হুন্ডিতে টাকা পাঠালে নিজেরও কিছু থাকে না, দেশেরও না: প্রধানমন্ত্রী
প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের হুন্ডিতে টাকা না পাঠিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এতে দেশেরও লাভ, যারা টাকা পাঠাবে তাদেরও লাভ। কেননা, কিছু টাকা নিজের জন্য থাকবে।
জেনেভায় হোটেল হিল্টনের হলরুমে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সময় সংবাদ
জেনেভায় হোটেল হিল্টনের হলরুমে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সময় সংবাদ
দেবাশীষ রায়
৩ মিনিটে পড়ুন
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) জেনেভায় হোটেল হিল্টনের হলরুমে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
হুন্ডিতে টাকা পাঠনোর অপকারিতা তুলে ধরে প্রবাসীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হুন্ডিতে টাকা হাতে-হাতে দিলেন, হাতে-হাতেই খরচ। যাকে দিলেন টাকা সে হয়তো পায়; কিন্তু খরচ করে ফেলে৷ পরে দেখা গেলো যে, নিজের জন্য কিছুই নাই৷ অনেকেই বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এমন বিপদে পড়েন৷’
তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা যেনো না ঘটে, সেজন্য সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে৷ এখন তো অনলাইনেই হয় সবকিছু৷ দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা আমরা এখন সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে দিয়েছি৷ কাজেই ব্যাংকিং চ্যানেলের এই সুযোগটা যাতে সবাই নেয়৷ এতে করে দেশেরও লাভ, যারা টাকা পাঠাবে তাদেরও লাভ৷ কেননা, কিছু টাকা তো তাহলে নিজের জন্য থাকবে!’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ - এ সময়ে বাংলাদেশের যে উন্নতিটা আমরা করতে পেরেছি; এটা শুধু স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ভোটের মাধ্যমে বার বার নির্বাচিত হয়ে আমরা সরকার গঠন করতে পেরেছি বলেই৷ আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে৷’
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সরঞ্জাম যেন মানবতাকে আঘাত না করে
যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের জন্য বাংলাদেশ যে কাজগুলো করে, সেগুলো জানাতেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার এ সম্মেলনে আমাদের অংশগ্রহণ৷ আইএলও'র ১০টির মধ্যে ৮টি প্রটোকলই অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, যারা (যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে) আমাদের শ্রমিকদের নিয়ে অনেক আলোচনা করে, আমাদের নানান ধরনের চাপ দেয়, তারাই (সমালোচক দেশগুলো) কিন্তু মাত্র ২টা প্রটোকলে সই করেছে; এছাড়া কিছুই করেনি।’
‘শ্রমিকদের জন্য কী করতে হবে, সেটি আওয়ামী লীগকে শিখিয়ে দিতে হয় না৷ কেননা, আমাদের রাজনীতিই মেহনতি মানুষের জন্য,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন জাতীয় সংবাদ নির্বাচন নিয়েও। বিএনপিকে ভোট চোরের দল অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হবে; জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে৷ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা আওয়ামী লীগের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল৷ এর জন্য তো আমার দলের অগণিত নেতা-কর্মীকে রক্ত দিতে হয়েছে৷ আসামি হলো একটা দলের নেতা৷ তারা কোন মুখ নিয়ে নির্বাচনে যাবে? সেই দুর্বলতা ঢাকার জন্য বিএনপি এখন নানা রকম অপপ্রচার আর চাতুর্য করে বেড়াচ্ছে৷ ওরা মূলত ভোট চোর তো বটেই; ভোট ডাকাতের দল৷ ভোট চুরি করা ছাড়া তো তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না৷ জনগণ আর তাদের চায় না বলেই, তারা ভোট পায় না৷ ভোট পাবে না জেনেই, বিএনপি নানা ভাবে পিছটান দেয়ার ছুঁতো খুঁজছে; সেই তালেই তারা আছে৷’
বিএনপি-জামায়াতকে আর দেশের ক্ষমতায় এনে সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে দেবেন না বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সময়মতই নির্বাচন হবে৷ জনগণ ভোটের মালিক৷ তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে৷ যে জনগণের ভোট পাবে, সে সরকার গঠন করবে৷ এটাই গণতান্ত্রিক ধারা, এটাই অব্যাহত থাকবে৷ কারণ গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই তো আজকে দেশটা পাল্টে গেছে৷ দেশের মর্যাদা আজ বহির্বিশ্বে উন্নত হয়েছে৷ ওই চোরাদের, স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় এনে, বাংলাদেশের মাথা আমরা অন্যের কাছে আর নত হতে দেবো না৷ এটাই আমাদের কথা৷
Tag: English News lid news national

No comments: