ফুকুশিমার মাছ খেয়ে কিশিদা বললেন ‘সেই স্বাদ
’
প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরোধিতার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) থেকে ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শোধন করা তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলা শুরু করে জাপান। এবার সেই ফুকুশিমা উপকূলের সুস্বাদু সাশিমি মাছ খেয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। খবর বিবিসির।
ফুকুশিমা উপকূলের মাছ খেলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ভিডিও থেকে
বুধবার (৩০ আগস্ট) ফুমিও কিশিদার কার্যালয় সাগরের মাছ খাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েছে। এতে দেখা যায়, কিশিদা জাপানের জনপ্রিয় খাবার সাশিমির টুকরা চিবোতে চিবোতে বলছেন, ‘এটি খুব সুস্বাদু’।
দূষিত ওই পানি সাগরে ফেলার পরও তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং মাছ খাওয়া নিরাপদ এমনটিই সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ের আরও তিনজন কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদেরকেও মাছ খেতে দেখা যায়।
গত ২৪ আগস্ট তেজস্ক্রিয় পানি ছাড়ার কারণে চীন প্রতিবেশী দেশ জাপান থেকে সব ধরনের সামুদ্রিক খাবার আমদানি বন্ধ করে দেয়। টোকিও ও জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি কর্তৃপক্ষ বলে আসছে, শোধন করে সাগরে ছাড়া এ পানি থেকে বিপদের ভয় নেই। এতে যে তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে তা সহনীয় মাত্রার মধ্যে।
আরও পড়ুন: পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ উপেক্ষা করেই ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলল জাপানৎ
প্রায় এক যুগ আগে ২০১১ সালে জাপানের পূর্ব উপকূলে শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। যাতে তছনছ হয়ে যায় ফুকুশিমার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ৯ মাত্রার ওই ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে সুনামি প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়। তাতে কার্যত ভেসে যায় হংসু দ্বীপ। মারা যায় প্রায় আঠার হাজার মানুষ।
বড় ধরণের ঢেউ আঘাত হানে ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে এবং এর পারমানবিক চুল্লি প্লাবিত হয়। যা বড় ধরণের বিপর্যয়ের সূত্রপাত ঘটায়। কর্তৃপক্ষ একটি এক্সক্লুসিভ জোন তৈরি করে যা দিন দিন বড় হতে থাকে। কারণ ওই কেন্দ্রটি থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হচ্ছিল।
বিকিরণ বন্ধ করতে কেন্দ্রে সিল করা যে ধাতব টিউবে জ্বালানি ইউরেনিয়াম থাকে, সেই টিউব বা রডগুলোকে ঠান্ডা করার জন্য ব্যবহার করা হয় পানি। যার পরিমাণ প্রায় ৫০০টি অলিম্পিক সাঁতার পুলের পানির সমান।
আরও পড়ুন: ফুকুশিমা পারমাণবিক চুল্লির পানি সাগরে ছাড়ার অনুমতি দিল আইএইএ
পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের কারণে এই পানিও তেজস্ক্রিয় হয়ে যায়। পরিবেশের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সেই পানি প্রায় ১ হাজারটি বিশেষ ধাতব কন্টেইনারে ধরে রাখা হয়।
সেই পানিই পরে সাগরে ফেলার পরিকল্পনা করে জাপান। তবে তার আগে তা পরিশোধিত বা যথাসম্ভব তেজস্ক্রিয়তামুক্ত করা হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করে তা সাগরে ফেলার জন্য জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা আইএইএ-র কাছে অনুমোদন চায় দেশটির সরকার এবং চলতি বছরের জুলাই মাসে আইএইএ’র অনুমতি পায়।
No comments: