মেহেরপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলনে প্রতি বিঘা জমিতে কুুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে

মেহেরপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলনে প্রতি বিঘা জমিতে কুুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে । মেহেরপুরে এবারও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। কম খরচে অধিক ফলন এবং অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় ভুট্টার আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ৫'শ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদ ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি ভুট্টা চাষে পনোরো থেকে ষোল হাজার টাকা খরচ করে পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন মণ ভুট্টার ফলন হয়েছে। এতে কুুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে প্রতি বিঘা জমিতে। বুধবার (২৩ এপ্রিল), সকাল থেকে সন্ধা অবধি মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন তারা। এ জন্য অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যেই ভুট্টা কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে সাধারণ কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। তবে সম্প্রতি ঝোড়ো হাওয়াতে অধিকাংশ ভুট্টা ক্ষেতের ভুট্টা গাছ মাটিতে নুইয়ে ও শুয়ে পড়েছে। এতে করে কোন কোন কৃষক ফলন কম পেয়ে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন। তারপরও আশানুরূপ ফলন পাবেন বলেই অনেকের দাবী। মেহেরপুরের বেতবাড়ীয়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টার আবাদ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন মণ ফলন হয়েছে । খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় আরো বেশি জমিতে ভুট্টা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। হরিরামপুর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন মণ মণ ভুট্টা হয়েছে। প্রতি মণ ভূট্টা সপ্তাহ খানেক পূর্বে ৬ শত টাকায় বেচাকেনা হলেও এখন ৯ 'শত থেকে ৯ শত কুড়ি টাকা। আর শুকনো ভুট্টা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১'শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে আগ্রহ বেড়েছে ভুট্টা চাষে। পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর আমাদের মাঠে অন্য বছরের চেয়ে ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে। কম খরচ আর বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই চাষ বাড়ছে। এছাড়া ভুট্টার দামও ভালো রয়েছে। এমন দাম পেলে ভুট্টা চাষে কৃষকরা আরো আগ্রহী হবে। মাইলমারী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ জানান, ভুট্টা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়ে থাকে। এছাড়া কীটনাশক, সার ও সেচ তেমন লাগে না। নিড়ানিও কম দিতে হয়। চার মাসের আবাদ এই ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় এলাকার অনেকেই এখন অন্য আবাদ কমিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকেছেন। ইতিমধ্যেই কয়েকটি এলাকায় ভুট্টা কাটা-মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। হিন্দা গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, বৃহত্তর ধলার মাঠে অধিকাংশ জমিতে তামাক চাষ হলেও এবারে বেশ কিছু জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য মাঠের অধিকাংশ জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল সতোরো হাজার ৪'শত পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে কিন্তু চাষ হয়েছে সতোরো হাজার ৯' শত পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে। এছাড়া চলতি মৌসুমে ২ লাখ চব্বিশ হাজার ৩'শত পচাত্তর টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা তাদের ফসলে কাঙ্খিত ফলন ও মূল্য পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ভুট্টার ভালো দাম পেতে কৃষকদের আগ-পিছ করে বিক্রির জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।। গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।