জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তিবঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা ৯০ হাজার আসনে হবে মূল লড়াই পছন্দের প্রতিষ্ঠানে আসন সংকট * প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে পার্থক্যের কারণেই এ সংকট -ড. মুহাম্মদ আলমগীর * উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন আছে সাড়ে ১৪ লাখ, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে সোয়া আট লাখ
উচ্চ মাধ্যমিকের ফল হাতে পাওয়ার পরদিনই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মেধাবীরা। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে এখন তাদের উচ্চশিক্ষা স্তরে যাত্রা শুরু হবে। কিন্তু ভালো ফলধারী শিক্ষার্থীর তুলনায় মানসম্পন্ন তথা পছন্দের প্রতিষ্ঠানে আসন খুবই সীমিত। Advertisement এ অবস্থায় কঠিন ভর্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাদের ‘সোনার হরিণ’ নামের আসনটি অর্জন করতে হবে। নইলে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, ভালো মাওলানা কিংবা অন্য কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়ার স্বপ্ন হবে তিরোহিত। প্রত্যাশিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তিযোগ্য আসন আর শিক্ষার্থীর পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য মিলেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার মতো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে আসন আছে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ। তবে এর মধ্যে সাধারণত বুয়েট, মেডিকেল, বড় সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সাকুল্যে ৯০ হাজারের মতো আসনের প্রতি থাকে ভর্তিচ্ছুদের চোখ। ওইসব প্রতিষ্ঠানে তারা এক প্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েন। অন্যদিকে এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির শর্ত অনুযায়ী সাধারণত জিপিএ ৩ দশমিক ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পায়। এবারে (২০২২ সালে) এ ধরনের শর্তপূরণ করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা সোয়া আট লাখের বেশি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী এক লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। আর জিপিএ-৫ এর নিচে কিন্তু ৩.৫ এর মধ্যে শিক্ষার্থী আছেন ছয় লাখ ৬০ হাজার ২১০ জন। উল্লিখিত ৯০ হাজার আসনের জন্য মূলত এসব শিক্ষার্থীর মধ্যেই লড়াইটা হবে। এর ফলে গড়ে প্রতি আসনের জন্য অন্তত ৯ জন ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারেন। সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানে কেবল জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীই চান্স পায় না। পরীক্ষা ভালো করে মধ্যম মানের বা জিপিএ ৩ দশমিক ৫ পর্যন্ত গ্রেডধারী শিক্ষার্থীদের অনেকে ভর্তি নিশ্চিত করে ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে এবারে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পাওয়া লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ভালোমানের বা পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। আর মধ্যম মানের শিক্ষার্থীরা এ ক্ষেত্রে যত ভালো করবে, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের বাদ পড়ার সংখ্যা ততই বাড়বে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, কোনো দেশেই উচ্চশিক্ষায় ভর্তির আসন সীমাহীন হয় না। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষা সবার জন্য নয়। সমাজে সব ধরনের পেশার প্রয়োজন আছে। সেদিকটি মাথায় রেখে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, ভর্তির ক্ষেত্রে যে সংকটের কথা বলা হচ্ছে, সেটি তৈরি হয়েছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে পার্থক্যের কারণে। মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের খুবই সংকট আছে। এমনকি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও একই মান নিশ্চিত করতে পারে না। যদি বাধ্যতামূলকভাবে বিভিন্ন প্রোগ্রামের স্বীকৃতির (অ্যাক্রেডিটেশন) ব্যবস্থা করা হয় তবে মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, সাধারণত প্রতিবছর আগের বছর এবং নতুন পাশ মিলিয়ে মোট আসনের ৮৩ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এদের মধ্যে দ্বিতীয়বার বা আগের পাশ করা শিক্ষার্থী ৪ শতাংশের কম হবে না। বাকিরা কর্মজীবনে প্রবেশ করে। খুব ক্ষুদ্র একটা অংশ লেখাপড়া করতে বিদেশে চলে যায়। সুতরাং, নিয়মিতদের মধ্যে ঝরে যাওয়ার পর যেসব শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ চাইবে, তাদের প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত প্রতিযোগিতা করে হলেও ভর্তি হতে চায় সেগুলো ভালোমানের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা মাদ্রাসা হিসেবে চিহ্নিত। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই সরকারি ও বিদেশি সংস্থা পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত রাজধানীর ৭ কলেজ এবং হাতেগোনা বড় ও পুরোনো আলিয়া মাদ্রাসা। এ ছাড়া নার্সিংসহ কিছু প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানে আসন আছে সাড়ে ১৪ লাখের মতো। অন্যদিকে ২০২১ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উল্লিখিত বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে সর্বসাকুল্যে ৯ লাখ। এটা পাশ করা শিক্ষার্থীর হিসাবে প্রায় ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে এইচএসসি পাশের পর অন্তত ৩০ শতাংশ কর্মজীবনে ভিড়ে যায় বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে। তাই যদি ভর্তির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে তাহলে অন্তত সাড়ে ৭ লাখ আসন এবারও খালি থাকবে। ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, ২০২০ সালে শতভাগ শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করেছিল। ২০২১ সালে পাশ করেছিল ১৩ লাখের বেশি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সবাই ভর্তি না হওয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার আসন খালি আছে। তারা বলছেন, বিগত বছরগুলোর ভর্তির প্রবণতা অনুযায়ী যদি ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীও ভর্তি হয় তাহলে এবার সাত লাখের মতো আসন লাগবে। এই হিসাবে অন্তত সাড়ে সাত লাখ আসন শূন্যই থাকবে। ইউজিসি তথ্য অনুসারে, উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৭ হাজার ৯৯টি আসন আছে। এছাড়া ৯৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সোয়া দুই লাখ আসন আছে। তবে এগুলোর মধ্যে ১০-১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে ডিগ্রি পাশ ও স্নাতকে ১২ লাখ ৬৯ লাখ ৯৪৮ আসন আছে প্রথমবর্ষে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা নির্ধারিত নেই। তবে সর্বশেষ এক লাখ ৩১ হাজার ৬১০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় ২০২১ সালে। এ ছাড়া মেডিকেল ও ডেন্টালে আসন আছে ১২ হাজার ও দুটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাজীপুরের আইআইইউটি ও চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন) আছে ৪৪০টি আসন। শিক্ষার্থীদের অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বিশেষায়িত কারিগরি শিক্ষায় ভিড়ে যায়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৭২০, ছয়টি টেক্সটাইল কলেজে ৭২০, সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠান আছে। যেগুলোতে আসন আছে পাঁচ হাজার ৬০০। ১৪টি মেরিন অ্যান্ড অ্যারোনটিকাল কলেজে ৬৫৪টি আসন আছে। যারা ইসলামী বিশেষজ্ঞ হতে চান তাদের জন্য ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল (ডিগ্রি) ও অনার্সে ভর্তির জন্য ৬৪ হাজার ৭৪৮ আসন আছে। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাড়ে তিন হাজার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২৯০টি আসন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সাতটি সরকারি কলেজে প্রায় ২৪ হাজার আসন আছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন যতই থাকুক না কেন শেষপর্যন্ত ৪৩ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ১০-১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ, নাম করা বড় মাদ্রাসা আর কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেই মূলত শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য ভিড় করবে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে আসন আছে প্রায় ৯০ হাজার। বিপরীত দিকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে পৌনে দুই লাখ। কেবল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে ভর্তি হতে পরীক্ষা লাগে না। কিন্তু যেহেতু উল্লিখিত ৯০ হাজার আসনে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হতে হবে, তাই শেষ পর্যন্ত অন্তত এক লাখ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও ভর্তিবঞ্চিত হতে পারে। কেননা, এইচএসসি পাশের পর মধ্যম সারির অনেকেই পরীক্ষার জন্য বেশ লেখাপড়া করে থাকে। ফলে পরীক্ষায় ভালো করে তারা জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের তুলনায় এগিয়ে যায়। তাই সবমিলে ভর্তির ক্ষেত্রে কঠিন যুদ্ধ অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এবার জিপিএ-৫ পেয়ে রাজধানীর নটর ডেম কলেজ থেকে পাশ করেছে আগারগাঁও তালতলার মিনহাজুর রহমান। তিনি যুগান্তরকে জানান, ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরাও ভর্তি পরীক্ষায় ছিটকে পড়ে। এমন দৃষ্টান্ত সামনে রেখে তিনি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকেই লেখাপড়া করছেন। তিনি জানান, তার পরিবারের কোনো ধরনের কোচিং করানোর সামর্থ্য নেই। তাই নিজেই পড়ছেন। তিনি বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির লক্ষ্য সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।Slider
বিশ্ব
জাতীয়
রাজনীতি
খেলাধুলা
বিনোদন
ফিচার
যাবতীয় খবর
জিওগ্রাফিক্যাল
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
English News
»
lid news
»
national
» জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তিবঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা ৯০ হাজার আসনে হবে মূল লড়াই
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: