Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » উল্টো ঘুরছে অর্থনীতির চাকা, হঠাৎ কী হলো জাপানের




জাপানের অর্থনৈতিক শক্তিকে ইউরোপ-আমেরিকা একসময় যেভাবে ভয় করত, ঠিক সেভাবে তাদের ভয় এখন চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি নিয়ে। কিন্তু বিশ্ব যে জাপান আশা করেছিল, তা আর হয়নি। আশির দশকের শেষের দিকে জাপানিরা আমেরিকানদের চেয়েও ধনী ছিল। কিন্তু এখন তাদের আয় ব্রিটিশদের থেকেও কম। কিন্তু কীভাবে এমন পরিস্থিতির মধ্যে এসে পড়ল জাপান? জাপানের একটি কৃষি খামারে কাজ করছেন এক কৃষক। ছবি: বিবিসি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, দীর্ঘতম গড় আয়ু, সর্বনিম্ন হত্যার হার, সীমিত রাজনৈতিক কলহ, শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় শীর্ষস্থান এবং উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্কসহ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ জাপান। তবে সম্প্রতি অর্থনীতিসহ নানা সংকটে জর্জরিত দেশটি। অর্থনীতি করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দাম ওঠানামা। এমনিতেই দেশটির জীবনযাত্রা অনেক ব্যয়বহুল। তবে অন্যান্য অনেক দেশের সঙ্গে পার্থক্য হলো, দেশটিতে শ্রমের মজুরি নির্ধারণ করা হয় জীবনযাত্রার মান ও ব্যয়ের ওপর নির্ভর করে। এছাড়া দেশটির পণ্যমূল্য বাড়ানো হয় পূর্বঘোষণা দিয়ে। এসবের পরও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির অর্থনীতিতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। মজুরি ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় জাপানি পণ্যের দাম অনেক বেশি। যে কারণে অনেকে বিদেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করছেন। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে দেশটির অর্থনীতিতে। অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জাপানে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে মোট ১২ হাজার ৫৪টি পণ্য। গড়ে এসব পণ্যের দাম বর্তমানের চেয়ে আরও ১৬ শতাংশ বাড়তে পারে। আরও পড়ুন: নতুন ৭ হাজার দ্বীপ খুঁজে পেল জাপান গত জানুয়ারিতে জাপানে হিমায়িত ও সামুদ্রিক মোট ৫ হাজার ৪৬৩ পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত অক্টোবরে ৭ হাজার ৮০০টি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছিল। চলতি মার্চে ২ হাজার ৭১৬টি খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর কথা। এপ্রিলে বাড়বে ৩ হাজার ১৯২টি পণ্যের দাম। দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হওয়া প্রসঙ্গে ইতোচু ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ আতসুশি তাকেদা জানান, অর্থনীতির এ সংকোচন অপ্রত্যাশিত। এ পরিস্থিতির জন্য প্রত্যাশার অতিরিক্ত পণ্য আমদানিকে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় বলে মনে করেন তিনি। এদিকে চলতি বছর জাপানের জন্য কঠিন হবে বলে আশঙ্কা করছেন ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ ড্যারেন তায়ে। তার মতে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্থর গতি জাপানকে টেনে নেবে ‘মৃদু মন্দা’র দিকে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশটির রফতানি ও বিনিয়োগের ওপর। মূল্যস্ফীতি জাপানে নিত্যপণ্য কিনতে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। গত জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। জাপান সরকারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, জ্বালানির দাম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় বেশ চাপে রয়েছেন দেশটি বেশির ভাগ নাগরিক। কারণ, খরচ বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়ছে না। জানুয়ারিতে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.২ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছর একই সময় মূল্যস্ফীতি ছিল ০.৪ শতাংশ; আর গত ডিসেম্বরে ছিল ০.৩ শতাংশ। ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বরের পর এ প্রথম এমন মূল্যস্ফীতি দেখছে জাপানিরা। ওই সময় মধ্যপ্রাচ্যে তেল সংকটের জন্য বিপাকে পড়ে জাপান। হুড়মুড়িয়ে বাড়ে জ্বালানির দাম। মূলত জ্বালানির দিক থেকে পুরোপুরি আমদানিনির্ভর সূর্যোদয়ের দেশটি। কম জন্মহার অর্থনৈতিক সংকট জাপানের ডেমোগ্রাফি বা জনসংখ্যাতত্ত্বেও প্রভাব ফেলবে। এর দীর্ঘমেয়াদি বিপরীত প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। জাপানে আশঙ্কাজনকভাবে জন্মহার কমছে। বিষয়টি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে দেশটির সরকারকে। কয়েক বছর ধরেই জন্মহার বাড়াতে জনগণকে নানা উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে জাপান সরকার। জাপানের ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ অনুসারে, শিশু লালনপালনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের তৃতীয় ব্যয়বহুল দেশ। এ কারণে অনেকেই সন্তান নিতে চান না। আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজাচ্ছে জাপান, কিনছে ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার নতুন রেকর্ড হয়েছে। গত বছর সরকারের প্রত্যাশার চেয়েও আট লাখ কম শিশুর জন্ম হয়েছে দেশটিতে। এর আগে ২০১৫ সালে দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার রেকর্ড হয়েছিল। দেশটিতে ভবিষ্যতে আরও জন্মহার কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ক্রমহ্রাসমান জন্মহার মোকাবিলায় বিভিন্ন জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আগামী এপ্রিলে সমস্যাটি মোকাবিলায় নতুন একটি সরকারি সংস্থা স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে জুনের মধ্যে শিশু সম্পর্কিত বাজেট দ্বিগুণ করার পরিকল্পনাও জমা দেবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা হয় এখনই, নয়তো কখনোই নয়’ নীতির ভিত্তিতে জন্মহার এবং শিশুর লালনপালন সংক্রান্ত বিষয়টি মোকাবিলা করতে চাই।’ নিম্নমুখী উৎপাদন করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হতে শুরু করেছে। ফ্যাক্টরির কাঁচামাল, তেল, গ্যাস থেকে শুরু করে বেড়েছে শ্রমিকের পারিশ্রমিকও। আর এসবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে উৎপাদন। তবে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে জাপানে। ফেব্রুয়ারিতে জাপানের ফ্যাক্টরিগুলোর উৎপাদন দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস অনুসারে, জানুয়ারিতে জাপানের পিএমআই মান ছিল ৪৮.৯, ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৪৭.৭। ২০২০-এর পর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ পতন ঘটেছে দেশটির বাণিজ্যে। আরও পড়ুন: জাপানের সামরিকায়নের অভিলাষ, কেমন হবে এশিয়া-প্যাসিফিকের ভূরাজনীতি পিএমআই হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি সূচক, যার মাধ্যমে কোনো দেশের বর্তমান এবং অদূর ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক আয়ের অবস্থা বোঝায়। এর মান থাকে শূন্য থেকে একশ পর্যন্ত। যখনই পিএমআইর মান ৫০-এর বেশি হবে, তখন বুঝে নিতে হবে দেশটির ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। আর কম হলে বুঝে নিতে হবে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে উল্টো দিকে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply