর বার বার দেখা দেন না। তবে চলচ্চিত্র মাধ্যম হিসাবে যে সর্বত্রই উন্নত হয়েছে অনেক, তা বোঝা যায় দুই তারকাকে দেখলে। বিরোধী নয়, টানা একে অপরের পরিপূরকের ভূমিকা পালন করলেন দু’জনে। প্রসেনজিতের অভিজ্ঞতা, দেবের তারুণ্য ধরে রাখল এক অসহায় দাদার অবাস্তব পরিকল্পনা থেকে তৈরি হওয়া সেই কঠিন টানাপড়েন।
পরিকল্পনাটি কী?
এলআইসি এজেন্ট সুদর্শন হঠাৎ এক সাক্ষাৎকারে জেনে গিয়েছেন কুন্তল অসহায়। সব টাকা চিট ফান্ডে চলে গিয়েছে। সে দুঃখে ভাই আত্মহত্যা করেছে। বাবা নেই। ভাইয়ের শোকে মা-ও অসুস্থ। বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না। এমন অবস্থায় সেই কুন্তলের নামে পলিসি করাতে চান সুদর্শন। কারণ, সে পলিসির শর্ত হল, দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটলে তার নমিনি পাবেন ১০ লক্ষ টাকা। আর তাই কুন্তলের পলিসির নমিনি হবেন এজেন্ট নিজেই। পরিকল্পনা করে মরতে হবে কুন্তলকে। তা দেখতে যেন হয় দুর্ঘটনার মতো, খেয়াল রাখতে হবে। মৃত্যুর পর টাকা পাবেন সুদর্শন। তার এক ভাগ দিয়ে হবে বোন কুসুমের হার্টের অস্ত্রোপচার। যে কারণে এত দুশ্চিন্তা সুদর্শনের। সে টাকা জোগাড় করার জন্যই তো এত পরিকল্পনা। পলিসির বাকি টাকা ব্যবহৃত হবে কুন্তলের অসুস্থ মায়ের দেখাশোনায়। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হতে হয় কুন্তলকে। কারণ আর কোনও উপায় নেই যে তাঁর হাতেও।
আরও পড়ুন:
No comments: