কেন রাফা ক্রসিং খুলতে টালবাহানা করছে মিশর?
ইসরাইলের বিমান হামলায় এখন কার্যত বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকা। এদিকে সীমান্তে স্থল অভিযানের পায়তারা করছে ইসরাইলি সেনারা। ইসরাইলের সর্বাত্মক অবরোধে উপত্যকায় সার্বিক পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে।
‘গাজার লাইফলাইন’ খ্যাত রাফা ক্রসিং খুলে দিতে টালবাহানা করছে ক্রসিংটির নিয়ন্ত্রক দেশ মিশর। ছবি: সংগৃহীত
খাদ্য ও পানি দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই ত্রাণ সহায়তা না পেলে মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতেও ‘গাজার লাইফলাইন’ খ্যাত রাফা ক্রসিং খুলে দিতে টালবাহানা করছে ক্রসিংটির নিয়ন্ত্রক দেশ মিশর।
ভূমধ্যসাগরপাড়ের এক চিলতে ভূখণ্ড গাজা উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত দুটি স্থল সীমান্তপথের একটি হলো এই রাফাহ ক্রসিং। যার মিশরের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান সংঘাতে গাজা যখন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে তখন বিশ্বের নজর গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংয়ের দিকে।
আরও পড়ুন: গাজায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ
কারণ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সীমান্তের অপর প্রান্তে তথা গাজার অভ্যন্তরে ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছে। আর অপর প্রান্ত তথা মিশরের অংশে ত্রাণ সহায়তা বহনকারী শত শত লরি-ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত পেলেই তারা গাজায় প্রবেশ করবে।
কিন্তু ক্রসিং খোলার কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। সোমবার (১৬ অক্টোবর) মিশর কর্তৃপক্ষ জানায়, রাফা ক্রসিং খোলার ব্যাপারে ইসরাইল কোনো সহযোগিতা করছে না। আরও জানায়, ‘রাফা ক্রসিং বন্ধ নয়। তবে ক্রসিংয়ের গাজা অংশে ইসরাইলের বিমান হামলার কারণে এটা অচল হয়ে আছে।’
কায়রো বহু বছর ধরে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে চলাচলের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ করছে। এই কড়াকড়ির কারণে অনেক ফিলিস্তিনির অভিযোগ, মিশর গাজার উপর ইসরাইলের অবরোধকেই জোরদার করছে। হামাস ২০০৭ সালে উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে উপত্যকার ওপর অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরাইল।
বিবিসি বলছে, রাফা ক্রসিংযে মিশরের এই নিয়ন্ত্রণ মূলত উত্তর সিনাইয়ের নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে। মিশরীয় কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে আল কায়েদা সম্পৃক্ত বিদ্রোহীদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িত।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিটি মুহূর্ত বিপজ্জনক’, মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে কাজ করছেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা
কিন্তু এখন ক্রসিং খোলার বিষয়ে মিশরের বর্তমান অনীহার কারণটা একটু ভিন্ন। ইসরাইলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পালাচ্ছে গাজাবাসী। মিশর চায় না, এসব ফিলিস্তিনি ক্রসিং পার হয়ে তাদের দেশে ঢুকে পড়ুক।
যা জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথসের কথাতেও স্পষ্প হয়েছে। তিনি বলেছেন, মিশরীয় কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, গাজাবাসীদের একটি বিশাল অংশ তাদের দেশে ঢুকে পড়তে পারে। যার ফলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের দেখভালের দায়িত্ব নেয়া লাগতে পারে।
No comments: