বয়স বাড়লে হাঁটু কোমর বা জয়েন্টে ব্যথা আর্থ্রাইটিস এক ধরনের নয়, কোনটির কী উপসর্গ? কী চিকিৎসা? বয়স বাড়লে হাঁটু কোমর বা জয়েন্টে ব্যথা হবেই। বিষয়টিকে যেন ভবিতব্য বলে মেনে নিয়েছেন অনেকে। ধারণাটি অবশ্য খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ দিকে দিকে এখন আর্থ্রাইটিসের সমস্যা। কিন্তু জানেন কি সব আর্থ্রাইটিস এক রকম নয়? হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন। এই রোগেরও রকমফের আছে। চিকিৎসা থেকে উপসর্গ সবেতেই রয়েছে ভিন্নতা। তাই রোগটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আজকাল ডট ইন-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল এসএসকেএমের অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন সৌরভ দাসের সঙ্গে। কী বললেন তিনি? প্রথমেই যে বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার, সেটি হল আর্থ্রাইটিস মূলত দুই ধরনের অস্টিও আর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। রোগী, উপসর্গ থেকে চিকিৎসা পদ্ধতি, সবেতেই পার্থক্য রয়েছে দু'টি রোগের। তাই নিজেরা কোনও রকম ডাক্তারি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কী কী পার্থক্য দুই ধরনের আর্থ্রাইটিসের মধ্যে? চিকিৎসক বললেন, "অস্টিও আর্থ্রাইটিস সাধারণত বয়স বাড়লে হয়। যেমন ধরুন পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। বয়স বাড়লে অস্থিসন্ধির কার্টিলেজ ক্ষয় হতে শুরু করে। এই কার্টিলেজ আসলে দু'টো হারের মধ্যিখানে থাকে। এবার এটা সাধারণ ভাবে একদিকে ক্ষয় হয় আবার সেই সঙ্গে নতুন করে গঠিতও হয়। কিন্তু বয়স হলে ক্ষয় হওয়ার তুলনায় নতুন কার্টিলেজ গঠন হওয়ার হার কমে যায়। সেকারনেই দিনে দিনে কার্টিলেজ পাতলা হতে থাকে। আর সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত হয়। তাছাড়া অস্থিসন্ধিতে যে পর্দা থাকে, সেটিতেও প্রদাহ দেখা দেয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কিছুটা অন্য ধরনের অসুখ। এটি অটোইমিউন ডিজিজ। এখন অনেকেই জানতে চাইবেন সেটা আবার কী। কখনও কখনও আমাদের শরীর ভুলবশত দেহের কিছু অঙ্গকেই শত্রু ভেবে আক্রমণ করে বসে। ফলে সেই অঙ্গে রোগ দেখা দেয়। একেই অটোইমিউন ডিজিজ বলে। এক্ষেত্রে শরীর আমাদের অস্থিসন্ধি অর্থাৎ জয়েন্টগুলিকে আক্রমণ করে নষ্ট করে। আর এক্ষেত্রে একই সঙ্গে অনেকগুলি জয়েন্টে সমস্যা দেখা দেয়।" এতো গেল বিজ্ঞানের কথা। কিন্তু কোন রোগের ঝুঁকি কাদের বেশি তারও কী তারতম্য রয়েছে? রয়েছে। অন্তত তেমনটাই জানালেন চিকিৎসক। সার্জন জানান, বয়স্ক ব্যক্তিদের পাশাপশি যাঁদের স্থূলতার সমস্যা রয়েছে বা আগে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার ইতিহাস থাকলে সমস্যা বেশি হয়। অন্যদিকে "রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কিন্তু কমবয়সিদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। যেমন ধরুন যাঁদের বয়স ৩০ থেকে ৫০ এর ঘরে তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি।" বক্তব্য তাঁর। তফাৎ রয়েছে আক্রান্ত অঙ্গেরও। সাধারণত হাঁটু, হিপ জয়েন্ট এবং আঙুলের একেবারে প্রান্তিক জয়েন্টে এই রোগ বেশি হয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে কিন্তু হাতের আঙুলের শেষ প্রান্তে ব্যথা খুব একটা হয় না। বরং কব্জির দিকে বেশি ব্যথা থাকে। আর রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে জয়েন্ট ছাড়াও চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ফুসফুসের সমস্যা, ক্লান্তি, জ্বর এসবও কখনও কখনও দেখা যায়। চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি বিশেষ উপসর্গের দিকে নজর দেন। সাধারণ মানুষের পক্ষেও এই বিষয়গুলি জেনে রাখা জরুরি। চিকিৎসক বলেন, "অস্টিও আর্থ্রাইটিসের সবচেয়ে বড় উপসর্গ হল সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরের বিভিন্ন অংশ শক্ত বা কঠিন হয়ে থাকে। কিন্তু মোটামুটি আধাঘণ্টা কেটে গেলেই সেটা আস্তে আস্তে কমে আসে। কিন্তু হাঁটাহাঁটি বা দৈনন্দিন কাজকর্ম করলে সেই ব্যথা বাড়তে থাকে। যত বেশি বিশ্রাম নেবেন তত এই ব্যথা কম থাকবে। এছাড়া হাত পা, বিশেষ করে হাঁটু কতটা বাঁকাতে পারছেন সেই পরিবৃত্তটা কমে আসে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সকালের ব্যথা কিন্তু একেবারে উল্টো। এই ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথা খুব বেশি থাকে। কিন্তু এই ব্যথা হাঁটাচলা করলে কমে আসে।" এই পার্থক্যই চিকিৎসকদের প্রাথমিক দিকনির্দেশক হিসাবে কাজ করে। রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আর্থ্রাইটিস সেটা নিশ্চিত করতে আর এ ফ্যাক্টর অ্যান্টি সিসিপি এই ধরনের কিছু পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। কখনও হাঁটুর থেকে জল বার করে সেটার পরীক্ষা করা হয়। তবে এসব একেবারেই ডাক্তারি পরিভাষা। মোটকথা ডাক্তারবাবুরা আগে নিশ্চিত হন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হয়েছে কি না। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। চিকিৎসক জানান, অস্টিও আর্থ্রাইটিস যেহেতু বয়স্ক মানুষদের মধ্যে বেশি হয়, তাই প্রথমে লাইফস্টাইল অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনযাপনে বদল আনতে হয়। যেমন- স্থূলতা থাকলে ওজন কমাতেই হবে। বি এম আই ২৫ এর নিচে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। সিঁড়ি ভাঙা, হাঁটু ভাঁজ হয়ে বসা কমাতে হবে। মলত্যাগের সময় ব্যবহার করতে হবে কমোড। চিকিৎসক আরও বলেন, "আর্থ্রাইটিসের সাধারণত চারটি স্টেজ থাকে। এক বা দু'নম্বর স্টেজে এই সব পদ্ধতি কাজে আসে। কখনও কখনও আমরা ফিজিও থেরাপির পরামর্শও দিই। কিন্তু তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে অস্ত্রোপচার ছাড়া গতি নেই।" রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে প্রথমেই ওষুধ দিতে হয়। যাতে শরীর আক্রান্ত জয়েন্টগুলিকে আর আক্রমণ না করে। কিন্তু যদি কোনও ধরনের ডিফরমিটি হয়ে যায়, অর্থাৎ হাড়ের আকার নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করতে হয় বলে জানান চিকিৎসক। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও সাধারণ ভাবে তেমন কিছু করার নেই। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করা হয়, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায় তবে অনেকটাই দূরে রাখা যায় অস্টিও আর্থ্রাইটিস।
Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
lid news
»
others
»
world
»
Zilla News
» বয়স বাড়লে হাঁটু কোমর বা জয়েন্টে ব্যথা আর্থ্রাইটিস এক ধরনের নয়, কোনটির কী উপসর্গ? কী চিকিৎসা?
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: