Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » নেপালে ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের ঘর ছাড়তে হয় কেন?




নেপালে ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের ঘর ছাড়তে হয় কেন? নেপালে ঋতুস্রাবকে ঘিরে নানা রকম রক্ষণশীলতা এবং সামাজিক রাখঢাক এখনো রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঋতুস্রাবের মত একটি শারীরিক প্রক্রিয়া চলার সময় মেয়েদেরকে মনে করা হয় অপবিত্র। এই প্রথাকে বলা হয় ছাউপাদি। ২০০৫ সাল থেকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে বেআইনি ঘোষণা করা হলেও, এখনো অনেক সমাজে তা প্রচলিত। নেপালের পশ্চিম এলাকায় ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন একটি গ্রাম ঢাংগাদি। এখানকার বাড়ি গুলো মাটি ও খড় দিয়ে তৈরি। এখানকার গ্রামগুলোর প্রায় সব পরিবারই ছাউপাদি প্রথা পালন করে। পিরিয়ড বা 'মাসিক' শুরু হলে চার থেকে ৬ দিন তাদের বাড়ি থেকে দূরে একটি ঘরে রাখা হয়। যেন একরকম সাময়িক নির্বাসন। একই কাপড় পরে চারদিন ধরে কাটাতে হয়। ওই সময় কোনও পুরুষ

কে স্পর্শ করা যাবে না এবং বিশেষ কিছু খাবার খেতেও বারণ। এরপর ৬ষ্ঠ কিংবা ৭ম দিনে গরুর মূত্র দিয়ে গায়ে ছিটিয়ে তাদের ঘরে তোলা হয়। এতে 'অপবিত্রতা' দূর হল বলে মনে করেন স্থানীয়রা। লহ্মীমালা নামে স্থানীয় একজন স্বাস্থ্যকর্মী জানান, তার নিজের বেলাতেও এমনটি ঘটেছে। তবে এখন তিনি এ‌ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার। এখানকার পরিবারগুলোকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। লহ্মী বলেন, আমরা দরজায় দরজায় গিয়ে অনুরোধ করে বলছি, আপনার মেয়েকে বাড়ির বাইরে থাকতে বাধ্য করবেন না। তাদেরকে এসময়টায় ঘরের ভেতর থাকতে দিন। কিন্তু এটা খুবই কঠিন কাজ। লোকজন আমাদের সাথে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়। অভিশাপও দেয়। বেশিরভাগ সময় পুলিশ সাথে নিয়ে গ্রামগুলোতে ঢুকতে হয়। এর হার আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে বলে জানান লহ্মী। তার নিজের মেয়েকে ঋতুস্রাবের দিনগুলোতে বাড়িতে নিজের কক্ষেই থাকতে দেন। কিন্তু গ্রামের ভেতর ছোট এককক্ষের ঘরে এখনও রাত কাটে অল্পবয়সী সব মেয়েদের। এসব ঘর সাধারণত মাটির। ঘরে প্রবেশের দরোজা এতই ছোট যে হামাগুড়ি দিয়ে ভেতরে ঢুকতে হবে। কোনও কপাট নেই। তাহলে কতটা নিরাপদ বোধ করেন মেয়েরা? লহ্মী জানান, শীতের সময় একটি মশারি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। তবে অন্যসময় খোলাই থাকে। রাতে স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মীরা টহল দেয় আর কুকুর ঘোরাফেরা করে। ফলে এটা নিরাপদ। শহরাঞ্চলে এখন মেয়েদের কাছে স্যানিটারি প্যাড পরিচিত হলেও, এখানকার মেয়েরা ঋতুস্রাবের সময় পুরনো কাপড় ব্যবহার করে। স্যানিটারি প্যাড কেনার মত টাকা তাদের হাতে নেই। আবার জলের কল ব্যবহার করার অনুমতি নেই তাদের, কারণ দেবতা অসন্তুষ্ট হবে, এমনটাই মনে করা হয়। ফলে বাড়ির লোকেরা যে জল ব্যবহার করে সেটা তারা ছুঁতে পারেনা। তাই জলের প্রয়োজন মেটাতে হেটে নদীতে যেতে হয় তাদের। গ্রামের বয়স্ক লোকজন এখনও সেই প্রাচীন রীতিতে বিশ্বাসী। শঙ্কর জোশি নামে ৮৪ বছরের একজন বৃদ্ধ বলেন, "আগে তো তাদের বাইরেই থাকতে দেয়া হতো। কোনও ঘর ছিলনা। এখন তাদের ঘরের ভেতর রাখা হয়। শুধুমাত্র জলের ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। আমরা তো জলকে দূষিত করতে পারিনা। তাহলে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়বো"। কিন্তু মেয়েরা এসব আচার না মানলে বিপদের কোনও কোন ঘটনা কি আদৌ কখনো ঘটেছে? জানতে চাইলে শঙ্কর জোশি বলেন, " আমার স্ত্রী এ অবস্থায় আমাকে স্পর্শ করলে আমি অসুস্থ হয়ে যাই" । ইয়াংকার নামে এক তরুণ যেমন মনে করে, এটা মূলত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রক্ষার বিষয়। ঋতুস্রাবের রক্ত অনেকটা বিষাক্ত ধরনের। এসময় মেয়েদের একই পোশাক পরে থাকতে হয় এবং এমনকি তাদের যথাযথ অন্তর্বাসও থাকেনা। তাদের গোসল করারও জায়গা নেই। ফলে এ অবস্থায় নারীদের রান্নাঘরে কাজ করতে দিলে সেটা স্বাস্থ্যকর হবে না"। সুতরাং বিজ্ঞান ও নারীদের কর্মতৎপরতা বিশ্বজুড়ে যখন এগিয়ে চলেছে, তখনও এসব কারণেই ঋতুস্রাবকে ঘিরে এই কুসংস্কার এখনও বহাল থেকে গেছে নেপালের বহু গ্রামীণ পরিবারের মাঝে। স্বাস্থ্য-কর্মীদের আশঙ্কা, এই বিশেষ সময়টিতে বাড়ি থেকে দূরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একা দিন-রাত অবস্থান, বিশুদ্ধ পানির অভাব মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার তেরি করতে পারে মেয়েদের জন্য।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply