বন্ধু যখন বাজপাখি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জেলের

বন্ধু যখন বাজপাখি মানুষের শখের কোনো শেষ নেই। শখ থেকে বিদেশে অনেক মানুষই সিংহ, বাঘ ও সাপের মতো প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জেলে কালাম পাহলান নিজের বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছেন একটি বাজপাখি। আদর করে তিনি পাখিটির নাম দিয়েছেন ‘ডায়মন’। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জেলে কালামের হাতে তার বন্ধু বাজপাখ

ি ‘ডায়মন’। ছবি: সময় সংবাদ জেলে কালাম পাহলান কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রখর দৃষ্টিসম্পন্ন শিকারি প্রাণী হিসেবে বাজপাখির পরিচিতি রয়েছে সর্বত্র। আর এই পাখির সঙ্গেই আত্মার বন্ধন গড়ে উঠেছে কামালের। জেলে কালাম পাহলান জানান, প্রায় দুই বছর আগে বিপিনপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী একটি খালে মাছ শিকারে যান তিনি। এ সময় একটি বাজপাখি অসুস্থ অবস্থায় খালপাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পাখিটির কাছে যাওয়ার সময় তিনি দেখতে পান অপর একটি বাজপাখি গাছের ডালে ডাকছে। পরে তিনি খুব সাবধানতার সঙ্গে অসুস্থ বাজপাখিটি উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাজপাখিটির শরীরে তখন অনেক জ্বর ছিল। এ ছাড়াও সেটির পাখায় আঘাতের চিহ্নও ছিল। অসুস্থ পাখিটিকে নিজের সঙ্গে বাড়িতে আনলেও কামালের পেছন পেছন তার বাড়িতে চলে আসে গাছে বসে থাকা সুস্থ বাজপাখিটিও। পরে তিনি দুটি পাখিকে খাঁচায় বন্দি করে প্রায় ১৫ দিন চিকিৎসা দেন; একই সঙ্গে তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেন। একপর্যায়ে সুস্থ হয়ে উঠলে পাখি দুটিকে ছেড়ে দেন তিনি। এ সময় একটি পাখি উড়ে গেলেও অন্য পাখিটি বাড়ির পাশের খালপাড়ের একটি রেন্ট্রি গাছে থাকতে শুরু করে। দীর্ঘদিন পাখিটি সঙ্গে থাকায় কামাল তার নাম দেন ‘ডায়মন’। বর্তমানে ‘ডায়মন’ বলে ডাকলেই বাজপাখিটি বাড়ির আশপাশে যেখানেই থাকুক না কেন ছুটে চলে আসে কামালের কাছে। কামালের হাত এবং শরীরের ওপর বসেই খুনসুটি করতে শুরু করে সে। পরে খাবার খেয়ে ফের চলে যায় গাছের মগডালে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বাজপাখি এবং কালামের বন্ধুত্ব এক বিরল দৃষ্টান্ত বলে দাবি এলাকাবাসীর। শুধু বাজপাখিই নয়, ভালোবাসা দিয়ে জয় করা যায় আরও বড় হিংস্র প্রাণীর মন। তবে যেকোনো প্রাণী জোর করে পোষ না মানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।