১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের মালোপাড়ার বলরাম হাড়ি মৃত্যৃকালে তিনি শিষ্যদের আদেশ করিয়াছিলেন, তাঁহার দেহ সমাহিত বা অগ্নিতে দগ্ধ করা না হয় । ( চৌষট্টি পর্ব )
এই বলরাম অস্পৃশ্য, নীচ জাতীয় হাড়ী ! আমাদের জন্মগ্রহণের অল্পকাল পূর্বে বলরাম ইহলোক ত্যাগ করিয়াছিলেন । মৃত্যৃকালে তিনি শিষ্যদের আদেশ করিয়াছিলেন, তাঁহার দেহ সমাহিত বা অগ্নিতে দগ্ধ করা না হয় । তাহা যেন শিয়াল-শকুনির ক্ষুপ্লিবারণের জন্য কোনও নির্জন স্থানে সংরক্ষিত হয় । তাঁহার অস্তিম আদেশ পালিত হইয়াছিল | বহু বগসর পরে তাঁহার আখড়ায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠিত ও অট্টালিকা নির্মিত হইয়াছিল | আখড়ার প্রান্তবর্তী নদীর ঘাটি ইষ্টকবদ্ধ করা হইয়াছিল । উক্ত অট্টালিকায় বলরামের ব্যবহৃত খড়ম, লাঠি, ছত্র এবং শয্যা সংরক্ষিত হইয়াছে । বলরামের ভক্তরা দেশ-দেশাস্তর হইতে এগুলি দেখিতে আসে। আমার বয়স যখন পাঁচ বৎসর, সেই সময় মাঘমাসের একদিন প্রত্যুষে আমরা মুখুয্যে-পাড়ার বাড়ী ত্যাগ করিয়া “গোয়ালা চৌধুরী'র গড়ের নিকট বড় রাস্তার ধারে গ্রামের সব্বর্পৈক্ষা অধিক প্রকাশ্য স্থলে আমাদের নূতন বাড়ীতে উঠিয়া আসি | সেদিন অতি ভীষণ দুযেগি, দিবারাত্রি অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে পথ-ঘাট প্লাবিত ও কার্দমাক্ত হইয়াছিল । সেইদিন আমাদের নবগৃহে প্রবেশ ।ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার অংশ ছিল মেহেরপুর। যার পুরোটাই ইতিহাস আর ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ। এখানে বিচরণ ছিল বিভিন্ন সুফিসাধক, আধ্যাত্মিক সাধক আর দরবেশের। আছে বহু পুরোনো স্থাপনা, যা কালের সাক্ষী হয়ে কয়েক শতাব্দী ধরে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। তেমনই সতোরো শত পচাশি সালে মেহেরপুরে জন্ম নেন বলরাম হাড়ি নামের এক আধ্যাত্মিক সাধক। তাকে ঘিরে গড়ে ওঠে মন্দির, তৈরি হয় ভক্ত অনুরাগী। তিনি ‘উপাসথ’ নামে একটি ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেন। যার অনুসারীরা বলরামী সম্প্রদায় নামে পরিচিত। আঠাারো শত পঞ্চাশ সালে পয়ষট্টি বছর বয়সে বলরাম হাড়ি মৃত্যুবরণ করলে জীবন মুখার্জী নামক স্থানীয় এক জমিদার এ মহান সাধকের স্মৃতি রক্ষার্থে পয়ত্রিশ শতাংশ জমি দান করেন। দানকৃত জমির ওপর নির্মাণ করা হয় বলরাম হাড়ির সমাধি মন্দির। কিন্তু কালের বিবর্তনে জমির বেদখলে মন্দিরটি অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বলরাম হাড়ির কিছু অনুসারীসহ স্থানীয় কয়েকজন মন্দিরের জায়গা দখল নিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দখলের বিষয় নিয়ে দখলকারীরা কোনো কথা বলতে রাজি নন। তবে বলরাম হাড়ির দশজন অনুসারী বলছেন, সরকারি আশ্রয়ণের ঘর পেলে দখলকৃত জায়গা ছেড়ে দেবেন। জানা গেছে, আঠারো শতকের শেষের দিকে বা উনিশ শতকের গোড়ার দিকে সাধক বলরাম হাড়ি প্রবর্তিত ‘উপাস’ লোকধর্মের উদ্ভব ও বিকাশ হয়। বাউলদের মতো বলরামীরাও বংশানুক্রমিক নন। দীক্ষা নিয়েই এ ধর্মে অনুসারীরা অন্তর্ভুক্ত হন। বলরাম হাড়িকে তার ভক্তরা বলতেন হাড়িরাম। মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, দিনাজপুর ও রংপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, বীরভূম, বর্ধমান ও কলকাতা অঞ্চলে এ ধর্ম বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রতিবছর বারুনী তিথিতে এ মন্দির প্রাঙ্গণে বলরামী সম্প্রদায়ের উৎসব হয় ও মেলা বসে। একসময় এ অঞ্চলে বলরাম হাড়ির ভাবাদর্শের প্রচুর অনুসারী থাকলেও বর্তমানে তাদের সংখ্যা কমে গেছে। এখনো মেহেরপুরে বলরাম হাড়ির প্রায় দুই হাজারেরও অধিক অনুসারী রয়েছেন। তাদের মতে বৈষ্ণবরা যেমন শ্রী চৈতন্যকে কৃষ্ণের অবতার মনে করেন, তেমনি বলরামের ভক্তরা তাকে রামের অবতার বলে মনে করেন। বলরাম হাড়ির অনুসারী মেহেরপুর বড়বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সুশান্ত হালদার কালবেলাকে বলেন, আমার জন্মের পর থেকেই আমি দেখেছি দুই বিঘার বেশি জায়গার ওপর আমরা বললাম হাড়ির অনুসারীরা দোল পূর্ণিমার অনুষ্ঠান করতাম। কিন্তু দিনদিন আমাদের মন্দিরের জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আমাদের প্রাণের দাবি অতি দ্রুত বেদখল হওয়া হওয়া জমি পুনরুদ্ধার করে মন্দিরকে যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট মেহেরপুরের প্রকল্প পরিচালক জয়ন্ত কুমার সাহা বলেন, মন্দিরটি দেখভালের দায়িত্ব আমাদের না। সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে একুশ সালে চৌদ্দ লাখ চব্ব্বিশ হাজার ব্যয়ে বলরাম হাড়ির মন্দিরটি সংস্কার ও সংরক্ষনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা নির্দেশনা পেয়ে নির্মাণের বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। মন্দিরের কতটুকু জমি ছিল এবং কতটুকু দখল হয়ে গেছে এ বিষয়ে কোনো কিছুই আমাদের জানা নাই। মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, সম্প্রতি এখানে আমার নিয়োগ হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আপনার কাছ থেকে জানলাম। আমি খোঁজখবর নিব। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
Education
»
Featured
»
others
»
world
» ( ১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের মালোপাড়ার বলরাম হাড়ি মৃত্যৃকালে তিনি শিষ্যদের আদেশ করিয়াছিলেন, তাঁহার দেহ সমাহিত বা অগ্নিতে দগ্ধ করা না হয় । ( চৌষট্টি পর্ব )
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: