অট্টালিকার ভারে দেবে যাচ্ছে নিউইয়র্ক
বহুতল ভবনসহ গড়ে উঠা লাখ লাখ অট্টালিকার ভারে ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, বৈশ্বিক হারের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুত নিউইয়র্কের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। খবর সিএনএনের।
নিউইয়র্ক সিটিজুড়ে অট্টালিকা আর অট্টালিকা। ছবি: সংগৃহীত
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কজুড়ে যে কয়েক লাখ ইমারত গড়ে ওঠেছে, সেগুলোর ওজনে দেবে যাচ্ছে শহরটির উপরিতল। এ প্রক্রিয়া ৮৪ লাখ মানুষের শহর নিউইয়র্ককে ফেলে দিচ্ছে ঝুঁকির মুখে। কারণ, শহরের চারপাশ ঘিরে বৈশ্বিক হারের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।
সম্প্রতি আর্থস ফিউচার জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। উপকূল, নদী বা খালের তীরবর্তী স্থানে উঁচু ভবন নির্মাণের কারণে কীভাবে সেসব স্থানে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে, সেটি বোঝাতেই ওই গবেষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: পেন্টাগনে বিস্ফোরণের ভুয়া ছবি ভাইরাল
১৯৫০ সাল থেকে নিউইয়র্ক সিটির আশপাশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৯ ইঞ্চি বা ২২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এটি ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়তে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় এখনকার চেয়ে এ শতাব্দীর শেষদিকে বড় ধরনের বন্যার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।
গবেষকরা হিসাব করে দেখেছেন, নিউইয়র্কের পাঁচটি বিভাগে সব মিলিয়ে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৪টি ভবন রয়েছে। এ ভবনগুলোর ওজন ১.৬৮ ট্রিলিয়ন বা ৭৬২ বিলিয়ন কেজি, যা মালভর্তি ১৯ লাখ বিমানের ওজনের সমান।
গবেষকদলটি সিমুলেটর পরীক্ষার তথ্য ও স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত ভূপৃষ্ঠের তথ্য তুলনা করেছে। তাদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিউইয়র্ক প্রতিবছর ১ থেকে ২ মিলিমিটার পর্যন্ত দেবে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছু এলাকায় বছরে প্রায় সাড়ে ৪ মিলিমিটার পর্যন্ত দেবেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র দেউলিয়া হলে কী প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে
অবশ্য শুধু যে ভবনের কারণে শহরটি দেবে যাচ্ছে, বিষয়টি এমনও নয়। এর জন্য আরও কিছু কারণকে দায়ী করা হয়েছে গবেষণায়।
২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ৪৮টি উপকূলীয় এলাকার মধ্যে ৪৪টিই দেবে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোর তালিকায় নিউইয়র্ককে তৃতীয় স্থানে রাখা হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, নিউইয়র্ক হলো সারা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান উপকূলীয় শহরগুলোর প্রতীক। এখানে ক্রমবর্ধমান জলাবদ্ধতা হ্রাস করা একটি যৌথ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের ভূপদার্থবিদ টম পারসনস বলেন, ‘এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই; তবে এটি চলমান প্রক্রিয়া, যা বন্যা থেকে জলমগ্ন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।’
Tag: English News lid news others world
No comments: