আড়াই-তিনগুণ বেশি দামে মুড়িকাটা পেঁয়াজের বীজ বিক্রি
বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের বীজ। বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় বীজের চাহিদা বেড়েছে, বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর উৎপাদন খরচ বাড়া নিয়ে চিন্তায় কৃষকেরা।
বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে মেহেরপুরের কৃষকদের। তবে সমস্যা এখন বীজ নিয়ে। বাড়তি চাহিদার কারণে এবার বীজের দাম প্রায় তিনগুণ বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চাষিরা বলছেন, গত বছর যে পেঁয়াজ বীজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার টাকা মণে এবার তা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়। বাড়তি দামে বীজ কিনে পেঁয়াজ চাষে লাভ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যে।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন, গত বছর পেঁয়াজের বীজ কিনেছিলাম ৪ হাজার টাকা মণ। আর এই বছর ১০ হাজার টাকা মণ পেঁয়াজের বীজ লাগিয়ে কীভাবে লাভ হবে?
আরেক কৃষক বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২২ মণ পেঁয়াজ রোপণ করতে দাম আসছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এত টাকা দিয়ে পেঁয়াজের চাষ করে যদি দাম না পাই, তাহলে তো আমরা সর্বশান্ত হয়ে যাব।’
স্থানীয় এক বীজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে প্রায় ১০ মণ পেঁয়াজ চাষ করা যায়। গত বছর ছিল ৪ হাজার টাকা মণ। এবার ১০ হাজার টাকা মণ কিনতে হচ্ছে। এতে ব্যাপক খরচ হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আমরা মুশকিলে পড়েছি। পেঁয়াজের দাম না হলে আমরা কি করে বাঁচব।’
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘পেঁয়াজের বীজগুলো রাজশাহী থেকে আমদানি করছি। যে কারণে বীজের দামটা একটু বেশি।’
কৃষি বিভাগ বলছে, স্থানীয়ভাবে মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণ করা হয় না। আগামীতে কৃষকদের বীজ সংরক্ষণে উৎসাহ দিচ্ছেন কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘এখন চাষিরা যে পেঁয়াজ লাগাচ্ছে তা মুড়িকাটা পেঁয়াজ। মুড়িকাটা পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণ করে না এখানকার চাষিরা। এটা অন্য জেলা থেকে বিশেষভাবে সংগ্রহ করে ফরিদপুর থেকে আনতে হয়। এখানে ৫০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়। চাষিরা ব্যাপকভাবে পেঁয়াজ চাষ শুরু করেছে। বর্তমানে পেঁয়াজের বীজে বিভিন্ন কোম্পানির দামের তারতম্য আছে। তবে এই দামটা যদি সহনীয় হয় তাহলে চাষিরা আরও চাষ করবে।’
বীজ রোপণের ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ। বিঘা প্রতি ফলন পাওয়া যায় ৭০ থেকে ৮০ মণ পর্যন্ত।
No comments: