Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » হৃদরোগ: হার্ট ভালো রাখতে একজন ব্যক্তির কতটা পরিশ্রম বা ব্যায়াম দরকার




হৃদরোগ: হার্ট ভালো রাখতে একজন ব্যক্তির কতটা পরিশ্রম বা ব্যায়াম দরকার বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ বলছে বাংলাদেশে প্রবীণ মানুষেরা যেসব রোগে মারা যান তার শীর্ষেই আছে হৃদরোগ বা এ সম্পর্কিত রোগ। আবার গবেষক ও চিকিৎসক সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর অসংক্রামক রোগে যত মানুষ মারা যায় তার অর্ধেকই মারা যায় এই হৃদরোগে, যার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে অল্প বয়সেও হৃদরোগে আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লক্ষ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। আর বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লক্ষ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায় তামাক জনিত কারণে। অর্থাৎ প্রতি দুই মিনিটে একজন মানুষ মারা যাচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এমন পরিস্থিতিতে আজ পালিত হলো বিশ্ব হার্ট দিবস। এ উপলক্ষে ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন। চিকিৎসকরা বলছেন হৃদরোগের চিকিৎসার চেয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ উত্তম এবং এক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বলছেন ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক নূরুল আলম।

পরিশ্রম বা ব্যায়াম করলে কী হয় চিকিৎসকদের মতে যে কোনো শারীরিক নড়াচড়া যেটাতে দেহের ঐচ্ছিক পেশী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং পেশীর এই কাজের জন্য ক্যালরি বা শক্তির ব্যয় ঘটে সেটিই শারীরিক পরিশ্রম বা ফিজিক্যাল এক্টিভিটি। অর্থাৎ ব্যায়াম বা শারীরিক শ্রমের মূল উদ্দেশ্যই হল অতিরিক্ত মেদ বা ক্যালরি বার্ন করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় খেলাধুলা, হাঁটাচলা, গৃহস্থালির কাজ, ভ্রমণ, বিনোদনমূলক কাজ কিংবা শরীরচর্চার মতো কাজ। কোন ধরণের ব্যায়াম বা পরিশ্রম কতটা দরকার চিকিৎসকরা বলছেন হার্ট সুস্থ রাখতে শারীরিক শ্রম, খাবার দাবার ও ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ- এটি একজন মানুষকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। বরিশালের অধিবাসী তোফাজ্জল ইসলামের বয়স ৭৫। এক সময় রাজনীতি করতেন কিন্তু গত প্রায় এক দশক অবসর জীবন যাপন করছে স্বাস্থ্যগত কারণে। "হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিসে ভুগছি। এ কারণে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি আর কায়িক পরিশ্রম করি। বাসা থেকে বাজারে আসা যাওয়া হেঁটেই করার চেষ্টা করি। নাতির সাথে টুকটাক খেলাও করি নিয়মিত," বলছিলেন তিনি। তার স্ত্রী সেলিনা খাতুনকেও একই পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। অর্থাৎ নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে হার্ট সুস্থ রাখতে। "নামাজ পড়ি, হাটি আর বাসার কাজকর্মও কিছুটা করার চেষ্টা করি," বলছিলেন তিনি। কিন্তু অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন আছে যে ঠিক কোন ধরণের পরিশ্রম কতটা করা উচিত হার্ট সুস্থ রাখার জন্য। ডাঃ নূরুল আলম বলছেন হার্ট সুস্থ রাখার জন্য সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটা দরকার। কিন্তু কারও যদি তেমন সময় না থাকে বা সুযোগ না হয় তাহলে তাকে বাসায় বা কর্মক্ষেত্রে হেটে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা, অফিস বা বাসাতেই হাঁটা কিংবা অফিসে আসার সময় বা বাসায় যাওয়ার সময় গাড়ী একটু দুরে রেখে হেটে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। " আসলে সব পরিশ্রম বা ব্যায়াম সব বয়সের সবাই হয়তো পারবেন না। সে কারণে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এটি করা যেতে পারে," বলছিলেন মিস্টার আলম। তার মতে হার্টের জন্য দরকার একটু দ্রুত গতিতে হাঁটা, যা হার্টের রেট বাড়াতে সহায়তা করবে। আবার হাঁটা ছাড়াও সাঁতার ও সাইক্লিংয়ের মতো ব্যায়াম হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। কিন্তু এটি বয়স ভেদে সবার জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। এজন্যই হাঁটাহাঁটির বিষয়টিই সবাইকে বেশি জোর দিয়ে বলা হয়। তবে কতটা হাঁটলে সেটা হার্টের জন্য কার্যকর হবে - এমন প্রশ্নের জবাবে মিস্টার আলম বলছেন যে, "মনে করুন একটি বাস ছেড়ে দিচ্ছে। আপনি সেটায় ওঠার জন্য একটু দূর থেকে যেভাবে দ্রুতগতিতে এগুবেন সেভাবেই হাঁটা উচিত হার্টের জন্য"। কিন্তু যাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পারিবারিক ইতিহাস আছে কিংবা ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা আছে তাদের আগে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তার জন্য কোন পরিশ্রম বা ব্যায়াম কার্যকর হবে তা ঠিক করে নিতে হবে। কোন বয়সে কতটুকু শারীরিক পরিশ্রম? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো কিশোর বয়সে বিশেষ করে ৫-১৭ বছর বয়স প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা ভালোভাবে শারীরিক পরিশ্রম করা দরকার । বিশেষ করে ওই বয়সে পেশী ও হাড়কে শক্তিশালী করে এমন কোন ব্যায়াম বা শরীরচর্চা সপ্তাহে অন্তত তিন বার করা উচিত। এক্ষেত্রে খেলাধুলা ভালো ভূমিকা পালন করে। আর আঠার বছরের বেশি বয়সীদের আরও উচ্চমাত্রার শারীরিক পরিশ্রম করা দরকার। তাদের মাঝারি ও উচ্চমাত্রার ব্যায়াম বা শরীর চর্চার মতো কাজে বেশি সময় দিতে হবে। একই সাথে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী হাড় শক্তিশালী করে এমন ব্যায়াম সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার করা দরকার। তবে বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে হাটাঁহাটিই নিরাপদ বলে মনে করছেন ডাঃ নূরুল আলম। হার্ট রেট কত হলে বুঝবেন পরিশ্রম যথাযথ যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি বলছে মোটামুটি মাত্রার শারীরিক পরিশ্রমের জন্য একজন মানুষের হার্ট রেট থাকা উচিত তার সর্বোচ্চ হার্ট রেটের ৬৪ থেকে ৭৬ শতাংশের মধ্যে। আবার বয়সভিত্তিকও এটা হিসেব করা যায় যে শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে হার্ট রেট কতটা পর্যন্ত হলে সেটা যথাযথ হবে। এক্ষেত্রে একজন মানুষের বয়স যদি ৫০ বছর হয় তাহলে তাহলে ২২০ থেকে ৫০ বাদ দিলে যে ১৭০ বিটস পার মিনিট বা বিপিএম পাওয়া যাবে সেটাই ঐ ব্যক্তির বয়স অনুপাতে সর্বোচ্চ হার্ট রেট। এখন ৫০ বছর বয়সী একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ হার্ট রেটের ৬৪ শতাংশ হবে : ১৭০ *০.৬৪ =১০৯ বিপিএম আর ৭৬ শতাংশের হবে: ৭০*০.৭৬= ১২৯ বিপিএম। এখানে দেখা যাচ্ছে মোটামুটি মাত্রার শারীরিক পরিশ্রমের জন্য একজন ৫০ বছর বয়সী মানুষের হার্ট রেট ওই পরিশ্রম করার সময় ১০৯ তেকে ১২৯ এর মধ্যে থাকতে হবে। আবার উচ্চমাত্রার শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে হার্ট রেট হবে সর্বোচ্চ হার্টরেটের ৭৭% থেকে ৯৩%। তবে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় উচ্চমাত্রার পরিশ্রম সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। এবিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply