ভূতের গল্প::: পেতনীর অভিশাপ ( নয় পর্ব )

ভূতের গল্প::: পেতনীর অভিশাপ ( নয় পর্ব ) সন্ধ্যার ছায়া ঘনিয়ে আসছে। আকাশের লালচে রঙ ধীরে ধীরে কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। গ্রামের প্রান্তে পুরনো বনবাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে একাকী, শীতল বাতাস তার জানালাগুলোকে ধাক্কা দিচ্ছে। কেউ সেখানে যেতে চায় না—কারণ সবাই বলে, সেখানে পেতনীর বসবাস! কথিত আছে, বহু বছর আগে এই বাড়ির মালিক ছিল জমিদার সত্যরঞ্জন। একদিন, হঠাৎ করেই তার স্ত্রী রূপাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। তারপর থেকে, কেউ যদি ঐ বাড়িতে রাত কাটানোর দুঃসাহস দেখায়, আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। একদিন, সাহসী তরুণ অয়ন তার বন্ধুদের সাথে বাড়িটিতে প্রবেশ করল। বাতির টিমটিমে আলোয় বাড়ির ভেতরের দেয়ালে অদ্ভুত ছায়া নড়াচড়া করছিল। হঠাৎ, এক ঠান্ডা শ্বাস ফেলা অনুভূত হলো তার ঘাড়ের কাছে। অয়ন পিছনে তাকিয়ে দেখে, জানালার কাচে তার প্রতিবিম্বের পাশে একটি আবছা ছায়া!বাড়ির দরজা খুলতেই এক শীতল বাতাস তাদের গা ছুঁয়ে যায়। তারা বুঝতে পারে, এখানে কিছু একটা ঠিক নেই। চারপাশে ছেঁড়া পর্দা ঝুলছে, দেয়ালে অদ্ভুত দাগ—যেন কেউ ভয়ঙ্কর কিছুর ইঙ্গিত রেখে গেছে। হঠাৎ, নিশিত থেমে যায়। "অপূর্ব, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ?" তার কণ্ঠ কাঁপছিল। অপূর্ব কান পেতে শুনতে চেষ্টা করে। বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ, কিন্তু তার মাঝে অন্য কিছু… মৃদু শ্বাস ফেলার শব্দ আলো ফোঁটার সাথে সাথে পেতনী ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। ঘরটা যেন হঠাৎ প্রাণ ফিরে পেল। নিশিত হতভম্ব হয়ে অপূর্বর দিকে তাকিয়ে বলল— "আমরা কি সত্যিই একটা আত্মাকে মুক্ত করলাম?" অপূর্ব নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল— "হয়তো... অথবা হয়তো সে এখনও এখানে আছে, দেখছে, অপেক্ষা করছে... "এটা কি সত্যি?" সে ফিসফিস করে বলল। অপ্রত্যাশিতভাবে, দরজাটি বন্ধ হয়ে গেল। তার বন্ধু আতঙ্কিত হয়ে উঠল। অয়ন বোঝার আগেই, একটি কর্কশ হাসির শব্দ ভেসে এলো—হাহাহা! এটাই ছিল পেতনীর অভিশাপ।। গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।