বিদ্যাসাগর বড় অদ্ভুত ছিলেন! মাছ মাংস খেতেন না। খাওয়ার মধ্যে সামান্য দুধ। তা একবার গ্রামের বাড়ি থেকে কলকাতা ফিরছেন। হেঁটে! বাবার হাত ধরে হেঁটে এসেছিলেন ছোটোবেলায়, তাই বোধহয় তখনও হাঁটতেন। আসতে আসতে একজায়গায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। দেখলেন একটু দূরে একটা বাড়িতে গরুর দুধ দোওয়া হচ্ছে। আর ছোট্টো বাছুরগুলো দূরে দাঁড়িয়ে ক্ষিদেতে ডাকাডাকি করছে। এত কষ্ট পেলেন দেখে, কলকাতা ফিরে দুধ খাওয়াটাও ত্যাগ করলেন। সহস্র পুঁথি পড়া পন্ডিতের টিকি কেটে নেওয়া পন্ডিত, তাঁর এই মন! এইখানটাতে তিনি বিদ্যাসাগর। ঘোড়ার গাড়ি চড়তেন না। কেন? না, ঘোড়া নিজের বেতন বলতে পারে না। কী কান্ড! দুঃখ কষ্ট দেখলেই কেমন যেন হয়ে যেতেন। একে ওই তেজ, তায় এরকম শিশুর মতন হাবভাব.......
লোকে টাকা নিত। মিথ্যে কথা বলে বলে। নিয়ে নিয়ে এমন অবস্থা দাঁড়ালো যে, রাস্তায় বেরোতে পারতেন না। কেন? সে কারণ শুনলে আমরা হেসে ফেলব। বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, সামনে ক-বাবু আসছে। তার কাছে চাড্ডি টাকা পান। মুখোমুখি পড়লে সে একটা বড্ড অস্বস্তির বিষয় হবে। বিদ্যাসাগর পালালেন। তার কিন্তু হেলদোল নেই। এদিকেই আসছে। বিদ্যেসাগর উল্টোদিকে দৌড়তে গিয়ে দেখলেন খ- বাবু আসছে। সে আরো বেশী টাকা নিয়েছে। বিদ্যাসাগর লুকোলেন গাছের আড়ালে।....... এই দৃশ্যটার একটা ফটো কোথাও না কোথাও তুলে নিশ্চিৎ সংরক্ষণে রাখা আছে। আমাদের সেখানে "প্রবেশ নিষেধ"। একবার দুর্ভিক্ষের সময় লঙ্গরখানা খুলেছিলেন শহরে। অনেক লোক খেত। ভাত, ডাল, একটা তরকারি। পুরোটাই নিজের টাকায়। কিছুদিন চলার পর কলকাতার কিছু ভদ্রলোক এসে বললো, বাঙালীর কি একটু মাছ না হলে চলে? বিদ্যাসাগর, যাঁরা দেখভাল করছিলেন, তাঁদের বললেন, একটুকরো করে মাছও দিও। আবার চললো কিছুদিন। আবার সেই ভদ্রলোকগুলো এলো। বলল - সবই হলো। বাঙালীর শেষ পাতে একটু অম্বল হলে ভালো হয়....... বিদ্যাসাগর লঙ্গরখানা বন্ধ করে দিলেন। তাঁকে নিয়ে প্রচুর ব্যঙ্গ রসিকতা করেছে বাঙালী। খিস্তি দিয়েছে তার চতুর্গুণ। বিধবা বিয়ে করবে বলে তাঁর কাছে গুচ্ছ গুচ্ছ টাকা নিয়ে মেরে দিয়েছে। তবু তারই মধ্যে মেয়েদের জন্যে তিনি আজীবন লড়ে গেছেন। মেয়েরা লেখাপড়া করবে এর ওপর তাঁর যে কী টান ছিলো..... একটা সময়ের পর কলকাতার ভদ্র বাঙালী দেখলেই ক্ষেপে যেতেন। তারপর চলে গেলেন সাঁওতাল পরগণায়। ওখানেই থাকতেন। ওঁদের সঙ্গে। ওখানেও ইস্কুল করেছিলেন। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ- টষুধ দিতেন। আজ বিদ্যাসাগর জন্মদিন। বেঁচে থাকলে সম্ভবতঃ তিনি বাঙালী ভদ্রজনের হ্যাপি বার্থডে নিতেন না। তখনই নেননি.....এখন তো......তিনি এখানে থাকতে চাননি। তিনি নেই। কেবল, বারবার মনে হয়, ওই গ্রাম থেকে আসা শহরের মেঠো রাস্তায় তিনি আজও হাঁটছেন। দেখছেন, বাছুরগুলো ভ্যা ভ্যা করছে.....গরুর দুধ দোওয়া হচ্ছে.......তাঁর চোখে জল এসে যাচ্ছে......এইখানে তিনি চিরকাল থাকবেন। বিদ্যাসাগর হয়ে নয়, দয়ার সাগর হয়েSlider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: