দক্ষিণ কোরিয়ায় কেন হালাল পশু জবাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
পশুকে প্রথমে অজ্ঞান না করে জবাই করায় দুটি হালাল কসাইখানার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে কোরিয়া অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যানিমেল প্রোটেকশন (কেএএপি) সদস্যরা। সংগঠনের অভিযোগ, কোরিয়াতে হালাল মাংসের নামে যেসব পশু ধারালো ছুরির মাধ্যমে কষ্ট দিয়ে জীবন্ত অবস্থায় হত্যা করা হয় যা কোরিয়ার প্রাণি সংরক্ষণ আইন বহির্ভূত।
কষ্ট দিয়ে জীবন্ত অবস্থায় পশু হত্যা কোরিয়ার প্রাণি সংরক্ষণ আইন বহির্ভূত। ছবি: সংগৃহীত
গত এপ্রিলে রাজধানীর সিউলের গোয়াংওয়ামুন স্কোয়ারে অভিনয়ের মাধ্যমে হালালের প্রতিবাদ জানিয়ে পারফরমেন্স মঞ্চস্থ করে। (২১ জুন) শুক্রবার দ্য কোরিয়া টাইমস এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোরিয়ার প্রাণি সংরক্ষণ সংগঠনের আন্দোলনকারীরা পশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনে হালাল কসাইখানার কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কৃষি খাদ্য ও গ্রামীণ মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কেএএপি পশু জবাই করার পদ্ধতি সংজ্ঞায়িত করে, তাদের মতে কোরিয়াতে কোন পশু জবাই করতে হলে নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রথমে প্রাণিদের অচেতন করে তাদের দুর্ভোগ কমাতে হবে। তারপর জবাই দিতে হয় যেন পশু কোনোরকম কষ্ট না পায়।
আরও পড়ুন: উত্তেজনার মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছাল মার্কিন রণতরী
অন্যদিকে কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশন (কেএমএফ) দ্য কোরিয়া টাইমসকে জানিয়েছে, হালাল পশুপাখি জবাইয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জীবন্ত অবস্থায় ধারালো ছুরি দিয়ে দ্রুত জবাই করতে করতে হবে। আনাড়ি হাতে পশুকে কষ্ট দেয়া যাবে না।
সাম্প্রতি কোরিয়ার গাংওনদো প্রদেশে একটি হালাল কসাইখানার লাইসেন্স নেয়া হয়। সেখান থেকে হালাল মাংস উৎপাদনসহ দেশ-বিদেশে রফতানি করা হয়। উভয় কসাইখানার লাইসেন্সের মেয়াদকাল ১ বছর। তাই এগুলো যাতে নবায়ন না করতে পারে সেজন্য মন্ত্রণালয়কে চাপ প্রদান করছে কোরিয়ার পশু সংরক্ষণ সংগঠন।
কৃষি খাদ্য ও গ্রামীণ মন্ত্রণালয় কোরিয়া টাইমসকে জানিয়েছে, তারা গাংওয়ান প্রদেশে হালাল কসাইখানার পরিচালিত কার্যক্রম এখনো পর্যবেক্ষণ করেনি। এই বছরের শুরুর দিকে কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশন হালাল কমিটির মাধ্যমে গ্যাংওয়ান প্রদেশের সেই কসাইখানাগুলোকে হালাল অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়া / বেতন বেশি হলেও হাড়ভাঙা পরিশ্রম, দুর্ঘটনায় বাড়ছে মৃত্যু
কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশন হালাল প্রশংসাপত্রের জন্য কসাইখানাগুলোর অনুরোধের ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার ভেটেরিনারি পরিষেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের কসাইখানা এবং তাদের কসাই পদ্ধতিগুলো ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। পরিদর্শন শেষে কসাইখানাগুলো ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট মালয়েশিয়ার বিভাগ থেকে একটি সার্টিফিকেশন অর্জন করে, যা জাকিম নামেও পরিচিত।
কেএমএফের একজন কর্মকর্তা কোরিয়া টাইমসকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ কসাইখানাগুলোর হালালভাবে পশু জবাইয়ের পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
এদিকে, মন্ত্রণালয়কে কোরিয়ার বিপণন এবং ভোক্তা নীতি ব্যুরোর কৃষি-প্রাণিসম্পদ স্যানিটারি কোয়ালিটি টিম বলেছে , যে দুটি কসাইখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের একটিতেও আমরা যাইনি। কসাইখানা পরিদর্শন করা আমাদের কাজ নয়। হালাল জবাই সংক্রান্ত কোনো আইনি ধারা আমাদের কাছে নেই। কসাইখানার লাইসেন্স ইস্যু বা প্রত্যাহার করার অধিকার স্থানীয় সরকারের, কেন্দ্রীয় সরকারের নয়।’
No comments: