লতা মঙ্গেশকার: বিষ প্রয়োগ, প্রেম-বিয়ে, জীবনের যে ৫টি দিক কম-বেশি অজানা কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকার গতকাল ৬ই ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। লতা মঙ্গেশকার তার প্রায় সাড় সাত দশকের দীর্ঘ কেরিয়ারে ভারতের ৩৬টি ভাষায় প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়েছেন। তার জীবনের এমন দিক নেই যেখানে গণমাধ্যম এবং গবেষকদের মনোযোগের আলো পড়েনি।
তবু কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়েছে আপেক্ষাকৃত কম। তেমনই কয়েকটি দিক সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। বিষ খাওয়ানো হয়েছিল লতা মঙ্গেশকারকে ইন্টারভিউ করার পর লেখক নাসরিন মুন্নি কবির একটি বই লিখেছিলেন। * অভিনয় থেকে সঙ্গীতে এসে যেভাবে কিংবদন্তী হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর সাক্ষাৎকারে একটি গানের রেকর্ডিংয়ের কথা বলতে গিয়ে লতা বলেছিলেন তার ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল যার জেরে তিনি তিন মাস বিছানায় ছিলেন।। "১৯৬২ সালে আমি এক মাস অসুস্থ ছিলাম। আমার তলপেটের এক্স-রে করানো হয়, এবং বলা হয় যে আমাকে অল্প অল্প করে বিষ দেয়া হচ্ছিল। আমার রান্না করতে যে লোক, সে দিয়েছিল বিষ। ওইদিনই সেই চাকর বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, যাওয়ার আগে পয়সাও নেয়নি।" তিনি আরো বলেন, "তারপর আমরা ভাবলাম তাকে নিশ্চয়ই আমাদের বাড়িতে কেউ পাঠিয়েছে। আমরা জানি না সে কে ছিল। আমি তিন মাস শয্যাশায়ী ছিলাম।" "তখন মাজরুহ সাহেব (গীতিকার মাজরুহ সুলতানপুরী) আমাকে সাহায্য করলেন। রোজ সন্ধ্যায় তিনি আমাদের বাড়ি আসতেন, এবং তিন মাস পর্যন্ত সেটা তিনি করেছেন। আমি যা খেতাম, সবাই একই খাবার খেত," বলেছিলেন তিনি। সুরের দুনিয়ায় লতা মঙ্গেশকার সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু শুরুর জীবনে তাকে বহু লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তার আসল নাম কী? লতা মঙ্গেশকার জন্ম থেকে লতা ছিলেন না। জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল হেমা। লতা নামটি এসেছে তার বাবার একটি নাটক থেকে। ওই নাটকে তিনি লতিকা নামে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তখন থেকে সবাই তাকে লতা নামে ডাকতে শুরু করেন, এবং তিনি ক্রমে হেমা থেকে লতা হয়ে যান। তার বাবা পণ্ডিত দীননাথ মুঙ্গেশকার নিজে ছিলেন একাধারে গায়ক, নাট্যকার এবং সুরকার। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে লতা ছিলেন সবার বড়। তার ভাইবোনেরা সবাই সঙ্গীতাঙ্গনে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। লতা মঙ্গেশকার নিজের জীবন সম্পর্কে বলেছেন, "আমি নিজেকে তৈরি করেছি। আমি লড়তে শিখেছি। আমি কোনদিন কাউকে ভয় পাইনি। কিন্তু জীবনে আমি যা পেয়েছি, তা যে পাব সেটা কোনদিন ভাবিনি।" কেন বিয়ে করেন নি? লতা মঙ্গেশকারের ব্যক্তিগত জীবন, বিশেষ করে তার প্রেম ও বিয়ে নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। তার জীবদ্দশায়ও এসব বিষয় আলোচনায় এসেছে। তিনি উত্তরও দিয়েছেন কিছু প্রশ্নের। লতা মঙ্গেশকারকে নিয়ে লেখক নাসরিন মুন্নি কবিরের বইয়ে লতার নিজের বয়ানেই রয়েছে কিছু জবাব। তিনি বলেছেন, "আমার বাবা আমার জন্মকুণ্ডলী বা কুষ্ঠি করিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন আমি কল্পনাতীত খ্যাতিমান হব, পুরো পরিবারের দেখভাল করবো এবং আমার কোনদিন বিয়ে হবে না।" তিনি বলেছিলেন, "এটাই জীবন। জন্ম, মৃত্যু আর বিয়ের ওপর কারো হাত নেই। আমি যদি বিয়ে করতাম আমার পুরো জীবন-ই অন্যরকম হত। আমি কোনদিন একাকীত্ব বোধ করিনি। আমি সবসময়ই পরিবারের সাথেই থেকেছি।" কিন্তু কেন তিনি বিয়ে করেননি তা নিয়ে কখনো তার কাছ থেকে কিছু শোনা যায়নি। মোহাম্মদ রফি এবং রাজ কাপুরের সাথে বিরোধ সঙ্গীত কেরিয়ারে পরের দিকে লতা মঙ্গেশকার কিশোর কুমার, মোহাম্মদ রফি, হেমন্ত কুমারসহ সব নামী সঙ্গীতজ্ঞ এবং শিল্পী সঙ্গে গান করেছেন। খুব অল্প বয়সে লতা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সঙ্গীত জগতে। কিন্তু নিজের পছন্দ-অপছন্দ-আপত্তি নিয়ে কখনো চুপ থাকেননি। অন্যের প্রভাব-প্রতিপত্তির তোয়াক্কা করেননি। যেমন, রয়্যালটি ইস্যুতে তিনি তার সময়ের নামী ও গুণী শিল্পী মোহাম্মদ রফি, রাজ কাপুর এবং এইচএমভি কোম্পানির সাথে বিরোধে জড়িয়েছিলেন। ষাটের দশকে সিনেমায় গানের জন্য রয়্যালটি নিতে শুরু করেন লতা। তিনি চাইতেন অন্য সব শিল্পীরাও যেন রয়্যালটি পান। তিনি, মুকেশ এবং তালাত মেহমুদ মিলে একটি সংগঠন তৈরি করেন, এবং রেকর্ডিং কোম্পানি এইচএমভি ও প্রযোজকদের কাছে দাবি জানান যেন সব শিল্পীকে রয়্যালটি দেয়া হয়। কিন্তু তাদের দাবি মানা হয়নি। তখন তিনি এইচএমভির জন্য গান রেকর্ড করা বন্ধ করে দেন। রয়্যালটি ইস্যুতে মোহাম্মদ রফির সাথেও তার বিরোধ শুরু হয়। বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লতা মঙ্গেশকার বলেছিলেন, "রফি সাহেব খুব ক্ষেপে গিয়েছিলেন। আমাকে দেখিয়ে বলেছিলেন 'এই যে রানী বসে আছেন, তাকে বল'।" "তখন আমিও রেগে গিয়ে বললাম আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমি রানী। আপনার সাথে আমি আর গান গাইব না।" মোহাম্মদ রফির সঙ্গে এরপর প্রায় তিন বছর কোনো গান করেননি লতা মঙ্গেশকার। একই ইস্যুতে রাজ কাপুরের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন মিস মঙ্গেশকার, এবং তার সঙ্গে কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। পরে ১৯৭০ সালে রাজ কাপুর আবার তার প্রিয় শিল্পীর কাছে ফেরেন এবং 'ববি' সিনেমায় গান গাওয়ান। বাংলাদেশ ঘিরে স্মৃতি লতা মঙ্গেশকারের গানের বহু সংখ্যক ভক্ত আছেন বাংলাদেশে। যেমন বাংলা গানে তেমনি হিন্দি গানে তিনি বিমোহিত করেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের সাথেও লতা মঙ্গেশকারের কিছু স্মৃতি আছে, যা তিনি নিজেই সামাজিক মাধ্যম টুইটারে শেয়ার করেছিলেন। দুই হাজার উনিশ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বরে লতা মঙ্গেশকার টুইট করে জানিয়েছিলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার ঠিক পরেই তিনি ভারতীয় শিল্পীদের একটি দলের সাথে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আসেন। বলিউড অভিনেতা সুনীল দত্তের সাথে বাংলাদেশে বেশ কিছু কর্মকাণ্ডে অংশ নেন বলে টুইটে উল্লেখ করেন মিস মঙ্গেশকার। সে সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিমানে করে অনেক জায়গায় গিয়েছিলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেছিলেন।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
English News
»
politics
» লতা মঙ্গেশকার: বিষ প্রয়োগ, প্রেম-বিয়ে, জীবনের যে ৫টি দিক কম-বেশি অজানা
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: