Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ভূতের জামা লাল




ভূতের জামা লাল নিতু একদিন ঘরের জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখে কেউ একজন এদিন-সেদিক যাওয়া-আসা করছে। সে ভাবল হয়তো বাড়ির কেউ হবে। খুব একটা মনোযোগ না দিয়ে পড়ায় মনোনিবেশ করে। কিন্তু না বারবার আসা যাওয়ার কারণে চোখ পড়ছে সেখানটায়। এবার উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে; কিন্তু ব্যর্থ হয়। শেষমেশ উপায়ান্তর না পেয়ে নিতু ঘরের লাইট বন্ধ করে ঘুমানোর মতো ভান করে শুয়ে পড়ে। তখন চোখের ওপর সেই আলো আঁধারির খেলা। সে কিছুটা সাহসীও বটে। চুপিচুপি একটা টর্চ লাইট নিয়ে ঘরের দরজা খুলে একটু দূরে অপেক্ষায় থাকে। কখন সেই ছায়া শরীর দেখতে পাবে। হ্যাঁ নিতু দেখতে পাচ্ছে। একটি নয় দু’টি নয়, সাত সাতটি ছায়া শরীরের আনাগোনা। তারপরও সে টর্চের আলো না জ্বালিয়ে আরো কিছুক্ষণ অন্ধকারে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। অপেক্ষা করে সেই ছায়া শরীরগুলো কাছাকাছি এলেই আলো জ্বালিয়ে দিলে দেখা যাবে। তখন খোলাসা হবে, আদতে এরা কারা? ইতোমধ্যে নিতুর মা নিতু নিতু করে সারা বাড়ি মাথায় তুলছে। নিতু মায়ের চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেয়েও কোনো সাড়াশব্দ করে না। বাহির থেকেও বুঝতে পারে এ ঘর ওই ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজে যায়। মেয়েকে না পেয়ে তারও পেরেশানি বেড়ে চলে। নিতু বুঝতে পারে আর একটু হলে হয়তো মা অজ্ঞান হয়ে যাবে। ওদিকে দাদু আর দাদা গেছে তার ফুপির বাড়ি। যদিও অনেক বড় বাড়ি। যেহেতু গ্রাম, বাড়ির অন্য সব লোকজন ঘুমিয়ে পড়েছে সেই সন্ধ্যায়। তাদেরও এতক্ষণে এক ঘুম হয়ে গেছে। ওদিকে নিতু দাদার ছোট ভাই কাশেম দাদা কাশি দিয়ে জানান দিচ্ছে সে সজাগ। কিন্তু নিতুও! আগে ভূতের কত গল্প শুনেছে। আর এখন একসাথে সাতটা ভূত স্বচক্ষে দেখতে পাবে! অদ্ভুত এক ধরনের উন্মাদনা কাজ করে তার ভেতর। এদিকে মা-ও ঘরের দরজা খোলা রেখে বসে আছে। এদিকে নিতু টানটান উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। হ্যাঁ ভূতগুলো চিঁচিঁ করতে করতে খুব কাছাকাছি চলে আসে। নিতু চিন্তায় পড়ে যায়, এখনই কি জ্বালিয়ে দিবে আলো? নিজে নিজে ভাবতে থাকে। আর একটু কাছে এলেই জ্বালবে। আসুক আর একটু কাছে। পিনপতন নীরবতায় সে অপেক্ষা করতে করতে কখন যে নিজের অজান্তেই টর্চ জ্বালিয়ে দিলো টেরই পেল না। অমনি ভূতগুলো পড়িমরি করে সাঁইসাঁই করে লাফ দিয়ে গাছে ওঠে উড়াল দিয়ে দিলো। সে উপরে তাকিয়ে দেখতে লাগল ইয়া লম্বা লম্বা ভূত। তাদের সকলের পরণে ছিল লাল লাল জামা। দেখতে দেখতে সে গুনল ছয়টি ভূত। এবার চিন্তায় পড়ে গেল আগে দেখেছে সাতটি। আর এখন উড়ে গেল ছয়টি! কারণ কি? হঠাৎই সম্বিত ফিরে পায় একটা ভূত মাটিতে কুঁজো হয়ে পড়ে আছে। নিতু কিছুটা সাহস নিয়ে এগিয়ে দেখে। অনেক বড়সড় একটা লাল জামা। দুরুদুরু বুকে কাছে গিয়ে উল্টেপাল্টে দেখে, না এখানে কোনো ভূত নেই। শুধু জামা পড়ে রয়েছে। নিতু জামাটা নিয়ে ঘরে চলে আসতে যাবে, অমনি কিছু একটা ঝাপটা দিয়ে তার কাছ থেকে জামাটা নিয়ে গেল। নিতু কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখে হাতটা খালি। তখন নিতু বুঝতে পারে, ভূত সাত টা-ই ছিল। কিন্তু একটা ছিল বাচ্চা ভূত। সে হাঁটতে পারলেও উড়তে পারে না। তাই তার মা তাকে নিয়ে উড়িয়ে চলে যাওয়ার সময়, জামাটা খুলে পড়ে যায়। পরে অন্য ভূত এসে জামাটা নিয়ে যায়।

এদিকে মা নিতুকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। ততক্ষণে বাড়ির লোকেদের মধ্যেও জানাজানি হয়ে যায়। সবাই তাকে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। সকালে ঘুম থেকে ওঠে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের শেয়ার করে রাতের ঘটনা। বন্ধুরা খুব আগ্রহ নিয়ে নিতুর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা শোনে। বন্ধুদের মধ্যে একজন রিমন ছিল আরো ভিতু। নিতুর মুখে ভূতের কথা শুনে ভয়ে জ্ঞান হারিয়েছে। সবাই রিমনের মাথায় পানি ঢালতে থাকে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply