Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » অটিজম: আক্রান্ত এক ছেলের মা বলছেন - 'শিশু বিশেষজ্ঞও মুখে বলতে পারেননি ছেলে অটিজমে আক্রান্ত'




অটিজম: আক্রান্ত এক ছেলের মা বলছেন - 'শিশু বিশেষজ্ঞও মুখে বলতে পারেননি ছেলে অটিজমে আক্রান্ত' ঢাকার বাসিন্দা নূরজাহান দীপার ২০ বছর বয়সী ছেলে অটিজমে আক্রান্ত। এই সমস্যার ব্যাপারে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব আর সামাজিক নানা গৎবাঁধা ধারণার কারণে এখনো তাকে ছেলেকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। অটিজম আক্রান্ত মানুষ এবং তাদের পরিবারের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে কতোটা -সে বিষয়ে তার বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বিবিসি বাংলার সঙ্গে কথা বলেছিলেন মিসেস দীপা। 'শুরুতে বুঝতেই পারিনি যে কার কাছে যাব'

মিসেস দীপা শুরুতে যে সমস্যাটির মুখোমুখি হয়েছিলেন সেটা হল তার ছেলের এই বিষয়টি শনাক্ত করা নিয়ে। জন্মের পর থেকে তার ছেলের বেড়ে ওঠা, শারীরিক গড়ন, চালচলন সবই ছিল স্বাভাবিক। শুরুতে একটা দুইটা শব্দ দিয়ে কথা বলতে শুরু করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেভাবে বা যে হারে কথা বলা স্বাভাবিক, সেই অনুযায়ী তার ছেলের উন্নতি চোখে পড়ছিল না মা দীপার। এছাড়া আচার-আচরণেও বড় ধরণের পার্থক্য চোখে পড়ে তার। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন, "তার সমস্যা শনাক্ত করতেই আমাদের দেড় থেকে দুই বছর সময় লেগে যায়। বয়স হওয়ার পরও সে পূর্ণ বাক্য বলতে পারছিল না।" "এছাড়া সমবয়সী বাচ্চাদের সাথে খেলত না, সমবয়সী বাচ্চাদের মতো আচরণ করতো না।" কিন্তু ছেলের এই বিষয়গুলো নিয়ে সন্দেহ হলেও তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে এগুলো নিয়ে কার সাথে কথা বলবেন, কার কাছে যাবেন। পরে একদিন তার এক নারীর সঙ্গে দেখা হয়। যার সন্তানও অটিজমে আক্রান্ত। তিনি দীপাকে সরকারি শিশু হাসপাতালের চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মিসেস দীপা বলেন, "আমি এটা বুঝতাম যে আমাকে এমন কারও কাছে যেতে হবে যিনি আমার ছেলের মূল সমস্যাটা ধরিয়ে দিয়ে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।" "কিন্তু এই জায়গাটা খুঁজে পেতে আমার অনেক সময় লেগে যায়।" শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তার সন্তানকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন যে শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত। "আমার ছেলেটা ঠিক বয়সেই বসেছে, হেঁটেছে, শব্দ বলেছে। তারপরও পরিচিত সবাই বলতো, তোমার বাচ্চাটা অন্যদের চাইতে একটু আলাদা।" "তার প্রেক্ষিতেই আমি একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলি," বলেন মিসেস দীপা। অটিজমকে ঘিরে দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে? এ ব্যাপারে মিসেস দীপা বলেন, "একজন অটিজমে আক্রান্ত শিশুর মা এবং একজন স্পেশাল এডুকেটর হিসেবে আমি বলবো অনেক পরিবর্তন এসেছে।" "আমার সন্তানের যখন অটিজম ধরা পড়ে, তখন পরিস্থিতি এতোটা রক্ষণশীল ছিল যে, একজন শিশু বিশেষজ্ঞও নিজ মুখে বলতে পারেননি যে আমার ছেলে অটিজমে আক্রান্ত। সেটা তাকে লিখে জানাতে হয়েছে।" কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে এবং আজকাল কম-বেশি সবাই অটিজমের লক্ষণগুলো জানে, তাদেরকে কোথায় নিয়ে যেতে হবে, তাদের ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা সম্পর্কে সচেতন বলে তিনি মনে করেন। তার মতে, একসময় যারা 'ডিজঅ্যাবিলিটি নিয়ে কাজ করতেন তারাও অটিজম নিয়ে কাজ করতে চাইতেন না'। "কারণ ভাবা হতো যে অটিজমের ম্যানেজমেন্ট আলাদা। কেউই এই বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে চাইতো না।" কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষাপটটা সেই রকম নেই। বরং এখন অনেক অটিস্টিক শিশুদের বিশেষ স্কুলে আসতে দেখা যায় বলে উল্লেখ করেন মিসেস দীপা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগে খুশি তিনি? বাংলাদেশেও সরকার গত কয়েক বছরে প্রতিবন্ধীদের জন্যে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের কল্যাণের লক্ষ্যে বেশ কিছু আইনও করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের ব্যাপারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মিসেস দীপা। তবে এসবের পাশাপাশি বিশেষ শিশুদের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। প্রাপ্তবয়স্ক অটিস্টিকদের নিয়েও কাজ করার আহ্বান এছাড়া অটিস্টিকে আক্রান্ত বলতেই এখনও অনেকেই শিশুদের বোঝে। কিন্তু অনেক পরিণত মানুষও আছেন যারা এই সমস্যায় ভুগছেন। তাদের বিষয়টা কিন্তু কখনোই সামনে আনা হয়না। এই প্রাপ্তবয়স্ক অটিস্টিকদের নিয়ে জোরালোভাবে কাজ হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। মিসেস দীপা বলেন, "অটিস্টিকদের জন্য চাকরির বাজার তৈরি আছে। অনেকেই তাদের কাজ দিতে চাইছে।" "কিন্তু সেখানে কাজ করতে গেলে যে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সেটা কারও নেই। তাই শিশুদের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট অটিস্টিকদের নজরে আনাটা জরুরি।" আট দশটা মানুষ যেভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে, গণ পরিবহন ব্যবহার করে, রাস্তাঘাটে চলাচল করে, একজন অটিস্টিকের ক্ষেত্রে সেই বাস্তবতাটা ভিন্ন। বর্তমানে অনেক অটিস্টিক শিশুই চাকরি করছে। কিন্তু তাদের জন্য অফিসে যাওয়াটাই খুব কঠিন হয়ে যায়। সেই বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করার প্রয়োজন বলে মনে করেন মিসেস দীপা।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply