Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » হঠাৎ কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে আসলে বিজ্ঞানীরা কী করবেন




হঠাৎ কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে আসলে বিজ্ঞানীরা কী করবেন

ধরুন, একটি বিশাল গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। এখন কী করা হবে? একটা মহাকাশযান পাঠিয়ে ওটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেই তো হয়! ব্যাপারটা শুনতে যতটা সহজ, আসলে কাজটা ততটা নয়। কারণ, ওই পাথরখণ্ডকে ধাক্কা মারার আগে দুটি জিনিস জানতেই হবে। এক, ওটা কীভাবে ঘুরছে? দুই, ঠিক কোন জায়গায় ধাক্কা মারলে ওটা নিরাপদে সরে যাবে? চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত এক বিজ্ঞান কংগ্রেসে, বিজ্ঞানীরা ঠিক এই দুটি প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। প্রথমে গ্রহাণু ঘূর্ণন রহস্য সমাধান করা যাক। হয়তো ভাবছেন, সব গ্রহাণুই গোল বলের মতো ঘুরতে ঘুরতে যায়। কিন্তু না। কিছু গ্রহাণু লাটিমের মতো সুন্দরভাবে ঘোরে, আবার কিছু গ্রহাণু মহাকাশে বিশ্রিভাবে ডিগবাজি খেতে খেতে যায়। প্রশ্ন হলো, কেন এই পার্থক্য? জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েনইয়ুয়ান জৌ এবং তাঁর দল এই রহস্যের সমাধানে নেমেছিলেন। তাঁরা ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার গায়া মিশনের পুরোনো তথ্যভাণ্ডার ঘেঁটে উত্তরটা খুঁজেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, পুরোটাই একটা ‘টাগ অব ওয়ার’ বা দড়ি টানাটানি খেলার মতো। এখানে দুটি শক্তি কাজ করে। সংঘর্ষ ও অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ। সংঘর্ষ মানে মহাকাশে ঘোরার সময় অন্য পাথরগুলো এসে গ্রহাণুকে ধাক্কা মারে। এই ধাক্কায় গ্রহাণুটি টালমাটাল হয়ে যায়, অর্থাৎ বিশৃঙ্খলভাবে ঘুরতে শুরু করে। আর অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ মানে গ্রহাণুর ভেতরের পদার্থগুলো এই টালমাটাল অবস্থাকে ঠিক করার চেষ্টা করে। অর্থাৎ এর ঘূর্ণনকে মসৃণ করতে চায়। এই দুই শক্তির লড়াইয়ের ফলেই গ্রহাণুদের মধ্যে একটা বিভাজন রেখা তৈরি হয়। মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যে গ্রহাণু যত দ্রুত ঘোরে, সেটা ধাক্কা খেলে টালমাটাল হওয়ার সম্ভবান তত কম থাকে। কিন্তু যেগুলো ধীরে ঘোরে, সেগুলো সামান্য ধাক্কাতেই ডিগবাজি খেতে শুরু করে। এছাড়া, সূর্যের আলোও একটি কারণ! সূর্যের আলোও এই ঘোরার পেছনে সূক্ষ্ম ভূমিকা রাখে। গ্রহাণুর যে পাশটা সূর্যের দিকে থাকে, তা দিনে গরম হয় এবং রাতে ঠান্ডা। এই গরম হয়ে ঠান্ডা হওয়ার সময় এটি মহাকাশে সামান্য বিকিরণ ছড়ায়। এই বিকিরণগুলো একেকটা ‘মাইক্রোস্কোপিক ধাক্কার মতো কাজ করে। মডেলটি পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা বেনু নামে এক নামকরা গ্রহাণুকে বেছে নেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওসাইরিস-রেক্স মিশন বেনুর কাছে গিয়েছিল। যেগুলো লাটিমের মতো মসৃণভাবে ঘোরে, সেগুলোর ক্ষেত্রে এই ধাক্কা একই দিকে কাজ করে। ফলে ওগুলোর ঘোরার গতি ধীরে ধীরে বদলে যায়। কিন্তু যারা ডিগবাজি খাচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ধাক্কাগুলো একেকবার একেক দিকে লাগে এবং একে অপরকে বাতিল করে দেয়। ফলে তারা ওই বিশৃঙ্খল অবস্থাতেই আটকে থাকে। এই গবেষণা প্রমাণ করে, বেশিরভাগ গ্রহাণু আস্ত পাথরের খণ্ড নয়! বরং এগুলো হলো ইটের স্তূপের মতো। অর্থাৎ, এগুলো আলগা পাথর, বালি আর ধুলোবালি দিয়ে তৈরি। শুধু মহাকর্ষের টানে কোনোমতে একসঙ্গে লেগে আছে। পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য এ তথ্যটি খুবই জরুরি। কারণ, একটি শক্ত পাথরকে ধাক্কা মারলে যা হবে, একটি আলগা ইটের স্তূপকে ধাক্কা মারলে তার প্রতিক্রিয়া হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এবার দ্বিতীয় প্রশ্নে আসা যাক। গ্রহাণুকে ঠিক কোথায় ধাক্কা মারতে হবে? এ উত্তরটি খুঁজেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাহিল মাকাডিয়া এবং তাঁর দল। তাঁরা বলছেন, ভুল জায়গায় একটি ধাক্কা দিলেই সব শেষ! আমরা হয়তো গ্রহাণুটিকে এখনকার মতো সরিয়ে দিলাম, কিন্তু ওই ধাক্কার ফলে সেটি এমন এক পথে চলে যেতে পারে, যা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভয়ংকর। তাঁরা এই বিপদের নাম দিয়েছেন ‘গ্র্যাভিটেশনাল কিহোল’। ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলি। এই ‘কিহোল’ হলো মহাকাশে পৃথিবীর কাছাকাছি থাকা এমন কিছু কাল্পনিক ছোট জায়গা, যেখান দিয়ে কোনো গ্রহাণু উড়ে গেলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ তাকে একটু অন্যভাবে টেনে ধরবে। এই সামান্য টানেই গ্রহাণুটির কক্ষপথ এমনভাবে বদলে যাবে যে, হয়তো ৫০ বা ১০০ বছর পর সেটি ঠিক পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার জন্য ফিরে আসবে! অর্থাৎ, আমরা একটা ‘কসমিক বুমেরাং’ তৈরি করে ফেলব। আমরা বিপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে আমাদের নাতি-নাতনিদের জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনব। তাহলে সমাধান কী? বিজ্ঞানীরা কম্পিউটারে শত শত মিলিয়ন সিমুলেশন চালিয়েছেন। প্রতিটি সিমুলেশনে তাঁরা ধাক্কার গতি, কোণ এবং সময় একটু একটু করে বদলে দেখেছেন। কোন ধাক্কার ফলে গ্রহাণুটি ওই ভয়ংকর কিহোলে ঢুকে পড়তে পারে, তাও হিসাব করেছেন। আর এই গবেষণার ফলে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, গ্রহাণুর গায়ে আঘাত করার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকরী জায়গা কোথায়। মডেলটি পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা বেনু নামে এক নামকরা গ্রহাণুকে বেছে নেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওসাইরিস-রেক্স মিশন বেনুর কাছে গিয়েছিল। গ্রহাণুটির নিখুঁত মানচিত্রও বানিয়েছে এবং এর মাটি ও পাথর নিয়েও এসেছে পৃথিবীতে। তাই বেনু সম্পর্কে আমরা খুব ভালোভাবে জানি। সবচেয়ে ভালো খবর হলো, এই বিশ্লেষণ করার জন্য প্রতিবার গ্রহাণুর কাছে মহাকাশযান পাঠানোর দরকার নেই। পুরোনো হিসাবে দেখা গিয়েছিল, বেনুর পথে এমন কিছু ‘কিহোল’ আছে, যা বাইশ শতকের কোনো এক সময় একে পৃথিবীর দিকে ঠেলে দিতে পারে। রাহিলের দল ওসাইরিস-রেক্স থেকে পাওয়া নিখুঁত তথ্য ব্যবহার করে বেনুর জন্য একটি ‘ইমপ্যাক্ট ম্যাপ’ তৈরি করেন। এই ম্যাপে টার্গেট চিহ্নের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে, ঠিক কোন জায়গাগুলোতে ধাক্কা মারলে বেনু নিরাপদে সরে যাবে এবং ভবিষ্যতে আর ফিরে আসবে না। সবচেয়ে ভালো খবর হলো, এই বিশ্লেষণ করার জন্য প্রতিবার গ্রহাণুর কাছে মহাকাশযান পাঠানোর দরকার নেই। যদি হাতে সময় কম থাকে, তবে পৃথিবী থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেও এই ম্যাপের একটি প্রাথমিক ধারণা পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ, এই দুটি গবেষণা মিলিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য একটি সত্যিকারের নকশা তৈরি করে ফেলেছেন। সূত্র: স্পেস ডটকম






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply