Mujibnagar Khabor

মেহেরপুরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দীর্ঘদিন থেকে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় শিক্ষর্থীদের অ্যাসেম্বলি বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা চলাফেরাও করতে পারছে না মাঠে। গত ছয় মাস আগে স্কুলের ছয়তলাবিশিষ্ট একাডেমি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। নির্মাণ কাজের জন্য উপকরণ মাঠ জুড়ে রাখায় খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। এ অবস্থা আরও দুই-তিন বছর থাকবে বলে মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কারণ বিদ্যালয়ের ছয়তলাবিশিষ্ট একাডেমি ভবন নির্মাণ শুরু হয়েছে চলতি অর্থবছর। এ ভবন নির্মাণের ঠিকাদার দিনাজপুরের এম এমই অ্যান্ড এম বি সি’র লাইসেন্সে কাজ করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী (বর্তমানে সাবেক) ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি, মেহেরপুর জেলা আ.লীগ সহসভাপতি ও পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস। যিনি জেলার স্বঘোষিত সবচেয়ে বেশি টাকার মালিক ও ‘মাস্তান’। বাবলু বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনি সভায় প্রতিপক্ষ ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এ জেলায় আমার চেয়ে বড় মাস্তান, আমার চেয়ে কার যন্ত্রপাতি ও বেশি টাকা নাই। আমি কাউকে ভয় করি না। আমার ইউনিয়নের চারটি কেন্দে বিরোধী পক্ষের কোনো ভোটার ও কোনো এজেন্টকে দেখতে চাই না।’ স্বঘোষিত মাস্তান এ ঠিকেদারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস করেন না। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, চার শতাধিক ছাত্রী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। তাদের কোলাহল ও হইহুল্লোড়ে মুখোর থাকত বিদ্যালয়টির খেলার মাঠ। গত মে মাস থেকে ঠিকাদার বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে রেখেছেন একাডেমি ভবন নির্মাণ কাজের সামগ্রী। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর দিনই ঠিকাদারও আত্মগোপনে চলে গেছেন। ফলে পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় কাজে গতি হারিয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুল মাঠেই নির্মাণ সামগ্রী রেখে তৈরি হচ্ছে পাইলিংয়ের পিলার। সেসব পিলার জড়ো করে রাখা হয়েছে। ঢেকে গেছে শহিদ মিনার। ইট, কাঠ, মাটি, পাথর, বালু ফেলে রাখা হয়েছে মাঠের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, ‘একাডেমি ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সদ্য সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আবদুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস। তাকে মাঠ পরিষ্কার রাখতে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিতে বলার ক্ষমতা আমার নাই।’ তিনি স্বীকার করেন মাঠজুড়ে নির্মাণ সামগ্রীর কারণে অ্যাসেম্বলি বন্ধ আছে।