Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » বিরাট এক মিষ্টির হাড়ি নিয়ে দোকানের মালিক রবীন্দ্রনাথের কাছে হাজির হয়েছে




বিরাট এক মিষ্টির হাড়ি নিয়ে দোকানের মালিক রবীন্দ্রনাথের কাছে হাজির হয়েছেন। না কবিতা,গল্প,নাটক দেওয়ার অনুরোধে নয়, অভিনব তাঁর আবদার। ভদ্রলোকের দোকানের মিষ্টি খেয়ে রবি কবিকে লিখে দিতে হবে অভিমত৷ এই বলে 'জলযোগ' নামের মিষ্টির দোকানের মালিক খানকতক সন্দেশ একটা প্লেটে তুলে কবির দিকে এগিয়ে দিলেন৷ আরেকটা হাঁড়ি থেকে বের করলেন চিনি পাতা দই৷ ভদ্রলোকের চাপাচাপিতে কবিকে দই—সন্দেশ দুই রকমের মিষ্টি খেতে হল৷ কবি লিখে দিলেন 'জলযোগ'-এর মিষ্টান্ন পরীক্ষা করিয়া দেখিলাম৷ তৃপ্তিলাভ করিয়াছি৷ ইহার বিশেষত্ব আছে সেজন্য ইহা আদরনীয়৷ সেই সঙ্গে যে দধি সেবন করিলাম তাহা বিশেষ প্রশংসার যোগ্য'৷ নীচে রবীন্দ্রনাথের সাক্ষর৷ শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকায় ৫অক্টোবর ১৯৩৪সালে রবীন্দ্রনাথের অভিমত সহ বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ হয়েছিল৷ আজকের দিনের মত হয়ত রবীন্দ্রনাথ কে বিজ্ঞাপনের মডেল হতে হয় নি৷ কিন্তু আজ থেকে ৮০-৮৫বছর আগেও বিজ্ঞাপনদাতারা রবীন্দ্রনাথের থেকে তাদের পন্যের জন্য প্রশংসা সম্বলিত অভিমত পেতে তাঁর কাছে নিয়মিত দরবার করতেন৷ সেই তালিকায় দেশের প্রখ্যাত কোম্পানী থেকে মিষ্টির দোকানদার আছেন৷ সবার ওই একই আবদার কবি তাদের পন্যের প্রশংসা করে কয়েকটি লাইন লিখে দেবেন৷ বলা বাহুল্য অনেকের আবদার রবীন্দ্রনাথ রক্ষা করেছেন৷ কবির অভিমত নিয়ে মিষ্টি থেকে সাবান,কুন্তলীন তেল,স্নো,পাওডারের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে সমসাময়িক নানা পত্র পত্রিকায়৷

'শ্রীঘৃত' কোম্পানির কয়েকজন রবীন্দ্রনাথের কাছে এসে সেই একই রকম আবদার করলেন, তিনি যদি তাদের ঘি নিয়ে দু'কলম লিখে দেন৷ দই,সন্দেশ নিয়ে আমরা কবির অভিমত জেনেছি,চলুন এবার দেখি 'ঘি' নিয়ে বিজ্ঞাপনে কবি কি বললেন ৷ রবীন্দ্রনাথ তাদের লিখে দিয়েছিলেন—'বাংলাদেশে ঘৃতের বিকারের সঙ্গে সঙ্গে যকৃতের বিকার দুর্নিবার হয়ে উঠেছে৷ শ্রীঘৃত এই দুঃখ দূর করে দিয়ে বাঙালীকে জীবনধারনে সহায়তা করুক এই কামনা করি৷ ১লা বৈশাখ ১৩৪৪ ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'৷ বলা বাহুল্য এই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল সেকালের বিখ্যাত 'প্রবাসী'পত্রিকায়৷ 'কুন্তলীন' তেলের তখন ভীষণ কদর সেই সময়,রবীন্দ্রনাথ নিজেও এই তেল মেখেছেন৷ সাহিত্য রসিক প্রখ্যাত বাঙালি হেমেন্দ্রমোহন বসু এই তেলের প্রস্তুতকারক৷ রবীন্দ্রনাথের সাথে তাঁর সখ্য ছিল৷ এই সংস্থার তেল প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ অভিমতে লিখেছিলেন—'কুন্তলীন তেল আমরা দুইমাস কাল পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি৷ আমার কোন আত্মীয়ের বহুদিন হইতে চুল উঠিয়া যাইতেছিল কুন্তলীন ব্যবহার করিয়া এক মাসের মধ্যে তাহার নতুন কেশোদগম হইয়াছে৷ এই তেল সুবাসিত এবং ব্যবহার করিলে ইহার গন্ধ ক্রমে দুর্গন্ধে পরিণত হয় না' নীচে সাক্ষর রবীন্দ্রনাথের৷ কবির প্রশংসা সম্বলিত এই বিজ্ঞাপনটি বেরিয়েছিল 'বাংলার বানী'পত্রিকায়৷ ভাদ্র ১৩৩৮সালে জন্মাষ্টমী সংখ্যায়৷ 'গোদরেজ' কোম্পানী কবিকে দিয়ে একটি অভিমত লিখিয়েছিলেন তাদের সাবান সম্বন্ধে৷ কবি সানন্দে লিখে দিয়েছিলেন 'গজরেজ সাবানের তুলনায় কোন বিদেশীয় সাবান এত উৎকৃষ্ট আছে কিনা তাহা আমার জানা নেই৷ ভবিষ্যতে আমি গডরেজ সাবান ব্যবহার করব বলিয়া স্থির করিয়াছি'৷ কবির এই অভিমতটি বিজ্ঞাপন হয়ে বেরিয়েছিল ২৮ কার্তিক ১৩৩৫ এর আনন্দবাজার পত্রিকায়৷ আরও আছে বিখ্যাত ফটোগ্রাফারএস.ঘোষ কে কবি সপ্রশংস অভিমত লিখে দিয়েছিলেন৷ পরে সুন্দর ছবি সহ লেখাটি বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়েছে৷ মনিপুরী নৃত্যের প্রখ্যাত শিল্পী শ্রীমতি সুশীলা সেন রবীন্দনাথের প্রশংসা সম্মলিত লেখা থেকে বঞ্চিত হন নি৷ বলা বাহুল্য একটি দীর্ঘ বিজ্ঞাপনের সঙ্গে প্রশংসা পত্রটি প্রকাশ হয়েছিল 'শনিবারের চিঠি ' পত্রিকায়৷ স্বদেশী অধ্যাবসায় কে উৎসাহ দিতে স্বদেশী প্রসাধনী সংস্থা রেডিয়ম ক্রীম কে রবীন্দ্রনাথ লিখে দিয়েছিলেন প্রশংসাপত্র৷ কি লিখেছিলেন কবি, চলুন একটু দেখে নেওয়া যাক—'যাঁহারা স্নো,ক্রীম জাতীয় প্রসাধন দ্রব্য ও ওডিকোলন প্রভৃতি গন্ধরস ব্যবহার করিয়া থাকেন তাঁহারা রেডিয়ম কারখানা হইতে প্রস্তুত উক্ত দ্রব্যগুলি পরীক্ষা করিয়া দেখিলে বিলাতি সামগ্রী হইতে তাহার পার্থক্য বুঝিতে পারিবেন না৷ প্রথমস্থলে এই স্বদেশী অধ্যাবসায়কে উৎসাহ দেওয়া তাঁহাদের পক্ষে কর্তব্য বলিয়া মনে করি'৷






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply