Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » অনিশ্চিত মেহেরপুর গড়পুকুর সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প।




ব্যাস্ততম জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন হলেও মেহেরপুর জেলা শহরে এখনো গড়ে ওঠেনি কোন বিনোদন কেন্দ্র। বিষয়টি বিবেচনায় শহরের ঐতিহ্যবাহী গড়পুকুরকে নতুনভাবে সাজানো প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে । বারবার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি আর ঠিকাদারের অবহেলায় মেহেরপুরবাসী বঞ্চিত হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্রটি থেকে। গড়পুকুর প্রকল্প যেন গলার কাঁটা হয়ে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গড় পুকুর শোভাবর্ধন ২০২১ সালে শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি কাজটি। দ্রুত গড়পুকুর প্রকল্প সম্পূর্ণ করার দাবি পৌরবাসীর। মানুষের কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রয়োজন বিনোদন। অথচ জেলা শহর মেহেরপুরে এখনো গড়ে ওঠেনি কোন ধরনের বিনোদন কেন্দ্র। ব্যস্ততম জীবনে সকলেই ছুটছে নিজ নিজ কাজের উদ্দেশ্যে । এর মাঝে ছুটির দিন কিংবা অবসরকালীন সময়টিকে আনন্দময় করতে অনেকেই ছুটে যান বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে । খেলার মাঠ গুলো কমে যাওয়ায় সংকুচিত হয়েছে শিশুদের খেলার স্থান। যে দুই একটি মাঠ রয়েছে সেখানেও খেলার জায়গা মেলে না অনেক শিশুর। মানসিক অবসাদ নিয়েই ঘরেই সময় কাটান অনেকেই। ফলে ইন্টারনেট কিংবা বিভিন্ন কার্টুনের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে শিশুরা। আয়ের অন্যতম উৎস এবং শহরবাসীকে বিনোদন দিতে শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী গড় পুকুরটি দৃষ্টিনন্দন ভাবে সাজাতে ১১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৬১ হাজার সাতশত আটচল্লিশ পয়সা টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করে মেহেরপুর পৌরসভা। ২০২১ সালে একুশে মার্চ কাজেটির উদ্বোধন করা জমকালো আয়োজনে। কাজটির টেন্ডার পায় বগুড়ার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাসুমা বেগম। স্থানটিকে সাজাতে পুকুরের চারপাশে ওয়াকওয়ে, বিশ্রামাগার, কফি হাউস, কনসার্ট গ্যালারি সহ নানা স্থাপনা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য খেলার স্থানের পাশাপাশি নির্মাণের কথা ছিল বিভিন্ন ধরনের রাইডের। শুরুতে কিছুদিন কাজ করে ৪০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করলেও নির্ধারিত মেয়াদে সম্পন্ন হয়নি কাজটি। পরবর্তীতে ঠিকাদার পরিবর্তন করে ২০২২ সালের অক্টোবরে রাজশাহী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাম সরোয়ারকে কাজটি হস্তান্তর করা হয়। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেনি এই প্রতিষ্ঠানও। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি গোলাম সরোয়ার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান স্থানীয় ঠিকাদারকে কাজটি সাব কন্টাকে দিয়েছিল তারা। জানা যায়, মেসার্স মাসুমা বেগমের পক্ষে কাজটি করেছিলো স্থানীয় ঠিকাদার তানভীর আহমেদ খান রানা। কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে পরবর্তীতে তা সম্ভব সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি পৌরসভায় একটি আবেদনের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে ৮ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বিল করা হলেও ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বিল অনুমোদন করা হয়েছে। এতে ২ কোটি টাকার উপরে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে আবেদনে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাসুমা বেগম। মেহেরপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড নিবাসী কামরুজ্জামান বলেন, গত পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটনের দুর্নীতির কারণে মেহেরপুর গড় পুকুর ধ্বংস করে ফেলেছে। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত গড় পুকুর, আমরা শিশু কাল থেকে গড় পুকুরে গোসল করে আসছিলাম ও প্রতি বছর মাছ শিকার করা দেখেছি কিন্তু কয়েক জন স্বার্থনিশি মানুষ গড় পুকুর সৌন্দর্য করার নামে টাকা পয়সা লুটপাট করে পুকুর ধ্বংস করেছে। দুই নম্বর ওয়ার্ড হালদারপাড়া নিবাসী মোঃ রমজান আলী গড় পুকুর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হোক,গড় পুকুর আগের মত করে সকলে গোসল করার ব্যবস্থা করা হোক। চারিদিকে হাঁটার ও বসার ব্যাবস্থা করার কথা বলেন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ আবু ইউসুফ মীরন বলেন, পুকুরের চারপাশে রাস্তায় গর্ত খনন ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে,সে গুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আগের রূপে দেওয়া হোক। গড়পুকুর প্রকল্পের এই বেহাল দশায় হতাশ নাগরিক সমাজ। অবসরকালীন সময়গুলো আনন্দময় হবে বলে প্রত্যাশা ছিল সকলের। ধদুই সন্তানের জননী সুখী খাতুন জানান, বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য শহরে কোন জায়গা নেই। স্বল্প সংখ্যক মাঠ হওয়ায় সেগুলোতেও থাকে প্রচন্ড ভিড়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো ঘরেই অবসাদ নিয়ে কাটাতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থী প্রীতু বলেন, পিতা মাতাকে নিয়ে এক বেলার জন্য আনন্দঘন দিন কাটাবো এমন স্থান শহরে নেই। সকল সময় রেস্টুরেন্ট কিংবা কফি হাউসে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই ঘরেই সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের। ২নম্বর ওয়ার্ড মুক্তা খাতুন বলেন আমার বাড়ির সামনে গড় পুকুর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারলে ছেলে মেয়ে নিয়ে একটু ঘুরে ফিরে বিনোদন করবো তার কোন সফলতা পেলাম না,আশা করি উন্নত কিছু হবে । ছেলেদের বাইরে ঘোরা কিছুটা সুযোগ থাকলেও মেয়েদের সুযোগ নাই বললেই চলে, ইচ্ছা না থাকলেও তাই ঘরেই সময় কাটাতে হচ্ছে' এমন মন্তব্য একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী লামিয়া ফারজানার। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মহসিন আলী জানান, ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৬০ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। বাউন্ডারি দেয়াল, পাড় বাঁধাই, সিঁড়ি তৈরিসহ কিছু কাজ শেষ হয়েছে । তৃতীয় নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্পটির অর্থ বরাদ্দ ছিল বলে জানান এ কর্মকর্তা। কাজ শেষ করতে ঠিকাদারদকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান এই কর্মকর্তা। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ শামীম হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, গড়পুকুর প্রকল্পে বর্তমানে কোন অর্থ ছাড় নেই। বরাদ্দকৃত অর্থের অধিকাংশ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কে পরিশোধ করা হয়েছিল। কাজ সম্পন্ন না করার করার বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে জানান শামীম হোসেন। কোন বরাদ্দ না থাকায় নতুন পরিকল্পনা হাতে নেই, পরবর্তীতে বরাদ্দের সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply