গরুর ক্রনিক ব্লট বা ঘন ঘন পেট ফাঁপা সমস্যার সমাধান
বেশিরভাগ খামারিকেই গরুর পেটফাঁপা সমস্যায় মাঝেমধ্যেই পড়তে হয়। তবে এই সমস্যা যদি একটি গরুর নিয়মিত হতে থাকে অর্থাৎ ক্রনিক ব্লটিং সমস্যায় পরিণত হয় তাহলে খামরির পথে বসতে বেশি দিন লাগবে না! এটি হয়ই মূলত গরুর পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে গেলে। এই গ্যাস টিউব দিয়ে বের করে দিলে সেড়ে যায়। কিন্তু দুয়েক দিনের মধ্যে আবার সমস্যা ফিরে আসে। একেই বলে ক্রনিক ব্লট। এটি হলে কিন্তু গরু দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। দুধেল গাভী হলে দুধ একেবারে কমে যায়। এ ব্যাপারে ত্বরিৎ ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হয়। কারণ কোনো কারণে রুমেনের মাইক্রোফ্লোরা (মাইক্রো অর্গানিজম বা প্রোটোজোয়া) বা উপকারী অণুজীবের চরিত্র ও প্রজাতির বদল ঘটে বা কোনো কারণে (যেমন: অ্যাসিডোসিস বা রুমেনে অ্যাসিডের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়া) মারা গেলে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হয়। বিশেষ করে বাছুরের ঢেকুর তোলা বা গ্যাস বের করে দেওয়ার সক্ষমতাও কোনো কারণে কমে যেতে পারে। এসব সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রুমেনের মাইক্রোফ্লোরা মারা যেতে পারে বিভিন্ন কারণে। হঠাৎ করে খাবার পরিবর্তন, অসুস্থতা এবং দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকলে এসব উপকারী অনুজীব মারা যেতে পারে। চিকিৎসা ক্রনিক ব্লটের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে গরুর অন্য কোনো অসুস্থতার কারণে এমন হচ্ছে কিনা সেটি শনাক্ত করা এবং সেটির চিকিৎসা করা। এরপর রুমেনে মাইক্রোফ্লোরা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। এরপরও যদি বারবার পেটফাঁপার সমস্যা ফিরে আসে তাহলে ছোটখাট একটা অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই সার্জারিকে বলে ‘রুমেন ফিস্টুলা’। গরুর রুমেনে মাইক্রোফ্লোরা ফিরিয়ে আনার একটি আদর্শ উপায় হলো অন্য সুস্থ গরু যেটিকে একই ধরনের খাবার (ফিড) দেওয়া সেটির রুমেন ফ্লুইড নিয়ে অসুস্থ গরুর রুমেনে ঢুকিয়ে দেওয়া। রুমেন ফ্লুইড পাওয়ার জন্য আশেপাশের কোনো কসাইখানায় যোগাযোগ করতে পারেন অথবা নিজেই যদি প্রয়োজন মনে করেন একটি গরু জবাই করে সেটির রুমেন থেকে ফ্লুইড সংগ্রহ করতে পারেন। রুমেন থেকে থকথকে গোবর (আসলে এটি এখনো গোবর হয়নি) নিয়ে সেটি চিপে বা ছেঁকে তরলটুকু সংগ্রহ করুন। এক গ্যালন বা প্রায় ৪ লিটার পরিমান ফ্লুইডই যথেষ্ট। বড় আকারের স্টমাক টিউবের মাধ্যমে এই ফ্লুইড অসুস্থ গরুটির পেটে পাম্প করে দিন। ফ্লুইড সংরক্ষণ গরু জবাই করার সঙ্গে সঙ্গে রুমেন জুস সংগ্রহ করতে হবে। কোনোভাবেই এটিকে ঠাণ্ডা করা যাবে না। গরুর পেটের মধ্যে এটি বডি টেম্পারেচারে থাকে এবং এই তাপমাত্রাতেই সবচেয়ে কাযকর থাকে। ঠাণ্ডা করলে মাইক্রোফ্লোরা মারা যেতে পারে। সংগ্রহ করার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ গরুর পেটে পাম্প করতে পারলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এভাবে রুমেন ফ্লুইড একবার দিলেই ক্রনিক ব্লট সেরে যাওয়ার কথা। তবে সমস্যা যদি পুরনো ও জটিল হয় তাহলে একাধিকবার দিতে হতে পারে। প্রোবায়োটিক এখন রুমেন ফ্লুইড পাওয়া যদি সম্ভব না হয় তাহলে কী করবেন। বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রোবায়োটিক এবং রুমেন স্টিম্যুল্যান্ট পাওয়া যায়। এগুলোর প্যাকেটের গায়ে উল্লেখিত মাত্রায় নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন। এই ওষুধগুলো পাউডার, পেস্ট বা বোলাস আকারে পাওয়া যেতে পারে। জেনে রাখা ভালো, প্রোবায়োটিক হলো অন্ত্রে (পাকস্থলী বা রুমেন) থাকা উপকারী অনুজীব, সেটি ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য এককোষী জীব হতে পারে। প্রোবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েকবার প্রয়োগ করার দরকার হতে পারে। তবে সপ্তাহের বেশি সময় লাগার কথা না। রুমেন ফিস্টুলা ইন্টারনেটে ‘rumen fistula’ লিখে ইমেজ সার্চ দিলেই দেখবেন গরুর পেটে প্লাট লাগানো ছবি আসবে। পেট ফুটা করে রুমেন পযন্ত ক্যানুলা লাগিয়ে রুমেন ফ্লুইড বের করা হয় বা ঢুকানো হয়। উন্নত বিশ্বে করপোরেশন টাইপ বড় বড় খামারে এভাবেই গরু পালন করা হয়। তবে স্পষ্টত এটি অমানবিক। পশু অধিকার সংগঠনগুলোর আন্দোলনের মুখে অনেক দেশেই এই প্র্যাকটিসটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও বিদেশে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এরকম প্লাগ লাগানো গরু রাখা হয়। অবশ্য বাংলাদেশের প্রাণি গবেষণা ইনস্টিটিউটে এমন কোনো প্র্যাকটিস আছে বলে আমার জানা নেই। খামারে একাধিক গরুতে এমন সার্জারি করে প্লাগ লাগানো হয়। কোনো গরুর রুমেন ফ্লুইড প্রয়োজন হলে প্লাগ লাগানো গরু থেকে সংগ্রহ করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ক্রনিক ব্লট বা ঘনঘন পেটফাঁপা ও অতিরিক্ত দানাদার খাবার খেয়ে পেটফাঁপার চিকিৎসায় অত্যন্ত কাযকর। তবে যাই হোক আমরা এ ধরনের অমানবিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে যাবো না। চিকিৎসার পর সেরে গিয়েও আবার কিছু দিন পর যদি সমস্যা ফিরে আসে তাহলে আপনার খাবার বা ফিড পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে। আবার খাবার দেওয়ার সময় পরিবর্তনেরও দরকার পড়তে পারে। এমন হতে পারে আপনার গরু খুব দ্রুত খাবার খায় এবং বেশি খায় বলে আপনিও ঘনঘন খাবার দিচ্ছেন। সে হয়তো জাবর কাটার সময়ই পাচ্ছে না। অবশ্য অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণেও এটি হতে পারে। উপরের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নেওয়ার পরও সমস্যা থেকে গেলে ভেট বা পশু পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলুন।গ্রন্থনা: মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
English News
»
Featured
»
others
»
videos
» গরুর ক্রনিক ব্লট বা ঘন ঘন পেট ফাঁপা সমস্যার সমাধান
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: