Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » দাম্পত্য সম্পর্ক খারাপ চললে আপনি কী করবেন?




দাম্পত্য সম্পর্ক খারাপ চললে আপনি কী করবেন? পরিচয় গোপন রাখতে এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত সবার নাম বদলে দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কিছু বিবাহিত দম্পতি মানসিক ও শারীরিকভাবে পরস্পর এতো বেশি বিচ্ছিন্ন অনুভব করে যে, তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যিকারের তালাকের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। সারা বিশ্বে যুগলরা শোয়ার ঘরে দূরত্ব তৈরি হওয়া নিয়ে কথা বলা এড়িয়ে চলে থাকে, যদিও ওই যুগল এবং বৃহত্তর পরিবারের ক্ষেত্রে এই অবস্থা বাস্তবিক পক্ষে তালাকের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। বিবিসি এ ধরণেরই কিছু যুগলের সাথে যারা "আবেগ শূন্যতা" অনুভব করছেন তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছে এবং থেরাপিস্টদের সাথে এর সমাধানের বিষয়ে জানতে চেয়েছে। বৈবাহিক আবেগ শূন্যতা "সত্যি করে বলতে গেলে আমি আসলে বলতে পারবো না যে আমি বিবাহিত নাকি তালাক প্রাপ্ত," বলছিলেন কামাল (এখানে তার আসল নাম দেয়া হয়নি)। লন্ডনের টেলিযোগাযোগ বিষয়ক কনসালটেন্ট তার স্ত্রী থুরায়ার সাথে ২০ বছর ধরে সংসার করছেন এবং তাদের দুটি ছেলে রয়েছে যাদের বয়সও ২০ বছরের কাছাকাছি। সন্তান জন্মের পর মানসিক সমস্যায় ভোগেন পুরুষরাও

৪৬ বছর বয়সী কামাল একজন সক্রিয় সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক যার ফেসবুকে শত শত ফলোয়ার রয়েছে। তবে নিজের স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্কের বিষয়ে বলতে বলায় তিনি জানান যে, "এতে অনেকটা মন্দা চলছে: প্রগাঢ় ভালবাসা থেকে এটি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধে পরিণত হয়েছে। ঠিক যেমনটা কাজের জায়গায় দুই জন সহকর্মী একে অপরের প্রতি অনুভব করে"। "এটা শুরু হয় যখন আমাদের প্রথম ছেলে জন্মগ্রহণ করে তখন। মনে হতো যে আবেগ এবং যৌন আকর্ষণ জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এর পর থেকে এরকমই চলছে," তিনি বলেন। "সে যখন আলাদা ঘুমাতে চাইতো তখন আমি নানা অজুহাত খুঁজতাম, এমনকি আমাদের ছেলের জন্মের কয়েক মাস পরেও। আমি বলতে থাকতাম যে এটা হয়তো হরমোন বা প্রসব পরবর্তী মেজাজ পরিবর্তনের কারণে হয়েছে।" "আমি অনেক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছি, বিশেষ করে তখন, যখন এটা বেশ সময় ধরে চলছিল। আমাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর, সে হয়তো আমাদের মধ্যে আর কোন ধরণের আবেগময় বা যৌন সম্পর্ক চাইতো না।" কামাল স্মৃতিচারণ করে বলেন কিভাবে একদিন তার স্ত্রী তাকে বলেছিল, "বাচ্চাদের মতো আচরণ বন্ধ করো" যখন সে বলেছিল যে তার রোমান্স দরকার। "যখনই আমি তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতাম, সে বলতো আমার একজন বাবার মতো আচরণ করা উচিত।" "থুরায়া মনে করে যে সে একজন আদর্শ স্ত্রী কারণ সে বাচ্চাদের ও বাসার খেয়াল রাখে এবং পুরো পরিবারকে আঁকড়ে রাখে। আমার মনে হয় একজন মা এবং একজন গৃহিণী হিসেবে সে খুব ভাল করছে কিন্তু সেটা সে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।" অনাকাঙ্ক্ষিত কামালের হতাশা শিগগিরই বাড়তে থাকে। সে নিজেকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করে এবং স দূরে সরে যেতে শুরু করে। সে বাড়ি ফিরে এসে নিজের ঘরে আরাম করতো এবং ফেসবুকের শত শত বন্ধুর সাথে ভার্চুয়াল জগতে সময় কাটাতো। তাদের মধ্যে নারী অনুরাগীর সংখ্যা কম ছিল না যারা তার চিন্তাকে পছন্দ করতো। সে মাঝে মাঝে তার সঙ্গীতের যন্ত্র বাজিয়ে তা ফেসবুক পেইজে পোস্ট করতো। যখন অনেক বেশি "লাইক" আসা শুরু করলো তখন সে "আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে শুরু করলো"। "যা লাইক এবং কমেন্ট দিয়ে শুরু হয়েছিল তা ধীরে ধীরে "রোমান্টিক এবং যৌন সম্পর্কে" পরিণত হতে শুরু করলো," কামাল বলেন। "আমার বিয়েটা প্রাণহীন এবং আমি আবেগিয়ভাবে মৃত অনুভব করার সময় যখন আমার প্রতি আকর্ষণীয় নারীরা আগ্রহ দেখাতো, তখন তা উপেক্ষা করা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়তো।" কামাল নিশ্চিত যে, সে শুধু একা এ ধরণের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না: "মানুষ হয়তো আমায় নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করবে, আমিই একমাত্র নই। আমার মতো আরো অনেকেই আছে- আমার পরিচিত জনদের মাঝেই তাদের সংখ্যা কম নয়।" সে একটি দ্বৈত জীবন গড়ে নিয়েছে, একদিকে সে একজন "আদর্শ বাবা এবং স্বামী" অন্যদিকে সে ছুটির সময়ে "তার ভালবাসার" সাথে দেখা করে। কোন ধরণের অজুহাত না টেনে, সমাজবিজ্ঞানী হামিদ আল হাশিমি মনে করেন কামাল যদি তার "স্ত্রীর সাথে খোলাখুলি আলোচনা করতো যে সে কি চায়" তাহলে সেটি তার জন্য বেশি ভাল হতো। "গুরুত্ব দেয়া না হলে পরিস্থিতি কোথায় যেতে পারে সে বিষয়ে তার স্ত্রীকে জানানো উচিত ছিল," আল-হাশিমি বলেন। "সব সময়ই সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে মাঝামাঝি একটি জায়গা ঠিক করে নেয়া; যা উভয় পক্ষের জন্যই সমঝোতার জায়গা, যা ভুল এবং ক্রমবর্ধমান একাকীত্ববোধকে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে।" আল-হাশিমি জোর দিয় বলেন যে, উভয় পক্ষেরই দোষ রয়েছে।"স্ত্রীরও উচিত নয় বৈবাহিক জীবনের আবেগময় এবং যৌন বিষয়টিকে উপেক্ষা করা- যা খুবই স্বাভাবিক বিষয় এবং যা ভালবাসা ধরে রাখার জন্য জরুরী।" থেরাপিস্ট এবং কাউন্সিলর আমাল আল হামিদ মনে করেন, "আমাদের যা করার ছিল তার সবই করেছি- এধরণের কথা বলা বন্ধ করতে হবে।" "অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা কারো জন্যই সুফল বয়ে আনে না," তিনি বলেন। এর পরিবর্তে তিনি ভাল জিনিস নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন, যেমন আগের স্মৃতি এমন সময় যখন তারা এক সাথে কাজ করে কোন প্রতিবন্ধকতা পার করেছিল।" "প্রত্যেকেরই সম্পর্ক ভাল করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া উচিত। কারণ ইতিবাচকতা সংক্রামক," তিনি বলেন। অপরাধ বোধ মিত্রা এবং রুস্তম-চল্লিশের কোটায় থাকা ইরানের দম্পতি। ২০০৫ সাল থেকে বার্মিংহামে তাদের দুই মেয়ের সাথে বাস করেন তারা। দশ বছর আগে জরায়ুর ক্যান্সারের সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন মিত্রা। যার কারণে একটি স্তন, ডিম্বাশয় এবং জরায়ু হারাতে হয় তাকে। এ অবস্থাকে তাকে গভীরভাবে আঘাত করে তাকে শক্তিহীন এবং বিষণ্ণতায় ডুবিয়ে দিয়েছিল। অস্ত্রোপচার তার জীবন ফিরিয়ে দিলেও তার যৌন জীবন শেষ করে দিয়েছিল, তিনি বলেন, "এখন আমার একমাত্র স্বস্তি শুধু আমার দুই মেয়ে।" যখন তার স্বামী অন্য কোথায় ভালবাসা খুঁজতে শুরু করে তখন সে এটা বিশ্বাসই করতে পারেনি।যখন সে জানতে পারে যে তার স্বামী কী করছে, তখন সে স্বামীকে তার এবং অন্য নারীর মধ্যে যেকোন একজনকে বেছে নিতে বলে। সে তাকেই বেছে নেয় কারণ "সে জানতো যে সে যদি অন্য নারীকে বেছে নেয় তাহলে তাকে তার মেয়েদেরকেও হারাতে হবে।" "যদি আর কোন উপায় থাকতো তাহলে শেষ পর্যন্ত আমি তার পাশে থাকতাম। কারণ বিয়ে ভাল এবং খারাপ-উভয় সময়ের জন্যই। পুরুষদের হয়তো আরো কম স্বার্থপর হতে শিখতে হবে," সে বলে। এখনো, মিত্রা তার স্বামীর চাহিদা মেটাতে পারে না এবং বলে যে এর জন্য সে অপরাধবোধে ভোগে। "সে আমাকে ত্যাগ করবে আমি সেটাও মানতে পারবো না। নারী হিসেবে আমি অনাকাঙ্ক্ষিত অনুভব করা সহ্য করতে পারবো না।" এখন, বই পড়ার মধ্যেই রুস্তম তার সান্ত্বনা খোজার চেষ্টা করে। "কাজ ছাড়া সে অন্য তেমন কিছুই করে না। সে সব সময়ই চুপ থাকে। এমনকি তার মেয়েরাও বলে যে, সে বিরক্তিকর," মিত্রা বলে। বৈবাহিক কাউন্সেলিংয়ের মারাত্মক প্রয়োজন থাকলেও, এশিয়া এবং পশ্চিমা সম্প্রদায়ের মানুষেরা সেটা নিতে চায় না। অর্থনৈতিক সহায়তা ২৯ বছর বয়সী সামার ২০১৫ সালে সিরিয়া থেকে তুরস্কে আসে যেখানে "শরণার্থীর জীবন বিশেষ করে নারী শরণার্থী যাদেরকে প্রায়ই হয়রানির মুখে পড়তে হয়" তার অবসান করতে সে একজন তুর্কি পুরুষকে বিয়ে করে। সে মনে করেছিল যে, বিয়েই হচ্ছে "একমাত্র পরিশীলিত সমাধান"। কিন্তু সে বিস্ময়ের মুখে পড়ে যখন সে জানতে পারে যে তার স্বামীর পরিবার ও সামাজিক অবস্থা তার নিজের তুলনায় অনেক আলাদা। বিবিসিকে সে বলে, "আমার পুরো জীবন বাচ্চাদের খেয়াল রাখা, রান্না করা, পরিষ্কার করা এবং তার(স্বামীর) চাহিদা পূরণেই কেটে যাবে।" এমন একজনকে ব্যক্তিকে যে নিজের অনুমতি ছাড়া "নারী প্রতিবেশীদের সাথেও দেখা করতে যেতে দেয় না" বিয়ে করার একমাত্র কারণ ছিল আর্থিক সহায়তা, যা তার দুই সন্তানকে দেখাশোনার জন্য জরুরী। "যদি আমার অন্য কোন উপায় থাকতো তাহলে তার সাথে আমি একদিনও থাকতাম না। আমার পরিবারের সাথে থাকার সময় আমার সাথে কেউ এমন ব্যবহার করেনি। আমার মতামত, মর্যাদা, অনুভূতির কোন মূল্য নেই এখানে। সে যা চায় তা হলো ইচ্ছানুযায়ী যৌন চাহিদা পূরণ করা।" গোপনে বিবাহিত ইরবিলের রৌজ বলেন, তার ৬০ বছর বয়সী বাবা, ৪৭ বছর বয়সী মায়ের সাথে কয়েক দশক ধরে ঘুমায়নি। তার মা জানে যে, তার বাবা "গোপনে অন্য নারীকে বিয়ে করেছে," কিন্তু পুরো বিষয়টিই সে ঢেকে রাখতে চায়। যদি এটি জানাজানি হয় তাহলে তিনি এ নিয়ে কানাঘুষা সামাল দিতে পারবেন না। "আমার বাবা একজন ধনী মানুষ এবং এ কারণেই ৩০ বছর বয়সী একজন তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে। আমার মা বলিষ্ঠ চরিত্রের এবং আর্থিকভাবে স্বাধীন, কিন্তু সম্মান রক্ষার জন্য তিনি এ নিয়ে কথা বলতে চান না বা তালাক চান না। তিনি তার সম্মান বজায় রাখতে চান," রৌজ বলেন। বছরের পর বছর ধরে তার মা মানসিক যাতনা সহ্য করে গেছে কিন্তু সে এটি গোপন রাখে কারণ সে নিজেকে দুর্বল দেখাতে চান না, রৌজ বলেন। তিনি দেখান যে, তিনি ভাল আছেন এবং সুখী। কিন্তু বাস্তবে সে অনেক দুঃখী। তার মা এ বিষয়ে আইনি সহায়তা নিতেও রাজি হয়নি কারণ সে তার স্বামীর বিয়েকে গোপন রাখতে চায়। ফিরে আসার সম্ভাব্য উপায় কাউন্সিলর আল হামিদ মনে করেন, সম্পর্ক ভাল করতে হলে দুজনেরই সেটি সারিয়ে তোলার জন্য প্রবল ইচ্ছা থাকাটাই একমাত্র উপায়। "যদি তাদের মধ্যে একজনও অন্য জনকে কোণঠাসা করে ফেলেন, আপত্তি তোলেন, তাহলে সেটি শুধু খারাপই হবে। তাদের খোলামেলা কথা বলতে হবে এবং সেসময় শব্দ চয়ন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তা নাহলে তারা পুরো পুরি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।" আল-হামিদ বলেন, অনেক সময় এক পক্ষ শুধু সব কিছু ঠিক করতে চায় কিন্তু অন্য পক্ষ আগের মতোই থাকে এবং পরিবর্তনের যেকোন প্রচেষ্টাকেই ব্যর্থ করে দেয়। যেকোন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে, দুই পক্ষকেই শিখতে হবে যে কিভাবে কোন ঘটনা বাড়তে না দেয়া যায়। তাদের প্রায়ই কথা বলতে হবে, আপত্তিকর কোন শব্দ বলা যাবে না, বলেন আল হামিদ। এমন আচরণ সব সময়ই পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে, তিনি বলেন। "যদি স্বামী তার স্ত্রীকে কোন উপহার দিয়ে অবাক করে না দেয় তাহলে সে কাজটি স্ত্রীকেই প্রথমে শুরু করতে হবে। সবসময় পদক্ষেপের জন্য বসে না থেকে তা শুরু করে দিলে সেটি অনেক বেশি কার্যকর হয়," তিনি বলেন। "সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কখনোই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, চেষ্টা করে যেতে হবে," তিনি বলেন






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply