টাইফুন খানুনের আঘাতে লন্ডভন্ড জাপানের ওকিনাওয়া, ২ লাখ পরিবার বিদ্যুৎহীন
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ওকিনাওয়া প্রিফেকচারে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টাইফুন ‘খানুন’। ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে রীতিমতো লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পুরো অঞ্চল। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। ওকিনাওয়ার ২ লাখের বেশি তথা এক তৃতীয়াংশ পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
টাইফুন খানুনের প্রভাবে জাপানের ওকিনাওয়া প্রিফেকচারের রাজধানী নাহায় প্রবল বৃষ্টিপাত
স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদন মতে, পূর্বাভাস অনুযায়ী বুধবার (২ আগস্ট) সকালে জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় দ্বীপ এলাকায় আঘাত হানে শক্তিশালী টাইফুন খানুন।
ঘূর্ণিঝড়টি এখন ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার গতিতে ওকিনাওয়া অঞ্চল অতিক্রম করছে। আটলান্টিক অঞ্চলের ক্যাটাগরি ৪ হারিকেনের সমান শক্তিশালী এই ঘূর্ণিজড়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে। ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতও হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর ওকিনাওয়ায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে। অগ্নি ও দুর্যোাগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানিয়েছে, ঝড়ের আঘাতে একটি গ্যারেজ ভেঙে পড়লে তার নিচে চাপা পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় বিপর্যস্ত বেইজিংয়ে বৃষ্টিপাতের ১৪০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ
জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে একটা জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ওকিনাওয়া। অঞ্চলটিতে প্রায় ৭ লাখ মানুষের বাস। ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার আগেই ওই অঞ্চলে বিমানের শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়। এছাড়া ওই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
টাইফুন ‘ডকসুরি’র প্রভাব শেষ হতে না হতেই চলতি সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় টাইফুন খানুন। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট তৃতীয় ঘূর্ণিঝড়টি এটি।
জাপানের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানায়, দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে মঙ্গলবার ও বুধবার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৯০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে আঞ্চলিক ফেরি ও বাস পরিষেবা। জাপান এয়ারলাইন্স ও অল নিপ্পন এয়াওয়েজ জানিয়েছে, ফ্লাইট বাতিলের কারণে ৭৪ হাজারেরও বেশি যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর আগে গত সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ডকসুরি’। এরপর এটা সুপার টাইফুনে রূপ নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে প্রথমে ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে ফুগা দ্বীপে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় ২০ জনের প্রাণহানি
এর প্রভাবে ফিলিপিন্সের বহু এলাকা প্লাবিত হয়। একইসঙ্গে দেখা দেয় ভূমিধস। অনেককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হলেও দেশটিতে টাইফুনের আঘাতে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়। ঘরছাড়া হয়ে পড়ে বহু মানুষ।
এরপর ডকসুরি কিছুটা দুর্বল হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সকালে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯১ কিলোমিটার গতিতে তাইওয়ানে আছড়ে পড়ে। পরদিন তথা শুক্রবার (২৮ জুলাই) এটি চীনের পূর্বাঞ্চলে পৌঁছায়।
ডকসুরির প্রভাবে চীনের রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটিতে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় খানুনের প্রভাবে চীনে বৃষ্টিপাতের মাত্রা আরও বেড়েছে।
Tag: English News Featured others world
No comments: