Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » রসিক গোপাল ভাঁড়ের চালাকি ( আটচল্লিশ পর্ব ) -




রসিক গোপাল ভাঁড়ের চালাকি ( আটচল্লিশ পর্ব ) - একবার গোপাল পাড়ার এক দোকান থেকে বাকি খেয়েছে। অনেক দিন হ'য়ে গেল দেনা সে শোধ করছে না। তখন মুদি রেগে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে আরজি জানাল। পাঁচ-টাকা দেনা ছিল সাত-টাকার দাবিতে মুদি-মহারাজার কাছে নালিশ করল। গোপাল রাজার তলব পেয়ে রাজসভায় গিয়ে বলল 'সাত টাকা নয় হুজুর, পাঁচ টাকা দেনা, আমি ক্রমে আস্তে-আস্তে শোধ করব। আমায় দয়া ক'রে কিস্তি-বন্দী করার হুকুম দিন।' মহারাজের বা মহাজনের তা'তে আপত্তি ছিল না, কিন্তু গোল বাধলো দেনার পরিমাণ নিয়ে। পাওনাদার বলে, সাত টাকা; দেনাদার বলে, পাঁচ টাকা। অবশেষে মুদির খাতা তলব করা হ'লো। দেখা গেল—খাতা অনুসারে সাত টাকাই দেনা দাঁড়ায় বটে! গোপাল খাতার ভেতর লেখা ভালভাবে দেখে বলল হুজুর! এই যে দেখুন, কত বড় জোচ্চুরি। যে-ক'দিন অড়র ডাল নিয়েছি, সেই ক'দিনই মুদি আমার নামে। ঘি-ও লিখে রেখেছে। অথচ আমি কোন দিন অড়র ডালে ঘি খাই না।' আমি গরীব মানুষ কি, ঘি খেতে পারি? প্রতিদিন আমাদের কি সম্ভব অড়হরডালে ঘি খেতে পারা ? মুদি বললে ‘দেখুন হুজুর, কত বড় মিথ্যে কথা বলছে, ঘি না দিয়ে কেউ অড়হরডাল রান্না করে খেতে পারে ?' - মহারাজের তাই মনে হ'লো। মহারাজের নিজের বাড়িতেও যখনি অড়হর ডাল রান্না হয়, তখনই তাতে প্রচুর ঘি দেওয়া হয়। কাজেই গোপাল নিশ্চয়ই মিথ্যা কথা বলেছে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্ৰ সাত টাকারই ডিক্রী দিলেন মুদিকে। কি আর ক'রবে! গোপাল ডিক্রি-অনুযায়ী মুদির ডিক্রী শোধ করল বাধ্য হয়ে । “গোপালের কিন্তু মুদি যে ঠকিয়ে টাকা নিয়েছে, এ রাগ তার কিছুতেই গেল না। সে এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভাবল।” - মনে-মনে সে ফন্দী আঁটতে লাগল কী ক'রে এই মুদি জব্দ করা যায়। হঠাৎ একদিন সে একটা বুদ্ধি বের করল। সেবছরে গোপালের বাড়িতে আখের চাষ খুব ভাল হয়েছিল। সে কিছু আখের- গুড় লোকের দ্বারা তৈরি করিয়ে নিল। “তারপর বেশ কিছুদিন সে এমনভাবে আলাপ- ব্যবহার করতে লাগল মুদির সঙ্গে যে, মুদির ভুল- ক্রমেও সন্দেহ হ'ল না, তাকে জব্দ করার ফন্দী করেছে গোপাল।' গোপাল একদিন কথা প্রসঙ্গে মুদিকে বললে, সে কিছু আখের গুড় খুব সস্তায় বিক্রি করতে চায়— সামান্য লাভ রেখেই বেচে দেবে। টাকার বিশেষ প্রয়োজন। সস্তা দামের কথা শুনে মুদি কিছু গুড় কিনতে চাইলে। গোপাল গুড় বিক্রী করতে রাজি হ'লো যেন নগদ বিক্রীর লোভে। নগদ টাকা দিয়ে, পিপে-ভৰ্ত্তি গুড় সস্তায় কিনে গরুর গাড়ি করে নিয়ে আনন্দে বাড়ি চলে গেল মুদি । কয়েকদিন পরে পিপে খুলে সে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। কি সর্ব্বনাশ! সামান্য গুড় উপর দিক্‌টায় আছে বটে, কিন্তু তার তলায় সে সবই বালি মেশানো ইট সুরকির কুচি দানা। হায় হায় করে মুদি কাঁদতে লাগল এবং মনে মনে রাগ হ'ল । গোপাল গুড় বিক্রি করে নগদ টাকা পেয়ে ছেলে, মেয়ে, বৌ নিয়ে বেশ কয়েকদিন বাইরে বেড়াতে চলে গেল মনের আনন্দে। কিছুদিন পর অনেক খোঁজাখুঁজি ক'রে সে গোপালকে বার করলে একদিন। গুড়ের তলায় বালি সুরকির কথা বলে চোটপাট শুরু করতেই গোপাল বললে 'চটো ক্যান মুদি ভাই? ঘি ছাড়া অড়হর ডাল ব্যাচন যায় না, আমি বালি-সুরকি ছাড়া সরেস দানা গুড় বেচুম্ ক্যামনে?' এই বলে হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ল মাটিতে।গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply