Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প কত বড় ও কতটা শক্তিশালী




৭.৮ ও ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পকে রিখটার স্কেলে ‘বড়’ বলে ধরা হয়। যেটা ঘটেছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। ‘বড়’ ভূমিকম্প বলতে আসলে কী বোঝায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর আলোকে এখানে ব্যাখ্যা করা হলো। গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলের নিকটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পরপর দুটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ওই অঞ্চলে কয়েক হাজার উচু ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। যার ফলে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে প্রথম ভূমিকম্পটি। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৮। এর কেন্দ্র ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়। এরপর ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে একই অঞ্চলে আঘাত হানে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি। এটার মাত্রা ৭.৬। সাধারণত ৭ মাত্রার ভূমিকম্পকে ‘বড়’ ধরা হয়। সেখানে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা প্রথম দুই ভূমিকম্পের মাত্রা আরও বেশি। এ ধরনের ভূমিকম্পে কম্পন ব্যাপকভাবে ও কেন্দ্র থেকে বহু দূরেও অনুভূত হয়। আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহত ১১ হাজার ছাড়াল তুরস্ক ও সিরিয়ার ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে। অন্তত এক হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এর কম্পন অনুভূত হয়েছে। যা প্রত্যক্ষ করেছে ওই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে পরপর আরও বেশ কিছু কম্পন ঘটে যাকে আফটারশক বা পরাঘাত বলা হয়। তুরস্ক ও সিরিয়াতেও প্রথম দুটি ভূমিকম্পের পর আরও শতাধিক আফটারশক বা পরাঘাত ঘটেছে। রিখটার স্কেলে যেগুলোর মাত্রা ৪ বা তার কিছু বেশি। তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্প কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ জানুকা আত্তানায়ার মতে, এই ভূমিকম্প থেকে যে পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়েছে, তা প্রায় ৩২ পেটাজুলসের সমান। এই পরিমাণ শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরকে চার দিনের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারবে। আরও পড়ুন: ভূমিকম্পের ৫২ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরেক শিশু উদ্ধার ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে আঘাত হানা ৫.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের দিকে ইঙ্গিত করে এ বিশেষজঞ বলেন, ‘শক্তি উৎপন্ন হওয়ার দিক দিয়ে দেখলে ৫.৯ মাত্রার চেয়ে ৭.৮ মাত্রার কম্পন ৭০৮ গুণ বেশি শক্তিশালী।’ এ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার কোন কোন এলাকা আক্রান্ত হয়েছে? ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫৬২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের তুরস্কে মোট প্রদেশ ৮১টি। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্বের ১০টি প্রদেশ ভূমিকম্পে আক্রান্ত হয়েছে। প্রদেশগুলো যথাক্রমে কাহরামানমারাস, আদিয়ামান, ওসমানিয়ে, আদানা, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, কিলিস, হাতায় ও দিয়ারবাকির। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় এই ১০টি প্রদেশে আগামী তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এলাকাগুলো পরিদর্শনে গেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তুরস্কের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ডিজাস্টার অ্যান্ড ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএফএডি) বলছে, ভূমিকম্পে ওই অঞ্চলগুলোর ৫ হাজার ৭৭৫টি উচু ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়াও কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র এঁকে তোপের মুখে শার্লি এবদো মূলত উচু ভবন ধসে পড়ায় প্রাণহানি বেশি হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি) মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২০ হাজার ৪২৬ জন। তুরস্ক সরকারের তথ্য মতে, এ ভূমিকম্পে দেড় কোটি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্কের মোট জনসংখ্যা ৮ কোটি ৪৮ লাখের মতো। তুরস্কে এই ভূমিকম্পকে ১৯৯৯ সালের পর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প বলে মনে করা হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে আঘাত হানা ৭.৪ মাত্রার এক ভূমিকম্পে তুরস্কে ১৭ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। আর আহত হন ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ। এ ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সরকার। প্রায় ১২ হাজার উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯ হাজারই সেনাবাহিনীর সদস্য। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাজার হাজার কর্মী। আরও পড়ুন: ভবন ধসে আটকে পড়া সেই দুই শিশুকে ৩৬ ঘণ্টা পর ‍উদ্ধার সিরিয়ার অংশে দেশটির উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ অঞ্চল ভূমিকম্পে আক্রান্ত হয়েছে। এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে আলেপ্পো, লাতাকিয়া, তুরতুস, হামা ও ইদলিব। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলেপ্পো। তবে তুরস্কের তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম। কয়েক হাজার উচু ভবন ভেঙে পড়েছে। এছাড়া প্রায় ২৫০টি স্কুল বিধ্বস্ত হয়েছে। ভূমিকম্প কিভাবে ঘটে ভূমিকম্প হচ্ছে ভূমির কম্পন। ভূ-অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে তখন ভূমি কম্পন হয়। পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশবিশেষের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন বা আন্দোলনই ভূমিকম্পন। সহজ কথায় পৃথিবীর কেঁপে ওঠাই ভূমিকম্প। হঠাৎ যদি ঘরের কোনো জিনিস দুলতে শুরু করে যেমন- দেয়ালঘড়ি, টাঙানো ছবি বা খাটসহ অন্য যেকোন আসবাব- বুঝতে হবে ভূমিকম্প হচ্ছে। পৃথিবীতে বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। এগুলোর বেশিরভাগই মৃদু, যেগুলো আমরা টের পাই না। সাধারণত তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে- প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু। আবার উৎসের গভীরতা অনুসারে ভূমিকম্পকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- অগভীর, মধ্যবর্তী ও গভীর ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূ-পৃষ্ঠের ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে অগভীর, ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে মধ্যবর্তী ও ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হলে তাকে গভীর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভূমিকম্প যেভাবে মাপা হয় ভূমিকম্প হলে আমরা শুনি যে ৭, ৮ বা ৯ ইত্যাদি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এই মাত্রাকে রিখটার স্কেলের মাত্রা বলা হয়। আসলে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ছোট ও স্বল্প বিস্তৃতির ভূমিকম্প ছাড়া রিখটার স্কেল এখন আর তেমন ব্যাবহার হয় না। এখন ব্যবহার করা হয় ‘মোমেন্ট মাত্রা’ স্কেল। এই স্কেলের ভিত্তি হলো ভূমিকম্পের কিছু ভৌত বৈশিষ্ট, যা সম্মিলিতভাবে নির্ণয় করে মুক্তিপ্রাপ্ত শক্তির পরিমাণ। আর এই ভৌত বৈশিষ্টগুলো হল- যে শিলাপৃষ্ঠ জুড়ে শিলার স্থানচ্যুতি ঘটল তার আয়তন; স্থানচ্যুতির পরিমাণ; এবং শিলাখন্ডের ভাঙ্গন প্রতিরোধ ক্ষমতা। যত বড় হয় প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট, ততই বেশী হয় মুক্তি পাওয়া শক্তি। কিন্তু এই বৈশিষ্টগুলো মেপে ভূমিকম্পের মাত্রা বের করা তো অবাস্তব! তবে এজন্য অপেক্ষাকৃত সহজ উপায় আছে। ভূকম্পমিটার বা সিসমোমিটার নামক যন্ত্র ভূমিকম্পের ঢেউয়ের ব্যাপ্তিকে রেকর্ড করতে পারে। আর এই রেকর্ড করা ঢেউয়ের ব্যাপ্তি থেকে ভূমিকম্পটির মাত্রা পরোক্ষভাবে হিসাব করে বের করা যায়। ঢেউয়ের ব্যাপ্তি যত বড়, ভূমিকম্পও তত বড়। তবে ব্যাপারটি অত সহজও নয়। রেকর্ড করা ব্যাপ্তির আকার নির্ভর করে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভূকম্পমিটারটি থেকে কত দূরে ও মধ্যবর্তী শিলার ভৌতিক গঠন কি তার ওপর। দূরত্ব যত কম, এবং মধ্যবর্তী শিলা যত কঠিন ও ভূপৃষ্ঠ থেকে যত গভীরে, মোটামুটি তত বড় ব্যাপ্তি। আরও পড়ুন: সিরিয়ার জন্য ৪৪ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তার ঘোষণা চীনের এছাড়া একটু আগে আলোচিত চার রকমের ঢেউ চার গতিতে ছড়ায় বলে রেকর্ড করা ব্যাপ্তি আরও জটিল হয়ে যায়। কিন্তু গত এক’শ বছরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত ভূকম্পমিটারগুলোতে ধরা ঢেউগুলোর আকার এবং পৌঁছানোর সময় বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা কোথায় ও কতটা গভীরে একটি ভূমিকম্প হয়েছে আর কি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, তা অনেকটা নির্ভূলভাবেই বলে দিতে পারেন। একটি ভূ-কম্পমিটারে রেকর্ড করা ‘এস-ওয়েভ’-এর ব্যাপ্তি থেকে ভূমিকম্পটি কত বড় তা বের করা যায়। আর ‘পি-ওয়েভ’ ও ‘এস-ওয়েভ’ গুলোর পৌঁছানোর সময়ের ব্যবধান থেকে বের করা যায় ভূমিকম্পটি ওই মিটার থেকে কত দূরে হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বসানো তিনটি বা তার বেশী ভূকম্পমিটারে হিসাব করা দূরত্ব থেকেই বেরিয়ে আসে ঠিক কোথায় ভূমিকম্পটি ঘটল। পৃথিবী জুড়ে অনেক ভূকম্পমিটার আছে যারা কোথাও একটা ভূমিকম্প ঘটলেই কমবেশী কাঁপন রেকর্ড করে। মিটারগুলো স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় ও নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রাথমিক বিশ্লেষন রিপোর্ট কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে আসে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply