Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » জাপানের টোকিওর শক্তিশালী রেল নেটওয়ার্ক




জাপানের টোকিওর শক্তিশালী রেল নেটওয়ার্ক নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন প্রতিনিয়তই জাপানের অন্যান্য অঞ্চল থেকে প্রচুর মানুষ এসে ভিড় করছে টোকিও মহানগরীতে। টোকিওর এ টানা সম্প্রসারণের মূল অনুঘটক হিসেবে নগরীটির রেল অবকাঠামোকে চিহ্নিত করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। জাপানের মোট বাসিন্দা সংখ্যা ১২ কোটির কিছু বেশি। এর মধ্যে পৌনে ৪ কোটির বসবাস রাজধানী টোকিওতে। জাপানের রাজধানী শহরটিই এখন হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনবহুল মহানগরী। নগরীটির সম্প্রসারণ এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়তই জাপানের অন্যান্য অঞ্চল থেকে প্রচুর মানুষ এসে ভিড় করছে টোকিও মহানগরীতে। টোকিওর এ টানা সম্প্রসারণের মূল অনুঘটক হিসেবে নগরীটির রেল অবকাঠামোকে চিহ্নিত করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।

তাদের ভাষ্যমতে, রেল নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ টোকিওর পরিধি বাইরে দিকে ছড়িয়ে দিয়েছে, ফলে গ্রামীণ অঞ্চল থেকে আরো বেশি মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। আবার এ রেল অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগের অভাব হয়নি কখনোই। বড় ধরনের বিনিয়োগ হয়েছে শহরটির উন্নয়নে গৃহীত চলমান পরিকল্পনায় রেলওয়ে ও নগর পুনর্গঠন প্রকল্পেও। বর্তমানে সেখানে টোকিও থেকে নাগোয়া পর্যন্ত সংযোগ স্থাপনে নির্মাণ করা হচ্ছে সুপার ফাস্ট লিনিয়ার চুও শিনকানসেন ম্যাগলেভ লাইন। এটি চালু হলে নাগোয়া থেকে টোকিওর দূরত্ব নেমে আসবে মাত্র ৪০ মিনিটে। টোকিওর কেন্দ্র থেকে রেললাইন ধরে নগরীর বাইরের দিক পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অনেকগুলো আবাসিক এলাকা। এসব এলাকা হয়ে উঠেছে জাপানের গ্রামীণ এলাকা থেকে উঠে আসা মানুষের বাসস্থল। রাজধানী ও এর আশপাশের অঞ্চলে এখন বসবাস করছে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। ভারতের দিল্লি ও চীনের সাংহাইয়ের চেয়েও অনেক বেশি মানুষ বসবাস করছে টোকিওতে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে যথাক্রমে দিল্লি ও সাংহাই। জনসংখ্যার ঘনত্বকে কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বৃহত্তর টোকিও অঞ্চল। আবার রেল অবকাঠামোকে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্রমাগত শক্তিশালী করার মাধ্যমে এ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার যোগাযোগ চাহিদাকেও মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। টোকিও ও পার্শ্ববর্তী প্রিফেকচারগুলোর মধ্যে চলাচল ও যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এ অঞ্চল এখন রূপ নিয়েছে একটি ঐক্যবদ্ধ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অঞ্চল হিসেবে। এ বিষয়ে জাপানের মেইজি ইউনিভার্সিটির এমেরিটাস অধ্যাপক হিরো ইচিকাওয়া বলেন, ‘রেলওয়ে নেটওয়ার্কই টোকিওকে বিশ্বের বৃহত্তম মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলেছে। অন্য কোনো দেশে এ ধরনের অগ্রসর ও সমন্বিত রেল নেটওয়ার্ক দেখা যায়নি।’ চলতি শতকের শুরু থেকেই টোকিও সেন্ট্রাল অঞ্চলে বসবাসের জন্য ভিড় করা জাপানির সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে জাপানের রাজধানী শহরটি এবং এর পার্শ্ববর্তী কানাগাওয়া, চিবা ও সাইতামা প্রিফেকচার নিয়ে গঠিত বৃহত্তর টোকিও অঞ্চল ভেতর ও বাইরে উভয় দিকেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। জাপানে ইবারাকি প্রিফেকচারের সুকুবা সিটির সুকুবা স্টেশনে (সুকুবা এক্সপ্রেস বা টিএক্স লাইন) প্রতিদিন সকাল ৭টার পর টোকিওমুখী যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। সুকুবা ও টোকিওর আকিহাবারার মধ্যে চলাচলকারী টিএক্স ট্রেন ধরার জন্য এসে জড়ো হন অসংখ্য মানুষ। ট্রেনটিতে যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট। ২০০৫ সালে চালু হওয়া ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লাইন রেলযোগাযোগবিহীন এলাকাগুলোর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। লাইনটিকে ঘিরে গড়ে ওঠে নতুন সুলভ আবাসন প্রকল্প। সপরিবারে এ অঞ্চলে এসে বসবাস করতে শুরু করে অনেক মানুষ। এর ধারাবাহিকতায় গত এক দশকে সুকুবার জনসংখ্যা বেড়েছে ১৭ শতাংশ। এখানকার বহু বাসিন্দা কাজ করেন টোকিওতে। প্রতিদিন টিক্স লাইন ধরে সুকুবা থেকে টোকিওতে যাতায়াত করেন তারা। টিএক্স লাইনের আশপাশে টোকিও ও প্রতিবেশী চার প্রিফেকচারের কয়েকটি মিউনিসিপ্যালটি সাম্প্রতিক সময়ে জনসংখ্যায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছে। এর মধ্যে কানাগাওয়া, চিবা ও সাইতামা প্রিফেকচারের অবস্থান টোকিওর পাশেই। আর ইবারাকি প্রিফেকচারের অবস্থান টোকিওর সীমানা থেকে দূরে। এগুলোর মধ্যে সাম্প্রতিক সময় চিবা প্রিফেকচারের নাগারেয়ামা মিউনিসিপ্যালটির জনসংখ্যায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে সুকুবা। সেখানে জনসংখ্যা বেড়েছে ১৭ শতাংশ। সাইতামার ইয়াশিও এবং ইবারাকির মোরিয়া ও সুকুবামিরাইয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হার প্রায় ৯ শতাংশ। একটি প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, টিএক্স লাইনকে আকিহাবারা থেকে টোকিও স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। টোকিও মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্টের নির্মীয়মাণ একটি নতুন সাবওয়ে লাইনের সঙ্গে যুক্ত হবে এটি। টোকিওর রেল নেটওয়ার্কে এ ধরনের ধারাবাহিক উন্নয়ন আগামী দিনগুলোয়ও চলমান থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রেল অবকাঠামোর এ ধারাবাহিক সম্প্রসারণের ফলে টোকিও নগরীতে দিনে ও রাতের জনসংখ্যার বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এ দুয়ের মধ্যে ব্যবধানও প্রতিনিয়ত কমে আসছে। দেশটির সর্বশেষ জাতীয় আদমশুমারীর তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে টোকিওতে দিনে চলাচলকারী জনসংখ্যা টানা বেড়ে চলেছে। ২০২০ সালের মধ্যে এটি প্রায় ১ কোটি ৬৩ লাখে পৌঁছয়, যা রাতের জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখের চেয়ে ২৩ লাখ বেশি। তবে আশির দশকের ইকোনমিক বাবলের সময় জমির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে টোকিওর বাসিন্দাদের মধ্যে শহরতলীতে চলে যাওয়ার এক প্রবণতা তৈরি হয়। ১৯৯৫ সালের মধ্যে টোকিওতে দিন ও রাতের জনসংখ্যার পার্থক্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়। তবে ২০০০ সালের পর থেকে সেন্ট্রাল টোকিওতে আবারো জনসংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে কমতে থাকে দিন ও রাতের জনসংখ্যার পার্থক্য। রেল অবকাঠামো ক্রমেই শক্তিশালী হওয়ায় টোকিও অঞ্চল ও এর আশপাশে আবাসন খাতও বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ২০০২ সালে নগর পুনর্গঠনে প্রণীত এক বিশেষ আইনের মাধ্যমে সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা হয়। এ আইন ভবনের ফ্লোর স্পেস রেশিওর নিয়মকানুন শিথিল করার মতো কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে টোকিও সেন্ট্রালে বেসরকারি খাতের পুনর্গঠন প্রকল্পকে উৎসাহিত করে।। কর্মস্থলের কাছে বসবাসের চাহিদা বাড়ায় টোকিও বে সংলগ্ন এলাকায় অসংখ্য উঁচু কন্ডোমিনিয়াম তৈরি হয়েছে। তবে এর ফলে আবাসন খাতের দামও বেড়েছে। গত এক দশকে জাপানে সামগ্রিক জনসংখ্যা কমলেও টোকিও মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী প্রিফেকচারগুলোয় তা বৃদ্ধি পেয়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়। বিশেষত টোকিওর ২৩টি ওয়ার্ডে। এর মধ্যে চুও ওয়ার্ডে বৃদ্ধির হার সর্বাধিক; ৩৬ শতাংশ। এছাড়া চিয়োদায় ২১ শতাংশ, তাইতোয় ১৪ শতাংশ এবং বুনকিয়ো ওয়ার্ডে ১৩ শতাংশ হারে জনসংখ্যা বেড়েছে। তবে এখনো টোকিও ও পার্শ্ববর্তী প্রিফেকচারগুলোর মধ্যে শিল্প কাঠামো, আর্থিক সক্ষমতা ও নাগরিক সেবায় বৈষম্য বিদ্যমান। দ্রুত সম্প্রসারিত অঞ্চলটিকে ঘিরে ‘অতিরিক্ত কেন্দ্রীভবন ঘটছে’ বলেও সমালোচনাও রয়েছে






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply