বন্য প্রাণী: বাংলাদেশে মহাবিপন্ন প্রাণী শকুনের সংখ্যা বাড়ার আভাস দু'হাজার চৌদ্দ সালের সর্বশেষ শকুন শুমারিতে যে ২৬০টি শকুন পাওয়া গেছে তারা সবাই বাংলা শকুন প্রজাতির। এছাড়া অল্প কিছু সরুঠোঁটি শকুনও আছে। কিন্তু এরাও বিরল, কারণ পাঁচ বছরে একটি শকুনের দেখা মেলে। আইইউসিএন বাংলাদেশের কর্মকর্তা সারোয়ার আলম দীপু বিবিসিকে বলেছেন, এ বছরের শুরুতে করা নতুন শুমারিতে শকুনের প্রজননের অবস্থায় উন্নতির আভাস পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন "রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে যে ৬০ থেকে ৭০টা শকুন আছে, এ বছর আমরা তাদের ১৪টা বাসা পেয়েছিলাম। "তার মধ্যে ১০টা বাচ্চা পেয়েছি আমরা। যেটার প্রজনন হার ৭১%। এটা আমাদের একটা বড় সাফল্য এ বছরের জন্য।" "শেষ সাত বছরে আমরা পাঁচটা শকুন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি, এর বাইরে কোন তথ্য নাই। ফলে শকুন কমে নাই, স্টেবল আছে। তবে পজিটিভ চেঞ্জ হচ্ছে," তিনি বলেন। মি. আলম বলছেন, অক্টোবর মাসে আরেকটি শকুন শুমারি হবে, এরপর ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে শকুনের সংখ্যা কত তা প্রকাশ করা হবে। আইইউসিএন বলছে, শকুন এখন সংস্থাটির লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী। এর মানে হচ্ছে, প্রকৃতি থেকে যদি কোন প্রাণীর মোট সংখ্যার ৯০ শতাংশ হারিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে সেটি রেডলিষ্ট বা লাল-তালিকাভুক্ত প্রাণী হয়। এই মূহুর্তে পুরো বিশ্বে শকুনের মোট সংখ্যা ১১,০০০। অথচ কেবল ভারতীয় উপমহাদেশেই এক সময় চার কোটি শকুন ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ২০০৮-০৯ সালে চালানো শুমারিতে দেখা যায় বাংলাদেশে শকুনের সংখ্যা নেমে এসেছে ১৯৭২ টিতে। দু'হাজার চৌদ্দ সালের শুমারিতে তা আরো কমে দাঁড়ায় ২৬০টিতে। শকুন রক্ষায় সরকারি পদক্ষেপ কি যথেষ্ট? পাখি বিশারদ এবং গবেষকেরা বলছেন, পশু চিকিৎসায় বিশেষ করে গরুর চিকিৎসায় ব্যবহার হওয়া দুটি ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের বহুল ব্যবহারের ফলেই মূলত শকুন প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়া থেকে। এই দুইটি ওষুধ খাওয়া প্রাণীর মাংস খাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে কিডনি বিকল হয়ে মারা যায় শকুন। কারণ শকুন এই ওষুধের বিক্রিয়া হজম করতে পারে না। এদিকে, বাংলাদেশের সরকার ২০১০ সালে পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক, এবং ২০১৭ সালে দেশের দুইটি এলাকায় কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আইইউসিএনের মি. আলম বলেছেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় তারা দেখতে পেয়েছেন, এখনো প্রকৃতিতে ৫১ শতাংশ কেটোপ্রোফেনের উপস্থিতি রয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বিবিসিকে বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে সরকার দেশের সর্বত্র কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধের ব্যবস্থা করবে। তিনি বলেছেন, "বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির সাথে আমরা সরাসরি যোগাযোগ করবো আমাদের বন অধিদপ্তর থেকে, না হয় আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। তাদের ডেকে আবার আমরা বসবো তাদের সাথে, কেন তারা এখনো বন্ধ করছে না।" "এ বছরের মধ্যেই আমরা বন্ধ করতে পারবো ইনশাল্লাহ, " বলেন তিনি। শকুন রক্ষায় দুটি ওষুধ নিষিদ্ধ করা ছাড়াও সরকার ২০১৩ সালে জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি গঠন করে। দু'হাজার চৌদ্দ সালে দেশের দুটি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথমটি সিলেট, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশ, এবং দ্বিতীয়টি খুলনা, বরিশাল এবং ঢাকা বিভাগের কিছু অংশকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া আইইউসিএনের সাথে সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ২০১৫ সালে শকুনের প্রজননকালীন সময়ের জন্য দুইটি ফিডিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। একটি রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এবং অপরটি সুন্দরবনে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শকুনের সংখ্যা বাড়ছিল না। ক্যাপটিভ ব্রিডিং বা কৃত্রিম প্রজনন পাখি বিশারদ ইনাম আল হক মনে করেন, দেশে এখুনি শকুনের কৃত্রিম প্রজননের কথা ভাবা দরকার সরকারের। সেজন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগও করতে হবে। তিনি বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করছিলেন এভাবে, "ক্যাপটিভ ব্রিডিং, মানে শকুনের বাসা থেকে ডিম চুরি করে আনতে হবে। ও ডিম পাড়লো, আপনি সরিয়ে আনলেন, তখন ও আরেকটা ডিম পাড়বে। নইলে একটাই পাড়বে এক বছরে। কারণ একটা বাচ্চার বেশি সে বাঁচাতে পারে না। ওই ডিমটা সরিয়ে এনে ইনকিউবেটরে রেখে বাচ্চা বড় করলেন, তাকে পালতে হবে।" মি. হক বলছেন, এ প্রক্রিয়া ব্যয় সাপেক্ষ। তিনি বলেন "কারণ ওই বাচ্চাকে অনেক বড় করতে হবে (প্রকৃতিতে) ছাড়ার আগে। শকুন বাঁচাতে হলে আমাদের ক্যাপটিভ ব্রিডিংয়ে যেতে হবে, এবং সেজন্য টাকা দিতে হবে সরকারকে। "পাঁচ কোটি টাকা দিলেই কিন্তু বাংলাদেশে ক্যাপটিভ ব্রিডিং প্রোগ্রাম শুরু হতে পারে। বিনিয়োগ করলেই না আমরা শকুনের সংখ্যা বাড়াতে পারবো। কারণ শকুনের সংখ্যা ধীরে বাড়ে এবং ধীরে কমে।" শকুনকে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়, কারণ এরা মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে বেঁচে থাকে। এবং এর মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবেই বহু জীবাণু ধ্বংস করে এরা। গবেষকেরা বলেছেন, শকুনের পাকস্থলী অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ বহু রোগের জীবাণু হজম করে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারে।
Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
»Unlabelled
» বন্য প্রাণী: বাংলাদেশে মহাবিপন্ন প্রাণী শকুনের সংখ্যা বাড়ার আভাস
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: