রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: পিছু হটছে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে সরবরাহ করা কোনো মার্কিন অস্ত্র সরাসরি রাশিয়ার ভূখণ্ডে ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন নিয়ে বেলারুশের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে রাশিয়া। এরইমধ্যে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট। খবর আল জাজিরার বামে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ডানে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ছবি: সংগৃহীত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য এবং নানাবিধ সমর্থন। এসবের ফলেই অপেক্ষাকৃত বিশাল সামরিক ক্ষমতাশালী রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে ইউক্রেন। নিজ দেশের অর্থনীতির ওপর ক্রমাগত চাপ এবং রাশিয়া-চীনের বাড়ন্ত প্রভাব বলয়ের কারণে এবার ইউক্রেনের প্রতি ভোল পাল্টাতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, শুরু থেকে ইউক্রেনকে যে নিরঙ্কুশ সমর্থন এবং সহযোগিতা দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার সে অবস্থান থেকে কৌশলে পিছু হটছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন মার্কিন ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন এবং সশস্ত্রবাহিনীর জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জেনারেল মার্ক মিলি । এসময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে সরবরাহ করা কোনো মার্কিন অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহার করা যাবেনা বলে জানান তারা। এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই সরাসরি যুক্ত নয়, শুধুমাত্র ইউক্রেনকে সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দিয়ে আসছে বলেও দাবি করে পেন্টাগন। এছাড়া, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক এফ-সিক্সটিন যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করলেই তা যুদ্ধে কোনো চমক নিয়ে আসবেনা বলেও মন্তব্য করা হয়। আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ এক দশক স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা এবার মস্কোর রাশিয়াকে রুখতে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ, ঋণ সংকটসহ অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। এ অবস্থায়, সামরিক ব্যায় এবং বিভিন্ন দেশকে করা সামরিক সহায়তা কমানোর আভাস দিয়েছেন দুই শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা। এদিকে, একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পরও খর্ব করা যায়নি মস্কোর শক্তি। উল্টো চীন ও ইরানের মত মার্কিন বিরোধী শক্তিদের নিয়ে গড়ে তুলেছে জোট। সঙ্গে গাটছাড়া বাধছে সৌদি আরব, তুরস্কসহ পশ্চিমা মিত্র হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকটি দেশ। এসব কারণেই এবার ইউক্রেনের প্রতি কৌশলে অবস্থান পাল্টাতে শুরু করেছে ওয়াশিংটন বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। আরও পড়ুন: রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের এরমধ্যেই, বৃহস্পতিবার বেলারুশের সঙ্গে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনে চুক্তি সই করেছে রাশিয়া। এরইমধ্যে, রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন শুরু হয়েছে বলেও আভাস দিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। তবে, এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন পাল্টা কোনো পরমাণু পদক্ষেপ নিচ্ছেনা বলেও জানানো হয়। এসবের পরও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে জিততে পারবেনা বলে জানিয়েছেন মার্কিন সেনাপ্রধান । অন্য, পুতিনের ঘনিষ্ঠ সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেব জানিয়েছেন এ যুদ্ধ চলতে পারে কয়েক দশক ধরে। তবে পশ্চিমাদের পাঠানো বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেনের সক্ষমতাকে আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।