চীন ও রাশিয়ার মধ্যে এক ডজনের বেশি চুক্তি স্বাক্ষর
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে এক ডজনের বেশি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চলতি সপ্তাহে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরকালে বাণিজ্য, শিল্প-বিজ্ঞান ও সামরিক খাতে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বন্ধুপ্রতীম দেশ দুইটির মধ্যকার বাণিজ্য ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: আরটি
গত সোমবার (২০ মার্চ) ঐতিহাসিক মস্কো সফর শুরু করেন চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং। দুইদিনের এই সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন তিনি। এর মধ্যে মঙ্গলবারের (২১ মার্চ) বৈঠকটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন মতে, এদিন ক্রেমলিনে কয়েক ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠকে অংশ নেন দুই নেতা। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও শান্তির সম্ভাবনার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। এর মধ্যেই বাণিজ্য সম্পর্কিত চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করেন পুতিন ও জিনপিং।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যকে কঠিন হুঁশিয়ারি পুতিনের
বৈঠকের পর এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেন বিশ্বের দুই প্রভাবশালী দেশের দুই নেতা। নৈশভোজে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করে তিন বলেন, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য বিশ্ব শক্তিগুলোকে বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এভাবেই একসঙ্গে কাজ কাজ করতে হবে। এটা তাদের বিশেষ দায়িত্ব।’
এ সময় রুশ নেতা ‘আই চিং’ নামে একটি বই (ইংরেজিতে বইটির নাম দ্য বুক অব চেঞ্জেস) থেকে একটি উদ্ধৃতি দেন। বলেন,রাশিয়া ও চীনের মানুষের দেশ আলাদা হলেও তাদের আত্মা অভিন্ন। তারা তাদের তাদের যৌথ শক্তি ও সামর্থ দিয়ে যেকোনো বাধা মোকাবিলা করতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নাকচ যুক্তরাষ্ট্রের
এরপর ক্রেমলিনে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক এই মুহূর্তে ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাই এখন উভয় সরকারের অগ্রাধিকার।
সাম্প্রতিক বছরগুলো চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্য অনেকটাই বেড়েছে। আরটির প্রতিবেদন মতে, গত বছর (২০২২) দুই দেশের বাণিজ্যে রেকর্ড হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের শাস্তি হিসেবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর বাণিজ্য বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
চলতি বছর সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। বছর শেষে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০০ বিলিয়ন ডলার তথা ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাণিজ্যে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলার বাদ দিয়ে রাশিয়া ও চীন এখন নিজেদের মুদ্রা ইউয়ান ও রুবল ব্যবহার করছে।
No comments: