নিজে গোল করলেও আর্জেন্টিনাকে জেতাতে পারেননি মেসি। কিন্তু রোনালদো পারলেন। তার গোলেই প্রথমে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। সমতা ফেরালেও ধরে রাখতে পারল না ঘানা। তিন মিনিটের ব্যবধানে দু’গোল করে খেলার ফল স্পষ্ট করে দিলেন ফেলিক্স ও রাফায়েল। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ল পর্তুগাল।
প্রথম থেকেই বলের দখল ছিল পর্তুগালের পায়ে। দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণ তুলে আনছিল তারা। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি। প্রথম কয়েক মিনিটে তেমনভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি রোনালদোকে। ১০ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পান সিআরসেভেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি।
বক্সের বাইরে বলের দখল হাতছাড়া করেন ঘানার ডিফেন্ডার কুডুস। ব্রুনো ফার্নান্ডেজ বলা বাড়ান ফাঁকায় থাকা রোনালদোর উদ্দেশে। মধ্যে ঢুকে গোলরক্ষকের উপর দিয়ে মারার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পারেননি। দু’মিনিট পরে আবার গোল করার সুযোগ পান রোনালদো। এবার হেডে। কিন্তু ঠিক জায়গায় বল লাগাতে পারেননি। তাই পোস্টের বাইরে দিয়ে বল বেরিয়ে যায়।
ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে ঘানা। পুরোপুরি রক্ষণাত্মক না হয়ে নিজেদের মধ্যে পাস দিয়ে মাঝে মাঝে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তেমনভাবে কোনও ভালো আক্রমণ দেখা যায়নি। বেশি সুযোগ তৈরি করেছে পর্তুগাল। কিন্তু গোল করতে পারেনি তারা। বের্নার্দো সিলভা, ফেলিক্সরা মাঝেমধ্যে বক্সের মধ্যে ঢুকলেও গোলের মুখ খুলতে পারেননি।
৩১ মিনিটের মাথায় ঘানার গোলে বল জড়ান রোনালদো। কিন্তু ফাউলের কারণে সেই গোল বাতিল করেন রেফারি। ঘানার বক্সে বল তোলেন ফেলিক্স। ঘানার অধিনায়ক জিকুর কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে গোল করেন রোনালদো। কিন্তু রেফারি মনে করেছেন, ফাউল করেছেন রোনালদো। তাই গোল বাতিল করেন তিনি। ফলে গোলশূন্য শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চাপ বাড়াতে থাকে পর্তুগাল। তার ফলও মেলে। ৬২ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে রোনালদোকে ফাউল করেন ঘানার সালিসু। পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। ঘানার ফুটবলাররা রেফারির কাছে আবেদন করতে থাকেন যে পেনাল্টি ন্যায্য নয়। কিন্তু কোনও আপত্তি গ্রহন করেননি রেফারি। খালি চোখে দেখে মনে হয়েছে, রোনালদোকে ফাউল করা হয়েছিল। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি রোনালদো। গোলরক্ষকের ডান দিক দিয়ে টপ কর্নারে বল রাখেন তিনি। গোলরক্ষক জিজির কিছু করার ছিল না। এখন রোনালদোই প্রথম ফুটবলার যিনি টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করলেন।
৭২ মিনিটের মাথায় গোল শোধ করে ঘানা। বাঁ প্রান্ত ধরে বল নিয়ে এগিয়ে পর্তুগালের বক্সে ঢুকে পড়েন কুডুস। দলের স্ট্রাইকার আন্দ্রে আয়িউর উদ্দেশে বল বাড়ান তিনি। ডান পায়ের টোকায় গোল করেন আয়িউ। কিছু করার ছিল না পর্তুগালের গোলরক্ষক দিয়োগো কোস্তার। পাঁচ মিনিট পরে আরও একবার এগিয়ে যায় পর্তুগাল। মাঝমাঠে বল ধরে হোয়াও ফেলিক্সের উদ্দেশে বল বাড়ান ব্রুনো ফের্নান্দেস। অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে বল ধরে বক্সে ঢোকেন ফেলিক্স। ডান পায়ের শটে গোল করেন ফেলিক্স।
দুই মিনিট পর ঘানার ফুটবলারের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন ফের্নান্দেস। তিনি পাস দেন সিলভাকে। বল ধরে এগিয়ে এসে রাফায়েল লিয়াওয়ের দিকে বল বাড়ান তিনি। ঠান্ডা মাথায় গোল করেন পরিবর্ত হিসাবে নামা রাফায়েল।
৮৮ মিনিটের মাথায় আরও এক গোল শোধ দেয় ঘানা। পর্তুগালের দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে গোল করেন বুকারি। কিছুটা চাপে পড়ে যায় পর্তুগাল। কিন্তু তার পরে আর কোনও গোল হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২৪ মিনিটে হওয়া পাঁচ গোলের উত্তেজনা শেষে জিতেই মাঠ ছাড়ে রোনালদোর পর্তুগাল।
No comments: