১৪৯২ সালেকলম্বাস আমেরিকায় না পৌঁছালে কেমন হতো বিশ্বের ইতিহাস
১৪৯২ সাল। অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস তখন এক দুঃসাহসিক স্বপ্ন নিয়ে পশ্চিমের অজানা সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করলেন। তাঁর আশা ছিল একটাই, চীন ও আজকের দক্ষিণ এশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য একটি সহজ ও নতুন পানিপথ খুঁজে বের করা। কিন্তু সাগরের বুকে চলতে চলতে তাঁর স্বপ্নের পথে বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়াল একটি অচেনা ভূখণ্ড। যা আজকের আমেরিকা মহাদেশ। গন্তব্যে পৌঁছানোর বদলে, তিনি হঠাৎ করে ক্যারিবীয় অঞ্চলে এসে নামলেন। এভাবেই তিনি ভুল পথে গিয়েও ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন ভুলবশত এক নতুন ভূখণ্ডের খোঁজ দিয়ে। অনেকে মনে করেন, কলম্বাসই প্রথম ইউরোপীয়, যিনি পশ্চিম গোলার্ধে পা রেখেছিলেন। কিন্তু আসল সত্যটা হলো, কলম্বাসেরও প্রায় ৫০০ বছর আগে ভাইকিংসরা নিউফাউন্ডল্যান্ডে অর্থাৎ উত্তর আমেরিকায় এসে পৌঁছেছিল। তবে এখানে একটি বড় পার্থক্য হলো ভাইকিংসরা সেখানে কোনো বড় বসতি বা উপনিবেশ তৈরি করেনি। অন্যদিকে কলম্বাসের খোঁজের পরই ইউরোপীয়রা বিশাল আকারে পশ্চিম গোলার্ধে আসতে শুরু করে। উপনিবেশ তৈরি করে। তাহলে এবার ভাবো, যদি কলম্বাসের এই সমুদ্রযাত্রা ব্যর্থ হতো? ধরো, যদি তাঁর জাহাজ মাঝপথে ডুবে যেত অথবা পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছানোর আগেই ক্রুরা তাঁকে ফিরে যেতে বাধ্য করতেন, তাহলে আজকের ইতিহাস কেমন হতো? ইউরোপীয়রা আমেরিকায় পৌঁছানোর অনেক আগেই, অন্তত ২৩ হাজার বছর আগে আদিবাসীরা এই মহাদেশে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে ইউরোপীয়দেরও খুব বেশি দেরি হয়নি। ইতিহাসবিদেরা একমত যে কলম্বাস যদি পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছাতে ব্যর্থ হতেন, তবে ইউরোপের অন্য কোনো অভিযাত্রী খুব দ্রুতই সেখানে পৌঁছে যেতেন। নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ফেলিপ ফার্নান্দেজ আর্মেস্টো বলেন, ১৪৮০ সালে তারা বুঝেছিল আটলান্টিক মহাসাগরের অনুসন্ধান একটি লাভজনক কাজ। চিনি, মাছ, স্বর্ণ, দাস ও হাতির দাঁতের মতো পণ্য থেকে সে সময় প্রচুর লাভ হতো। তাই দূরবর্তী কোনো উপকূলে অর্থাৎ আমেরিকায় ইউরোপীয়দের পৌঁছানো ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। তবে কলম্বাসের বদলে কে পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছাত এবং তারপর কী ঘটত, তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে বিতর্ক আছে। ইতিহাসের অধ্যাপক জিওফ্রে সিমকক্স মনে করেন, স্পেন সম্ভবত তার প্রতিবেশী পর্তুগালের কাছে সুযোগ হারাত। অধ্যাপক সিমকক্স বলেন, ‘স্পেন যদি আবার চেষ্টা না করত, তবে সমুদ্রযাত্রাটি পর্তুগালই করত।’ পর্তুগাল ১৫ শতকের শুরু থেকেই আফ্রিকার উপকূল ধরে যাত্রা করছিল। সেখানে তারা আজোরেস ও মাদেইরার মতো দ্বীপগুলোতে উপনিবেশ স্থাপন করে আটলান্টিকে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছিল। পিনজোন ভাইয়েরা কলম্বাসের অভিযানে ‘নিনা’ ও ‘পিন্টা’ জাহাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কলম্বাস ব্যর্থ হলেও যদি এ দুই ভাই পরে সফলভাবে যাত্রা করতে পারতেন, তাহলে কিছু জায়গার নামকরণ হয়তো তাঁদের নামেই করা হতো যদি কলম্বাস ব্যর্থ হতেন, তাহলে পর্তুগালের রাজপরিবার পরবর্তী আটলান্টিক সমুদ্রযাত্রা খুব দ্রুত শুরু করে দিত। পর্তুগালের রাজা স্প্যানিশদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভালোভাবেই জানতেন এবং স্পেনকে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে আটকাতে তিনি দ্রুত উদ্যোগ নিতেন। তবে পর্তুগাল সহজে স্পেনকে পরাজিত করতে পারত কি না, তা নিয়ে মতবিরোধ আছে। সম্ভবত এরপরও স্প্যানিশরাই অভিযান চালাত। কারণ, বায়ুপ্রবাহের সুবিধার দিক থেকে দেখতে গেলে, ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জই ছিল যাত্রা শুরু করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। যদি একজন পর্তুগিজ অভিযাত্রী সবার আগে পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছাতেন, তাহলে অনেক ঘটনাই অন্য রকম হতে পারত। গবেষক হান্টার মনে করেন, ১৪৯৪ সালের টর্ডেসিলাস চুক্তি, যা আটলান্টিক মহাসাগরের নতুন রাজ্যগুলোকে স্পেন ও পর্তুগালের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিল, তা আর ঘটত না। ১৬ শতকে হার্নান কর্টেসের অ্যাজটেক সাম্রাজ্য ও ফ্রান্সিসকো পিজারোর ইনকা সাম্রাজ্য দখল করার ঘটনা হয়তো ঘটত না। কারণ, তাঁরা দুজনেই স্পেনের সমর্থিত অভিযাত্রী ছিলেন। যদিও পর্তুগালের অন্য কোনো ব্যক্তি সম্ভবত একই ধরনের কাজ করতেন। তবে অধ্যাপক ফার্নান্দেজ আর্মেস্টো মনে করেন, যদি স্পেনই শেষ পর্যন্ত সবার আগে পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছাত, তাহলে ইতিহাসে খুব বেশি পার্থক্য হতো না। যদি একজন পর্তুগিজ অভিযাত্রী প্রথমে আমেরিকায় পৌঁছাতেন, তাহলে পশ্চিম গোলার্ধে পর্তুগিজ ভাষা আজকের তুলনায় আরও বেশি প্রচলিত হতো। এ ছাড়া যদি কলম্বাস পশ্চিম গোলার্ধে পৌঁছাতে ব্যর্থ হতেন, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকত না যে তাঁর নাম আমেরিকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ত না। হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া রাজ্য ও কলম্বিয়া দেশটি তাঁর নামে রাখা হতো না। তবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার স্থানগুলোর নামকরণ এখনো একজন ইউরোপীয় অভিযাত্রীর নামেই হতে পারত। পিনজোন ভাইয়েরা কলম্বাসের অভিযানে ‘নিনা’ ও ‘পিন্টা’ জাহাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কলম্বাস ব্যর্থ হলেও যদি এ দুই ভাই পরে সফলভাবে যাত্রা করতে পারতেন, তাহলে কিছু জায়গার নামকরণ হয়তো তাঁদের নামেই করা হতো। কারণ, এ দুই ভাই ছিলেন খুবই দক্ষ নাবিক। যদি কলম্বাসের বদলে পিনজোন ভাইয়েরা আমেরিকার প্রথম খোঁজ পেতেন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী হয়তো পিনজোনিয়া হতো। গবেষকেরা মনে করেন, কলম্বাস আসুক বা অন্য কোনো ইউরোপীয়রা আমেরিকায় পৌঁছালে এখানকার আদিবাসীদের জীবনে যে ভয়াবহ বিপর্যয় আসত, তা এড়ানো যেত না। ইউরোপীয়রা তাদের সঙ্গে মারাত্মক সব রোগ নিয়ে এসেছিল, যা আদিবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি উপনিবেশ স্থাপনের জন্য তারা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল, তাতে আদিবাসীদের জীবন ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সূত্র: লাইভ সায়েন্সSlider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: