Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের স্থপতি যেভাবে জার্মানির ন্যুরেমবার্গে ফাঁসির দড়ি এড়ালেন




দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের স্থপতি যেভাবে জার্মানির ন্যুরেমবার্গে ফাঁসির দড়ি এড়ালেন

হিটলারের সঙ্গে আলবার্ট স্পিয়ার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নাৎসি জার্মানির যুদ্ধাপরাধের বিচার হয় জার্মানির ন্যুরেমবার্গে | ছবি- অ্যালামি নুরেমবার্গ ট্রায়ালে স্পিয়ার জোর দিয়েছিলেন যে হলোকাস্ট বা ইহুদিদের গণহত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তবে, ১৯৭১ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ এরিখ গোল্ডহাগেন প্রমাণ পান যে স্পিয়ার ১৯৪৩ সালের অক্টোবরে নাৎসি নেতাদের একটি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে এসএস প্রধান হাইনরিখ হিমলার প্রকাশ্যে 'ইহুদি জনগণের নির্মূল' সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নাৎসি জার্মানির যুদ্ধাপরাধের বিচার হয় জার্মানির ন্যুরেমবার্গে। সেখানে হিটলারের ঘনিষ্ঠ স্থপতি ও যুদ্ধ উৎপাদনমন্ত্রী আলবার্ট স্পিয়ার মৃত্যুদণ্ড এড়ালেও ইতিহাসে রয়ে গেলেন বিতর্কিত এক চরিত্র হিসেবে। ১৯৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর দশজন নাৎসি কর্মকর্তা ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। কিন্তু হিটলারের একান্ত সহযোগী স্পিয়ার নিজের কৌশলী আত্মপক্ষসমর্থনের মাধ্যমে বেঁচে যান। আদালতে তিনি হিটলারের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে নাৎসি অপরাধের দায় স্বীকার করেন— আর এটিই ছিল তার ‘বেঁচে থাকার কৌশল’। স্পিয়ার ছিলেন হিটলারের প্রিয় স্থপতি। তার ডিজাইন করা ন্যুরেমবার্গের ‘ক্যাথেড্রাল অব লাইট’ হয়ে উঠেছিল নাৎসি প্রোপাগান্ডার প্রতীক। পরে তিনি জার্মানির যুদ্ধ উৎপাদন মন্ত্রী হন এবং কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের বন্দিসহ লাখ লাখ শ্রমিককে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করেন অস্ত্র উৎপাদনে। নুরেমবার্গ ট্রায়ালে স্পিয়ার তার অন্যান্য সহ-অভিযুক্তদের মতো কেবল 'ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ পালন' করার অজুহাত দেননি। বরং তিনি তার অপরাধের জন্য 'সামষ্টিক দায়িত্ব' স্বীকার করে নেন, যা ছিল এক অত্যন্ত চতুর কৌশল। এই কৌশলের ফলে তিনি সর্বোচ্চ শাস্তি এড়িয়ে যান এবং ২০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। কারাগারে ২০ বছর কাটানোর পর ১৯৬৬ সালে মুক্তি পেয়ে স্পিয়ার প্রকাশ করেন তার আত্মজীবনী ‘ইনসাইড দ্য থার্ড রাইখ’। সেখানে নিজেকে তিনি দেখান এমন এক প্রযুক্তিবিদ হিসেবে যিনি নিজ কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত। ১৯৭০ সালে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পিয়ার বলেন, ‘আমি এমন এক সমাজে বড় হয়েছি যেখানে আমাকে ভাবতে শেখানো হয়নি, শুধুই আদেশ মানতে শেখানো হয়েছে।‘ নুরেমবার্গ ট্রায়ালে স্পিয়ার জোর দিয়েছিলেন যে হলোকাস্ট বা ইহুদিদের গণহত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তবে, ১৯৭১ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ এরিখ গোল্ডহাগেন প্রমাণ পান যে স্পিয়ার ১৯৪৩ সালের অক্টোবরে নাৎসি নেতাদের একটি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে এসএস প্রধান হাইনরিখ হিমলার প্রকাশ্যে 'ইহুদি জনগণের নির্মূল' সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। স্পিয়ারের জীবনীকার গিট্টা সেরেনি পরে মন্তব্য করেন যে, তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন কি না তাতে কিছু যায় আসে না— তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং স্পিয়ারকে হিমলারের বক্তব্য সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। অর্থাৎ, তিনি জানতেন। অনেক গবেষকের মতে, স্পিয়ারের অনুশোচনা ছিল আত্মরক্ষার মুখোশ। প্রমাণ পাওয়া গেছে, ১৯৪৩ সালে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে হাইনরিখ হিমলার ইহুদিদের গণহত্যার কথা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন—যেখানে স্পিয়ার উপস্থিত ছিলেন বা অন্তত জানতেন কী ঘটছে। ১৯৮১ সালে লন্ডনে তার গোপন প্রেমিকার সাথে থাকার সময় স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। স্পিয়ারের জীবনীকার হাইকে গোরটেমেকার বলেন, তার মৃত্যুর পর সবাই জানতে পারে যে তিনি 'দ্বৈত জীবন' যাপন করতেন। তার স্ত্রী বা সন্তানরা কেউ এই সম্পর্ক সম্পর্কে জানতেন না। গোরটেমেকারের মতে, এটিই ছিল 'সাধারণ স্পিয়ার'-এর চরিত্র। আজ তার স্থাপত্যের বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু ন্যুরেমবার্গের অসমাপ্ত ভবনগুলো ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়ের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে—একজন স্থপতির কৃতিত্ব নয়, বরং তার নৈতিক ব্যর্থতার স্মারক হিসেবে। বিবিসি অবলম্বনে






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply