Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » কৃষ্ণগহ্বরের সংঘর্ষে সত্য হলো আইনস্টাইন-হকিংয়ের পর্যবেক্ষণ




কৃষ্ণগহ্বরের সংঘর্ষে সত্য হলো আইনস্টাইন-হকিংয়ের পর্যবেক্ষণ মহাবিশ্বের অন্যতম রহস্যগুলোর একটি হলো কৃষ্ণগহ্বর। এগুলো আমরা চোখে দেখতে পারি না, কিন্তু এদের শক্তি এত প্রবল যে আলোও সেখান থেকে বের হতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে অনেক কিছুই কেবল তত্ত্বের জগতে থেকে যাবে। কিন্তু সম্প্রতি এক মহাজাগতিক ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো পদার্থবিজ্ঞানের দুই কিংবদন্তি আলবার্ট আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিংয়ের দশকের পুরোনো ভবিষ্যদ্বাণী। ঘটনাটির নাম দেয়া হয়েছে জিডব্লিউ২৫০১১৪। প্রায় একশ কোটি আলোকবর্ষ দূরে দুটি কৃষ্ণগহ্বর একে অপরকে প্রদক্ষিণ করতে করতে অবশেষে ধাক্কা খেয়ে মিশে যায়। এই সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি হয় বিশেষ তরঙ্গ —যা পৃথিবীতে ধরা পড়ে লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি (লিগো) নামের যন্ত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা ও ওয়াশিংটনে অবস্থিত এই দুটি যন্ত্র এত সূক্ষ্ম পরিবর্তন ধরতে পারে, যা একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের চেয়েও হাজার গুণ ক্ষুদ্র।

আইনস্টাইন ১৯১৫ সালে তার আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বে বলেছিলেন, মহাবিশ্বে যখন বিশাল ভর দ্রুত নড়াচড়া করে তখন সৃষ্টি হয় মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। তিনি ধারণা করেছিলেন, এগুলো এতই ক্ষীণ যে কোনো যন্ত্রে ধরা পড়বে না। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রথমবার লিগো এই তরঙ্গ ধরতে সক্ষম হয়। এবারের জিডব্লিউ২৫০১১৪ ঘটনাটি সেই আবিষ্কারকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। গবেষক ম্যাক্সিমিলিয়ানো ইসির নেতৃত্বে পরিচালিত এই পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দুটি কৃষ্ণগহ্বরের ভর ছিল সূর্যের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ গুণ। সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয় একটি নতুন কৃষ্ণগহ্বর, যার ভর সূর্যের ৬৩ গুণ। এই নতুন কৃষ্ণগহ্বর প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০০ বার ঘুরছে—যা মানব কল্পনার বাইরে। ইসি বললেন, ‘প্রথমবারের তুলনায় এবার আমরা অনেক বেশি স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি কীভাবে দুটি কৃষ্ণগহ্বর ধীরে ধীরে কাছাকাছি এসেছে এবং শেষে একত্রিত হয়েছে। এটি আমাদের সময় ও মহাকাশের গতিশীলতা একেবারে নতুনভাবে দেখিয়েছে।’ কৃষ্ণগহ্বর সংঘর্ষ থেকে ঢেউ সৃষ্টি হয়—আইনস্টাইনের এ তত্ব পৃথিবীতে শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া আইনস্টাইন মনে করতেন কৃষ্ণগহ্বরকে পুরোপুরি বোঝার জন্য অসংখ্য ভেরিয়েবল নয়, কেবল দুটি সংখ্যা যথেষ্ট—এর ভর ও এর ঘূর্ণন। একে বলা হয় ‘নো-হেয়ার থিওরেম। জিডব্লিউ২৫০১১৪ থেকে আসা সংকেত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দুটি স্পষ্ট ধ্বনি শনাক্ত করেছেন—একটি মৌলিক সুর ও একটি অতিরিক্ত সুর। এগুলো প্রমাণ করেছে যে সত্যিই নতুন কৃষ্ণগহ্বরকে কেবল ভর ও ঘূর্ণন দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায়। এছাড়া ১৯৭১ সালে স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, দুটি কৃষ্ণগহ্বর একত্র হলে নতুন কৃষ্ণগহ্বরের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল কখনোই কমবে না, বরং সবসময় বাড়বে বা একই থাকবে। একে বলা হয় সারফেস এরিয়া থিওরেম। জিডব্লিউ২৫০১১৪-এর সংকেত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, সংঘর্ষের আগে দুটি কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রফল যোগ করলে যে মান দাঁড়ায়, সংঘর্ষের পর তৈরি কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রফল তার চেয়ে বেশি। এর মানে হকিংয়ের সমীকরণ সরাসরি প্রমাণিত হয়েছে। লিগো যন্ত্রটি তৈরি করার পর থেকে শত শত কৃষ্ণগহ্বর সংঘর্ষ ধরা পড়েছে। কিন্তু এবারের পর্যবেক্ষণ ছিল সবচেয়ে স্পষ্ট ও নির্ভুল। গত দশকে এর লেজার ও আয়নার মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো উন্নত করা হয়েছে, যার ফলে তিনগুণ বেশি নির্ভুলভাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ধরা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত লিগো, ভিরগো (ইতালি) ও কাগরা (জাপান) মিলিয়ে ৩০০টিরও বেশি কৃষ্ণগহ্বর সংঘর্ষ শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে এবারের জিডব্লিউ২৫০১১৪ ঘটনাটি সবচেয়ে নিখুঁতভাবে আইনস্টাইন ও হকিংয়ের ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য প্রমাণ করেছে। এই পর্যবেক্ষণ কেবল একটি বৈজ্ঞানিক সাফল্য নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য পথপ্রদর্শক। চিলির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাকারেনা লাগোস বলেন ‘দ্বিতীয় সুর শনাক্ত হওয়ার মানে আমরা সময় ও মহাকর্ষকে এমনভাবে পরীক্ষা করতে পারছি, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি।’






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply