Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » রাশিয়ার উপকথা-বাবা ইয়াগার গল্প




রাশিয়ার উপকথা-বাবা ইয়াগার গল্প-

অনেক কাল আগে এক ছিল বুড়ো আর বুড়ি আর ছিল তাদের এক মেয়ে। বুড়ি মারা গেলে বুড়ো ঘরে আনল এক সৎ মা। সৎমায়ের মেয়েকে ভারী অপছন্দ। খালি বসে বসে ভাবে কেমন করে মেয়েটাকে তাড়ানো যায় বাড়ি থেকে। একদিন বুড়ো কাজে বেরোতে সৎ মা মেয়েকে ডেকে বলে, “একবার আমার বোনের বাড়িতে যা দেখি। তোর একটা জামা সেলাই করব, তার জন্যে ছুঁচসুতো চেয়ে নিয়ে আয়।” এই বোনটা আসলে ছিল দুষ্টু ডাইনি বাবা ইয়াগা। ছোট্ট মেয়ের মাথায় কিন্তু বুদ্ধি ছিল অনেক। সে করল কি সৎ মায়ের বোনের কাছে প্রথমে না গিয়ে সটান চলে গেল তার নিজের মাসীর কাছে। গিয়ে বলে, “ও মাসী, সৎ মা আমায় তার বোনের কাছে যেতে বলছে আমার জামা সেলাইয়ের ছুঁচসুতো চাইতে। কী করি বলো তো?” মাসী বলল, “শোন ভাগ্নী, ওখানে গেলেই একটা বার্চ গাছ তোর মুখে ডালের ঝাপটা মারতে চাইবে। তাকে একটা রিবন উপহার দিস। দরজাগুলো দেখবি ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ করবে। তেল নিয়ে যাস তার কবজাতে ঢালবার জন্যে। কুকুরের দল আসবে তোকে ছিঁড়ে খেতে। খানিক মাংস নিয়ে যাস তাদের জন্যে। একটা বেড়াল দেখবি, সেটা নখ দিয়ে তোর চোখ খুবলে নিতে চাইবে। তাকে দিস খানিকটা হ্যাম।” ছোট্ট মেয়ে তো রওনা হয়ে গেল। হাঁটতে, হাঁটতে, হাঁটতে অবশেষে মায়ের বোনের বাড়ি পৌঁছে দেখে তার ভেতরে বাবা ইয়াগা বসে সুতো কাটছে। “ভালো আছো মাসী?” বলল ছোট্ট মেয়ে। “ভালো আছি রে ছোট্ট মেয়ে, বল কী চাই।” বাবা ইয়াগা জবাব দিল। “মা আমায় পাঠাল তোমার কাছ থেকে ছুঁচসুতো চাইতে। আমার জন্যে জামা সেলাই করবে।” “বেশ বেশ। এখন বসে খানিক সুতো কাট দেখি আগে!” মেয়ে বসল সুতো কাটতে আর বাবা ইয়াগা বাইরে গিয়ে কাজের মেয়েকে ডেকে বলে, “ওপরে গিয়ে চানের জল গরম কর। চান করে এসে মেয়েটাকে দিয়ে সকালের ভোজ খাব আজ।” কাজের মেয়ে তো তাই করতে চলে গেল। ওদিকে ছোট্ট মেয়ে তো ভয়েই কাঁটা। কাজের মেয়েকে ডেকে বলে, “ও কাজের মেয়ে ভাই, কাঠে আগুন দিওনা লক্ষ্মীটি। তার বদলে জল ঢেলে দিও আর চালুনিতে করে চানের জল এনো,” এই বলে সে কাজের মেয়েকে একখানা সুন্দর রুমাল দিল। খানিক বাদে জানালা দিয়ে উঁকি মেরে বাবা ইয়াগা ছোট্ট মেয়েকে বলে, “কী রে, সেলাই করছিস তো?” “করছি মাসী,” ছোট্ট মেয়ে জবাব দিল। বাবা ইয়াগা জানালা থেকে সরে যেতেই ছোট্ট মেয়ে করল কি, বেড়ালটাকে খানিক হ্যাম দিল খেতে। তারপর জিজ্ঞেস করল, “এখান থেকে পালাই কেমন করে?” বেড়াল বলল, “এই নাও একটা গামছা আর একটা চিরুনি। এই নিয়ে এক দৌড়ে পালাও। বাবা ইয়াগা তোমায় তাড়া করবে। তখন মাটিতে কান পেতে তার পায়ের আওয়াজ শুনো। আওয়াজ পেলেই গামছাটা মাটিতে ছুঁড়ে দেবে, ওমনি একটা বিরাট নদী হয়ে যাবে গামছাটা। তারপর মাটিতে কান পেতে যদি শোন সে নদী পেরিয়ে তোমায় তাড়া করে আসছে, তাহলে তক্ষুণি চিরুনিটা ছুঁড়ে মারবে মাটিতে। ওমনি দেখবে গভীর একটা বন হয়ে যাবে জাদু চিরুনি। বাবা ইয়াগা সে জঙ্গল পেরিয়ে যেতে পারবে না।” ছোট্ট মেয়ে গামছা আর চিরুনি নিয়ে তো পালিয়ে গেল। পালাবার সময় কুকুরগুলো তেড়ে এসেছিল। ছোট্ট মেয়ে ওমনি তাদের সামনে ছুঁড়ে দিল সঙ্গে করে আনা মাংসের টুকরো। কুকুররা তাই পেয়ে তাকে রাস্তা ছেড়ে দিল। দরজাটা ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ তুলতে গেছিল, ছোট্ট মেয়ে তাদের কবজায় ঢেলে দিল সঙ্গে করে আনা তেল। ওমনি তারা খুশি হয়ে শব্দ না করে খুলে গেল। বার্চ গাছ যেই না এল তার মুখে ঝাপটা মারতে ওমনি সে গাছের ডালে বেঁধে দিল সুন্দর এক রিবন। খুশি হয়ে গাছ কিচ্ছু বলল না তাকে। এর মধ্যে বেড়াল চরকার ধারে বসে সব সুতো জড়িয়ে মরিয়ে একশা করে রেখেছে। খানিক বাদে বাবা ইয়াগা জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে যেই জিজ্ঞাসা করল, “কী রে, সেলাই করছিস তো?” অমনি সে নিচু গলায় বলে, “আমি সেলাই করছি মাসী!” গলা শুনেই বাবা ইয়াগার সন্দেহ হতে এক দৌড়ে ঘরের ভেতর ঢুকে দেখে ছোট্ট মেয়ে পালিয়েছে। তখন সে রেগে গিয়ে বেড়ালটাকে ভীষণ মারল প্রথমে। বলে, “চোখ খুবলে নিলি না কেন মেয়েটার?” বেড়াল বলল, “তোমার কাছে এতদিন যে কাজ করলাম, কিন্তু আমায় একটুকরো হাড্ডিও খেতে দাওনি। ছোট্ট মেয়ে আমায় এই অ্যাত্তোটা হ্যাম খেতে দিয়েছে।” বাবা ইয়াগা তখন কুকুর, দরজা, কাজের মেয়ে আর বার্চ গাছকে বকতে গেল। বকুনি খেয়ে কুকুর বলল, “এতদিন যে তোমার কাছে কাজ করলাম, একটা পোড়া রুটিও তো কখনো দাওনি আমাদের। ছোট্ট মেয়ে আমাদের তাজা মাংস খাইয়েছে।” দরজা বলল, “এতদিন যে তোমার কাছে কাজ করলাম, একটা দিন একফোঁটা তেল দিয়েছো আমাদের কবজায়? ছোট্ট মেয়ে আমাদের কবজায় অ্যাত্তো অ্যাত্তো তেল দিয়েছে।” বার্চ গাছ আর কাজের মেয়ে বলল, “এতদিন যে তোমার কাছে কাজ করলাম, একটা কোন উপহার দিয়েছো আমাদের? ছোট্ট মেয়ে আমাদের কেমন সুন্দর সব উপহার দিয়েছে।” সেই শুনে ভীষণ রেগে গিয়ে বাবা ইয়াগা লম্বা লম্বা পায়ে ছুটল ছোট্ট মেয়েকে ধরে আনতে। মাটিতে কান পেতে পায়ের আওয়াজ শুনেই ছোট্ট মেয়ে পথের ওপর ছড়িয়ে দিল সেই গামছা। গামছা অমনি নদী হয়ে বইতে লাগল আর মেয়েও ছুটে পালাল অনেক দূরে। বাবা ইয়াগা করল কি, ঝাঁটায় চেপে উড়তে উড়তে নদী পার হয়ে গিয়ে ফের ছুটল ছোট্ট মেয়ের পেছনে। মাটিতে কান পেতে তার পায়ের আওয়াজ পেয়ে ছোট্ট মেয়ে এইবারে মাটিতে আছড়ে ফেলল সেই চিরুনিটা। অমনি সেখানে গজিয়ে উঠল ঘন একটা জঙ্গল। বাবা ইয়াগার ঝাঁটা সেই জঙ্গলে আটকে গিয়ে সে আর জঙ্গল পেরোতে পারল না। ছোট্ট মেয়ে তখন ছুটতে ছুটতে বাড়ি ফিরে দেখে তার বাবা এসে গেছে। বাবা তখন ছোট্ট মেয়েকে অনেক আদর করল আর সৎ মাকে ভীষণ বকে দিল। তারপর তারা সুখেশান্তিতে থাকতে লাগল।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply