১৩ মিশনপ্রধানকে ডেকে অসন্তোষ জানাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আজ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ায় ১৩ বিদেশি মিশনের প্রধানকে ডেকে অসন্তোষ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হুট করে বিবৃতি প্রদানের মতো আচরণে বাংলাদেশ অসন্তুষ্ট বলে তাদের জানানো হয়।
আজ বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় হাজির হন ১২টি বিদেশি মিশন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হাইকমিশনার এবং উচ্চপদস্থ কূটনীতিকরা। হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দেওয়া পশ্চিমা মিশনের এসব কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পরে, এ বিষয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঢাকার যেসব দূতাবাস গণমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল তাদের দূতদের আমরা ডেকেছিলাম। তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণে আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। আমরা বলেছি, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা দিয়ে সারাদিনের শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, ওই নির্বাচনে সহিংসতা হয়নি। হিরো আলম সারাদিন সতীর্থদের সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্র অবাধে বিচরণ করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। ভোট শেষ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনিও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হননি বা কোনো অভিযোগ করেননি। অন্য প্রার্থীরাও কোনো ধরনের সহিংসতা বা অন্য কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেননি।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে গুটিকয়েক দূত যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা কখনোই সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করে না বলে আমরা তাদের জানিয়েছি। বলেছি, দ্রুত প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তারা তাদের মূল্যায়নের বস্তুনিষ্ঠতার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেননি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন এবং সরকার দ্রুত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে। ১৯ জুলাই দূতদের বিবৃতি দেওয়ার অনেক আগেই অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরও এই দূতরা আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন যা অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয়। যে দ্রুততা ও গুরুত্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ঘটনাটির সমালোচনা তারা করেছেন, সেই গুরুত্ব ও দ্রুততার সঙ্গে কিন্তু তারা সরকারের গৃহীত তাৎক্ষণিক এবং তড়িৎ আইনানুগ ব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করেননি। তাই যৌথ বিবৃতিটির বস্তুনিষ্ঠতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবনার অবকাশ থেকেই যায়।’
মিশনপ্রধানদের ভিয়েনা কনভেনশনের কথা স্মরণ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা তাদের কূটনৈতিক আচরণবিধি সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন স্মরণ করিয়ে দিয়ে গঠনমূলক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে। বলেছি, সরকারকে পাশ কাটিয়ে বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা বর্জিত আচরণ কেবল পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করবে।’
No comments: