Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » আইপিএসের ‘ফাঁদ’ এড়ানোর সুযোগ আছে কি বাংলাদেশের?




আইপিএসের ‘ফাঁদ’ এড়ানোর সুযোগ আছে কি বাংলাদেশের? যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের প্রধান শক্তিধর দেশগুলোর নজর এখন ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে। ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় এ অঞ্চলে বাংলাদেশের যথেষ্ট কদর রয়েছে। শুরু থেকেই ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর কৌশল (আইপিএস) নিয়ে অনেক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করছে। একইসঙ্গে রয়েছে কিছু উদ্বেগও। বাংলাদেশের আশঙ্কা, আইপিএসে যোগ দিলে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। কারণ ২০১৮ সালে মার্কিন নেতৃত্বে গঠিত আইপিএসকে দেখা হচ্ছে চীনবিরোধী শক্তি হিসেবে। আবার যুক্তরাষ্ট্র অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন অংশীদার ও বৃহত্তম বিনিয়োগকারী। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কী করবে? কারণ, সময় এখন যে কোনো একটি বলয়কে বেছে নেয়ার দিকেই এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশ ও জোট মিলিয়ে ২০টি আইপিএস রয়েছে। ২০০৭ সালে প্রথম আইপিএসের ধারণা নিয়ে আসেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এর কয়েক বছর পর অস্ট্রেলিয়াও এ ধারণার গুরুত্ব বুঝতে পারে। এরপর ২০১৩ সালে আই‌পিএস হিসেবে চীনও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্প চালু করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও তার কৌশল ঠিক করে নেয়। গত ৩১ মার্চ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আইপিএস নিয়ে বলেছিলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় কৌশল কোনো সামরিক জোট নয়। এটির উদ্দেশ্য ভিন্ন। এটি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক অঞ্চলের প্রতিযোগিতারও বিষয় নয়। আমরা ইন্দো-প্যাসিফিককে স্বতন্ত্র অঞ্চল হিসেবেই দেখি। তবে ফ্রান্স ও জার্মানি আইপিএসের ব্যাপারে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, আইপিএসের মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য ঠেকানো ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হবে। অনে‌কে আবার চীনকে বাংলাদেশের ‘সব আবহাওয়ার বন্ধু’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্কও ঈর্ষণীয়। ভারতের অবজারভার ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশ সবচেয়ে কম সংবেদনশীল প্রতিবেশীদের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশের মোট আমদানি বাণিজ্যের ২৫ শতাংশই আসে চীন থেকে। ২০২০-২১ অর্থবছরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে এক হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য। শুধু আইপিএস নয়, চীনকে ঠেকাতে ২০০৭ সালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতকে নিয়ে অনানুষ্ঠানিক কৌশলগত সামরিক জোট গঠন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। কোয়াড নামেও এই জোটও বেশ আলোচিত। কোয়াডের পর যুক্তরাষ্ট্র গঠন করে অকাস, আর এখন আলোচনা কোয়াড প্লাস নিয়ে। সবকটি জোট গঠনের লক্ষ‌্য স্পষ্ট যে, সেগুলো চীনবিরোধী জোট। চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বাংলাদেশকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যদি চীনবিরোধী জোটে যুক্ত হয়, তাহলে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হবে।’

এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জানান, আইপিএস ইতিবাচক ও সম্মিলিত একটি রূপকল্প করতে চায়। এর আওতায় বাংলাদেশ, চীন, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশ উন্নতি করতে পারবে। কৌশলটির অন্যতম মূলনীতি হলো, প্রতিটি দেশ কোনো চাপ বা জবরদস্তি ছাড়াই এতে যোগ দিতে পারবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্পৃক্ত হতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের আইপিএস কৌশলপত্রে পাঁচটি মূল উপাদানের কথা বলছে। যেমন অবাধ ও উন্মুক্ত, আন্তঃসংযোগ, সমৃদ্ধশালী, নিরাপদ ও ঝুঁকি সহিষ্ণু। বাংলাদেশও চায়, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে অবাধ, মুক্ত, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে আইপিএসে যুক্ত করতে আগ্রহী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশকে কোনো পক্ষের কৌশলে ঢুকে পড়া ঠিক হবে না। কারণ ভূকৌশলগত এই খেলায় খেলোয়াড় হতে পারবে না বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র যত আশ্বাস দিক না কেন, এটা যে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের চীনবিরোধী কৌশল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ডেভিড ব্রুস্টার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত মহাসাগর ঘিরে নিরাপত্তা হুমকি বেশি। এরমধ্যে একটি হলো ভারত ও চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। বড় দেশগুলো স্নায়ুযুদ্ধ বা পরাশক্তির প্রতিযোগিতায় জড়ালে তার প্রভাব ছোট দেশগুলোতে পড়ে। শান্তি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ভূরাজনৈতিক কৌশল যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তাতে বাংলাদেশের এসব বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আইপিএস নিয়ে বাংলাদেশ যদি কোনো কৌশল ঠিক করে, তাতে ভারসাম্য থাকতে হবে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সাফল্য দেখিয়ে আসছে। চীনের বিআরআই, যুক্তরাষ্ট্রের কোয়াড উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থায় ছিল। এবার আইপিএস ইস্যুতে বাংলাদেশ কী ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে? আইপিএস নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ যেহেতু বঙ্গোপসাগরের অংশ, তাই আইপিএস এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ অঞ্চলে কিছু ঘটলে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়বে। এক্ষেত্রে আমাদের অর্থনেতিক স্বার্থ ও কৌশলগত নিরপেক্ষতা জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। ডেভিড ব্রুস্টারের মতে, বিশ্বে ভূ-রাজনৈতিক যে পরিবর্তন তাতে বাংলাদেশের পছন্দ হোক বা না হোক, এর প্রভাব পড়বেই। এ অঞ্চলে শুধু বঙ্গোপসাগর নয়, মিয়ানমার, রোহিঙ্গা, জলবায়ু পরিবর্তন ও উগ্রপন্থার মতো ঝুঁকিও রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে কৌশলগত পরিবর্তনে খাপ খাবে। এ ক্ষেত্রে কৌশলগত পরিবেশ নির্ধারণে জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের সঙ্গে কাজ করতে পারে ঢাকা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ কোনো পক্ষে যাওয়ার অবস্থানে নেই। বাংলাদেশের কোনোভাবেই সামরিক ও কৌশলগত জোটে ঢুকে পড়া ঠিক হবে না। কারণ এতে বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হ‌বে এবং তা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার জন্য সুখকর হবে না






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply