Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ১৯৯৬ সালে নায়ক সালমান শাহ কে পরিকল্পিত হত্যা তাঁর মা নীলা চৌধুরর দাবী




১৯৯৬ সালে নায়ক সালমান শাহ কে পরিকল্পিত হত্যা তাঁর মা নীলা চৌধুরর দাবীী

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে সালমান শাহর বাসা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটাকে আত্মহত্যা বললেও গত সোমবার ২৯ বছর পরে হত্যা মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ এই সময় ধরে ছেলে হত্যার বিচার চাওয়া সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন। প্রথম আলো : কোনো আলামত দেখে মনে হয়েছিল খুন? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। সেটা তার শরীরেও ছিল। এটা খুন, বোঝাই যাচ্ছিল। প্রমাণও ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠরা পরে তো বলেই দিল কীভাবে খুন করেছে। এটা পরিকল্পিত খুন। সামিরা চিটাগং থেকে লোক এনেছে। এরাই অন্যদের সঙ্গে মিলে ইমনকে খুন করেছে। ওই বিল্ডিংয়ের অনেক ফ্ল্যাট ছিল আজিজ মোহাম্মদের ভাড়া করা। সেখানে তার লোকজন থাকত। ২৯ বছর ধরেই আমি বলে আসছি, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। আরেকটা কথা, তখন সালমানের নিয়মিত শুটিং নিয়ে ব্যস্ততা ছিল। সেগুলো নিয়ে ছেলে খুন হওয়ার আগে আমাদের কথা হয়েছিল। এ ছাড়া আমি এতিমখানা দেব, খুনের আগের দিনও এতিমখানা করার প্ল্যান করছিলাম ছেলের সঙ্গে। সেই ছেলে কেন আত্মহত্যা করবে? আমি মুখস্থ বলে দিতে পারি, আমাদের কাছে সব সাক্ষী আছে। প্রথম আলো: অবশেষে হত্যা মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত... নীলা চৌধুরী: দীর্ঘদিন পরে একটা ভরসার জায়গা তৈরি হলো। মামলার কার্যক্রম এত দ্রুত হয়ে যাবে ভাবিনি। এ জন্য শুকরিয়া। অনুভূতি আর কী বলব। আমার সমস্ত শরীর–মন খালি খালি মনে হচ্ছে। ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছে। ছেলেকে মার্ডার করা হয়েছে, মামলা হচ্ছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে অবশেষে ন্যায়বিচার পাব—এটাই ভালো লাগার কথা। প্রথম আলো : আপনাকে লড়তে হয়েছে ২৯ বছর তাঁর মা নীলা চৌধুরী: এই ২৯ বছর কিছু মানুষ আমাকে খারাপ বলেছে। আমার ছেলেকে খারাপ বলেছে। আমার জন্য ছেলে মারা গেছেন, সেটাও শুনতে হয়েছে আমাকে। লালনপালন করে বড় করে আমি নাকি আমার ছেলেকেই মেরেছি, এটাও আমাকে শুনতে হয়েছে। আমাকেই দায়ী করেছে সামিরা, আজিজ, ডনরা। কিন্তু ২৯ বছর ধরে আমার বিশ্বাস ছিল, আইনে একদিন প্রমাণ হবে এটা খুন। আদালত যেভাবে সোমবার ঘটনাটা উপস্থাপন করেছেন, সেখান থেকে আমাকে যেভাবে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে; সেটা আমাকে মানসিকভাবে শান্তি দিয়েছে। প্রথম আলো: আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা কতটা করতে পারছেন? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: এটাই আমার কাছে মনে হয়েছে ন্যায়বিচার পাচ্ছি। প্রত্যাশা আছে বলেই, ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার পাব। এত দিন যারা এত কথা বলেছে, আমাকে হুমকি দিয়েছে, তাদের বিচার হতেই হবে। প্রথম আলো : আপনাকে কে ভয় দেখিয়েছে? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: এই এক মাস আগেও ডন আমাকে হুমকি দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সামনে যেতে বলেছে। চিন্তা করা যায়, যে আমার ছেলের পিছে পিছে ঘুরত। সাহস পেত না আমাদের সঙ্গে কথা বলার। সেই ডন কত বড় ব্যাপআপ থাকলে আমাকে হুমকি দিতে পারে। প্রথম আলো: এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে মামলার সুরাহা না হওয়ার মূল কারণ কী ছিল বলে মনে করেন? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: এটা আপনারাই, সাংবাদিকেরা, ভাইবোন যাঁরা মিডিয়াতে আছেন তাঁরা ভালো জানেন। আজিজ মোহাম্মদের টাকা দিয়ে; সালমানকে দুশ্চরিত্র, লম্পট; সামিরার সঙ্গে গন্ডগোল, শাবনূরের সঙ্গে প্রেম—এগুলো বানিয়ে বানিয়ে খবরে রটিয়ে ইমনকে পাগল করতে চেয়েছিল। এর পেছনে সেই সময়ের মিডিয়ার একটা বিরাট সিন্ডিকেট কাজ করেছে। তারা চায়নি সত্যটা সামনে আসুক। তারা নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে বিচারপ্রক্রিয়া। প্রথম আলো : ন্যায়বিচার চাওয়ার সময়টা কীভাবে কেটেছে? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: আমরা জানতাম এটা খুন। খুন প্রমাণ করার জন্য আমি কোনো ছাড় দিইনি। ইমন ৯৬-এ মারা যাওয়ার পরে আমি ২০০২-এ হজ করলাম। আমি আল্লাহর কাছে সব সময় ন্যায়বিচার চেয়েছি। আমার সব সময় মনে হয়েছে, আমি বিচার পাব। মরার পরে আমার ছেলেকেও আমি পাব। তাঁর মা প্রথম আলো: যখন শুনলেন হত্যা মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত, তখন সালমান শাহর কোনো কথা বা স্মৃতি মনে পড়ছিল? নীলা চৌধুরী: সব সময় কিছু একটা হলেই সালমান তাঁর বাপকে বলত মিস্টার নেগেটিভ, আর আমাকে বলত নেত্রী। বাসায় বাচ্চাদের মতো থাকত। রাতে ও প্রায়ই আমার কাছে এসে বসত, শুয়ে থাকত, পায়ের কাছে মাথা রাখত। কখনো মাথায় তেল দিত। ওর সংসার নিয়ে কথা বলত। সেখানে অশান্তি ছিল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলত। সামিরার কথা বলত, সে সারা দিন কষ্ট করে আসে, ক্লান্ত থাকে, তখন সামিরা তাকে অনেক বাজে কথা বলত। সে আমাকে এটাও বলছিল যে সামিরা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি রাগ করে বলছিলাম ‘ছেড়ে দে’। তখন ও বলছিল, ‘আম্মা, ও নিজেই চলে যাবে, আমার ছাড়ার দরকার হবে না। আমার ক্যারিয়ার নষ্ট হবে।’ সে ডিভোর্স নোটিশও দেওয়ার কথা বলেছিল। সে যেখানে ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছিল, সেখানে সালমান আত্মহত্যা করবে কেন? সেগুলোই মনকে অশান্ত করছিল। প্রথম আলো : এর আগে জানিয়েছিলেন, মামলা চলাকালীন বিভিন্ন সময় হুমকিও পেয়েছিলেন। বর্তমানেও কি কোনো বিষয় নিয়ে আপনি শঙ্কিত? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: হ্যাঁ, শঙ্কিত তো অবশ্যই। যে কারণে আমি ধীরেসুস্থে এগোচ্ছি। আমি এখন আমার ভাইয়ের লাইফের সিকিউরিটি চাচ্ছি। কারণ, সে আমার পক্ষ থেকে সব কাজ করছে। যারা আগে আমাদের ঠেকিয়েছে, ন্যায়বিচারে বাধা দিয়েছে, তাদের লোকজন তো এখনো রয়েছে। আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে আমি ২০১৮ সালে লন্ডনে চলে আসি। এখান থেকেই মামলার সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমি রাষ্ট্র ও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আসামি যেন অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আসে। নইলে আসামিরা পালিয়ে যাবে। তারা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তাদের কারণে আবার মামলার কোনো কিছু যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রথম আলো : এবার বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখছেন? তাঁর মা নীলা চৌধুরী: এত দিন তাদের ভয় ছিল, মামলা চললে হত্যা মামলা হয়ে যাবে। শাস্তি হয়ে যাবে, ধরাও পড়ে যাবে। বড় বড় মাফিয়া, বড় বড় লোকজন যে কারণে কখনোই ন্যায়বিচার চায়নি। সেখানে এবার হয়তো আসামিরা শিগগিরই ধরা পড়বে। তাদের বিচারে এবার আর বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখছি না। তবে অতীতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। প্রথম আলো: অতীতে বিচারপ্রক্রিয়ায় কেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে? নীলা চৌধুরী: একবার কোর্ট থেকে যে রায় দেওয়া হলো সেটা, উভয় পক্ষকে খুশি করার জন্য। কাউকে খুশি করা তো আদালতের কাজ না। আদালতে মানুষ যায় ন্যায়বিচারের আশায়। বেশ কয়েকবার এমনও হয়েছে, আমি কোর্টে গেছি, আমাকে নিয়ে বিচারক টিটকারি করেছেন। ১৬-১৭ সালেও একবার একজন বিচারক পারিবারিক কারণে কোর্টের ডেট বাতিল করে দিয়েছিলেন। একসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। ন্যায়বিচার চাইতে আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তিনি আমাকে সন্ধ্যার পর থেকে রাত একটা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। রাত একটায় কোনো ভদ্রমহিলা কারও বাসায় দেখা করতে পারে না, কিন্তু আমি ন্যায়বিচারের জন্য ২৯ বছর ধরে সব সহ্য করে গেছি। পরে মন্ত্রী কামাল সাহেব বললেন, ‘এটা ডেড মামলা। এখন আর কি।’ আমি সালমান শাহর একটা লাশের ছবি কামাল সাহেবকে দিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, পারিনি। এই ছবিতেই বোঝা যায়, এটা আত্মহত্যা নয়, খুন। পরে পিবিআইতে মনোজ কুমার আমাকে অপমান–অপদস্থ করেছে। অনেক আগের মামলা নিয়ে হাসাহাসি পর্যন্ত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সব জায়গায় সামিরাদের লোক আছে। রাগ–ক্ষোভ নিয়ে নীরবে ধৈর্য ধরেছি।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply