ওষুধের স্বাদ তেতো হয় কেন সর্দি-কাশি হোক বা বড় কোনো অসুখ, ওষুধ খাওয়ার সময় হলেই আমাদের মুখটা কেমন যেন হয়ে ওঠে। বেশির ভাগ ওষুধের স্বাদ এত বাজে হয় যে পানি দিয়ে গিলে ফেলতে হয়। কিন্তু তুমি কি কখনো ভেবে দেখেছ, যে ওষুধ আমাদের রোগ সারায়, সেই ওষুধগুলোর স্বাদ সব সময় এমন বিচ্ছিরি হয় কেন। ওষুধ কোম্পানি কি চাইলেই এগুলোকে মিষ্টি করে বানাতে পারত না? রোগ নিরাময়কারী ও জীবন রক্ষাকারী হওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ ওষুধেরই স্বাদ কিন্তু খারাপ হয়। তেতো স্বাদের সিরাপ বা ট্যাবলেটের বাজে স্বাদ আমাদের সবারই চেনা। প্রশ্ন হলো, ওষুধের স্বাদটা তেতো হওয়া কেন এত জরুরি? এর উত্তর আছে প্রকৃতির কাছে। কারণ, বেশির ভাগ আধুনিক ওষুধই এমন রাসায়নিক যৌগ থেকে তৈরি বা অনুপ্রাণিত, যা প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। বেশির ভাগ ওষুধ সক্রিয় রাসায়নিক উপাদানকে
যা প্রকৃতি থেকে আসে বা ল্যাবে তৈরি হয় এর সঙ্গে নিষ্ক্রিয় উপাদান অর্থাৎ এক্সিপিয়েন্ট মিশিয়ে ট্যাবলেট, সিরাপ বা ক্যাপসুলের মতো ব্যবহারযোগ্য রূপে ওষুধ কোম্পানিতে প্রস্তুত করা হয়। মূলত প্রকৃতি থেকে আসা উপাদান উদ্ভিদ, স্পঞ্জ ও প্রবালের মতো সামুদ্রিক প্রাণী থেকে তৈরি করা হয়। এক জায়গায় স্থির থাকায় এরা দ্রুত দৌড়ে কিংবা লুকিয়ে শিকারি প্রাণীদের থেকে বাঁচতে পারে না। সে জন্য এরা এক বিশেষ ধরনের রাসায়নিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করে। এই প্রতিরক্ষামূলক রাসায়নিক যৌগগুলো সাধারণত তেতো বা বিষাক্ত প্রকৃতির হয়। যা এদের অন্য প্রাণী থেকে এদের রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা এই শক্তিশালী প্রাকৃতিক রাসায়নিকগুলোকে আমাদের রোগ সারানোর জন্য ওষুধে ব্যবহার করে। তাই সেই প্রতিরক্ষামূলক তেতো স্বাদ আমরাও পাই। এটাই হলো বাজে স্বাদের মূল কারণ। লাখ লাখ বছর ধরে, নড়াচড়া করতে পারে না এমন উদ্ভিদ ও সামুদ্রিক প্রাণীরা নিজেদের শিকারিদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এক বিশেষ কৌশল তৈরি করেছে। এরা বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ তৈরি করতে শিখেছে। যেমন, ফক্সগ্লোভস গাছের কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড বা ইউ বেরির মতো উদ্ভিদের বিষাক্ত যৌগগুলো সবই এদের আত্মরক্ষার হাতিয়ার। আর মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী এমন বিশেষ স্বাদসংবেদী কোষ আছে, যা এই ক্ষতিকারক যৌগগুলোকে দ্রুত শনাক্ত করতে পারে। তাই আমাদের কাছে এই যৌগগুলোর স্বাদ হয় তেতো। এই তেতো স্বাদই হলো আমাদের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কসংকেত যে, কোনো নির্দিষ্ট রাসায়নিক শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া পরিবর্তন করে ক্ষতি করতে পারে। সহজ কথায়, ওষুধে এই তেতো স্বাদটি এসেছে মূলত প্রকৃতির সেই আত্মরক্ষার কৌশল থেকেই। আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান এই শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রভাবগুলোকেই এখন নিরাপদে কাজে লাগাচ্ছে। মজার বিষয় হলো, যদিও পেনিসিলিন বা মরফিনের মতো হাতে গোনা কয়েকটি ওষুধে প্রাকৃতিক যৌগ সরাসরি ব্যবহার করা হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির গঠন থেকে শুধু অনুপ্রেরণা নেন। এরপর ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য এদের রাসায়নিক গঠনে পরিবর্তন আনা হয়। এই পরিবর্তনের কারণ হলো একটি সফল ওষুধের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন। এটিকে অবশ্যই শরীরের ভেতরে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে, রোগাক্রান্ত স্থানে পৌঁছাতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকতে হবে। তাই এই জরুরি শর্তগুলো পূরণ করার জন্য কখনো কখনো প্রাকৃতিক রাসায়নিক কাঠামো পরিবর্তন করাটা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ওষুধ খাওয়ার সময় আমাদের যে খারাপ অনুভূতি হয়, তা শুধু ওষুধের মূল সক্রিয় উপাদানের তেতো স্বাদের ওপর নির্ভর করে না। ওষুধ যখন চূড়ান্তভাবে তৈরি হয়, তখন স্থায়িত্ব ও ট্যাবলেট বা সিরাপ হিসেবে উৎপাদনের জন্য মূল উপাদানের সঙ্গে ‘এক্সিপিয়েন্ট’ নামে কিছু নিষ্ক্রিয় উপাদান মেশানো হয়। কাগজে–কলমে সুস্বাদু উপাদান মিশিয়ে খারাপ স্বাদ কমানো সম্ভব, তবে বাস্তবে সমস্যাটি কেবল স্বাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন রোগী ওষুধ খেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন কি না, তা নির্ভর করে পাঁচটি সংবেদনশীলতার ওপর। এসব বিষয় একসঙ্গে মিলে যে অভিজ্ঞতা তৈরি করে, সেটিই শেষ পর্যন্ত ঠিক করে দেয় ওষুধটি কতটা বাজে লাগছে। শিশু ও বয়স্ক রোগীদের জন্য ওষুধের স্বাদ একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। কারণ, যদি ওষুধের স্বাদ ভালো না লাগে, তবে এই দুর্বল রোগীরা দরকারি ডোজটি খেতে চাইবে না বা খেতে ঝামেলা করবে। এর ফলে দুটি বড় বিপদ তৈরি হয়। প্রথমত, ওই রোগীর স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, পুরো কোর্স শেষ না করার কারণে, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে আরও ভয়াবহ ওষুধ প্রতিরোধের সমস্যা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। এই বড় সমস্যা সমাধানের জন্য ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। তারা ওষুধের ওপর আবরণ দেওয়া, রাসায়নিক কাঠামো পরিবর্তন করা বা নানা ধরনের বিশেষ ফ্লেভার যোগ করার মতো বহু কৌশল ব্যবহার করে। এত চেষ্টার পরও কিছু ওষুধের স্বাদ তেতো থেকে যায়। কারণ, সব দিক সামলে একটি নিখুঁত ওষুধ তৈরি করা আজও জটিল একটি কাজ। সূত্র: লাইভ সায়েন্সSlider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: