কী খাচ্ছেন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ কখন খাচ্ছেন আপনি কি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে আগ্রহী?
হয়ত সে কারণে কী খাওয়া উচিত, কতটা খাওয়া উচিত এ নিয়ে আপনি তথ্য ঘাঁটতে পছন্দ করেন। এ নিয়ে বাজারে তথ্যেরও অভাব নেই। কিন্তু নতুন এক গবেষণা বলছে কী খাওয়া উচিত আর কতটা খাওয়া উচিত তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল কখন খাওয়া উচিত। পুষ্টিবিদরা আপনাকে বলবেন নিয়মিত বিরতি দিয়ে খাবার খেতে এবং বলবে কখনই আপনি খাবার সময়ে খাওয়া বাদ দেবেন না। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম আট থেকে ১০ ঘন্টার মধ্যে খাবেন যারা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করেন, তাদের জিমের প্রশিক্ষকরা পরামর্শ দেন যে ব্যায়ামের আগে, পরে অথবা ব্যায়ামের সময় কিছু পুষ্টিকর খাবার খেতে। তথ্য থেকে দেখা গেছে যে ক্যালরিযুক্ত খাবার দিনের প্রথম দিকে খেলে তা থেকে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এখন নতুন এক গবেষণায় মানুষের ২৪ ঘন্টা দেহঘড়ির সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের কী সম্পর্ক তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তারা বলছে ঘুম থেকে জেগে ওঠার প্রথম ৮ থেকে ১০ ঘন্টার মধ্যে খাবার খেতে, যাতে শরীর খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় পায়। ড: সচিন পাণ্ডা আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে সাল্ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক। মানুষের দেহঘড়ির সঙ্গে খাওয়ার সম্পর্ক নিয়ে দশ বছর চালানোর গবেষণার ওপরএকটি বই লিখেছেন তিনি। দেহঘড়ির সঙ্গে খাওয়ার সম্পর্ক কোথায়? ড: পাণ্ডা বিবিসিকে বলেছেন মানুষের দেহের যে নিজস্ব একটা ঘড়ি আছে তার ছন্দের সঙ্গে মিলিয়ে যখন মানুষ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে তখন মানুষের শরীর সবচেয়ে ভালভাবে কাজ করে। ''শরীরের ভেতর যে ২৪ ঘন্টার ঘড়ি আছে, সে ঘড়ি একেকজনের জন্য একেকরকম। শরীরের প্রতিটি কোষ এই ঘড়ির ছন্দ অনুযায়ী কাজ করে। যার অর্থ হল প্রতিটি হরমোন, মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষের প্রতিটি রাসয়নিক, প্রতিটি এনজাইম নি:সারিত হয় এই ঘড়ি ধরে, এমনকী এই ঘড়ি ধরেই শরীরের প্রতিটি জিন তার কাজ করে যায়,'' বলছেন ড: পাণ্ডা। ''গবেষণায় আমরা দেখেছি এই ঘড়ির নিয়ম মেনে শরীর খাদ্য হজম করতে এবং তার থেকে পুষ্টি আহরণ করতে পারে মাত্র আট থেকে দশ ঘন্টা পর্যন্ত - বড়জোর ১২ ঘন্টা পর্যন্ত।'' ''এই সময়ের বাইরে আমাদের দেহঘড়ি অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে - যেমন শরীরের কোন কোষ মেরামত করা বা কোষ পুনরুজ্জীবিত করার কাজে।'' ভুরিভোজের সময় বা উপোষের সময় ড: পাণ্ডা এবং তার সহকর্মীরা একইধরনের দু্ই দল ইঁদুরের ওপর তাদের গবেষণা চালান ২০১২ সালে। প্রথম দলটিকে তারা খেতে দেন বেশি চর্বিওয়ালা এবং বেশি চিনিযুক্ত খাবার এবং এমনভাবে তাদের খেতে দেওয়া হয় যাতে দিনের যে কোন সময় তারা খেতে পারে। দ্বিতীয় দলটিকে খেতে দেওয়া হয় একইধরনের, একই মাপের ক্যালরিযুক্ত খাবার- কিন্তু তাদের খাবার জন্য ৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ড: পাণ্ডা বলছেন ১৮ সপ্তাহ পর দেখা যায় প্রথম দলের ইঁদুরগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং তাদের ওজন বেড়ে গেছে, সেইসঙ্গে তাদের কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং অন্ত্রের রোগ দেখা দিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে যে ইঁদুরগুলো একই খাবার খেয়েছে কিন্তু খেয়েছে বেঁধে দেওয়া আট ঘন্টার মধ্যে, সেগুলো কোনধরনের রোগে আক্রান্ত হয়নি। ড: পাণ্ডা ব্যাখ্যা করছেন যখন আমরা খাওয়া থামাই, তখন পরিবেশ ও খাবার থেকে যেসব বিষাক্ত জিনিশ আমাদের শরীরে ঢোকে, শরীরের কোষগুলো সেগুলো শরীর থেকে বের করে দেবার প্রক্রিয়া শুরু করে। এসময় কোলেস্টেরল কমে, মাংসপেশী, চামড়া ও অন্ত্রের ভেতরকার আবরণ এমনকী ডিএনএ-ও মেরামত হয়। তিনি বলছেন ৮ থেকে ১০ ঘন্টার বাইরে যখন কিছু খাওয়া হয়, তখন এই মেরামতের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। শরীর তখন ওই নতুন খাবার হজম করার এবং তার থেকে পুষ্টি আহরণের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ''নির্দিষ্ট সময় বিরতি দিয়ে খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ''বিশ্রাম দিয়ে খাওয়া'' বা ''টাইম রেস্টেড ইটিং'' বলা হয়।'' ড: পাণ্ডা বলছেন, ৮ থেকে ১০, বড়জোর ১২ ঘন্টার মধ্যে খাওয়ার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি। এই সময়ের বাইরে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও তা শরীরের জন্য অদরকারি হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলছেন তারা একটি গবেষণায় আরও দেখেছেন যেসব মহিলা প্রতি রাতে একটানা ১৩ ঘন্টা না খেয়ে থাকছেন, তাদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি খুবই কম। ২০১৫ সালে ড: পাণ্ডা স্বেচ্ছায় পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী এমন কয়েকজন ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস নিয়ে গবেষণা চালান। এরা দিনে ১৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে খেতেন। এদের ১৬ সপ্তাহের জন্য খাওয়ার সময় কমিয়ে আনা হয় ১০ থেকে ১১ ঘন্টায়। তারা আগে যা খেতেন তাই খান ঐ ১১ ঘন্টা সময়ের ভেতর। ড: পাণ্ডা দেখেন খাবার সময় কমিয়ে আনার পর তাদের ওজন কমেছে। তারা আগের তুলনায় আরও চাঙ্গা বোধ করছেন এবং তারা আগের তুলনায় ভাল ঘুমাচ্ছেন। কিন্তু ড: পাণ্ডার মতে সেটা মানিয়ে নেওয়া সম্ভব। তিনি বলছেন, ''ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমবার খাওয়ার আগে একঘন্টা অপেক্ষা করুন। এরপর ৮ থেকে ১০ ঘন্টা হাতে রাখুন খাওয়ার জন্য। আবার যখন কাজের সময় নিয়মিত হবে তখন পুরোন নিয়মে ফিরে যান।'' রাতের বেলা ঘুম থেকে উঠে এটা সেটা খাওয়া বা ছুটির দিনে খাওয়ার নিয়ম ভেঙে সারাদিন ধরে টুকটুাক খাওয়া শরীরের জন্য ভাল নয় বলে বলছেন ড: পাণ্ডা। তিনি বলছেন এধরনের অনিয়ম মানুষের হজমের প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। এবং শরীরের ভেতর যে ''স্বাভাবিক ঘড়িটা'' কাজ করে তার ছন্দপতন ঘটায়।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: