Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » খরগোশের কান লম্বা কেন উরুগুয়ের রূপকথা




খরগোশের কান লম্বা কেন উরুগুয়ের রূপকথা হয়েছে কী, শিয়ালের গিন্নির শরীরটা একদম ভালো যাচ্ছে না। গা মেজমেজ করে। কিচ্ছু ভাল্লাগে না। শিয়াল মহা চিন্তিত। কী করা যায়? আশপাশে কোনো বদ্যি বা কবিরাজ নেই। হঠাৎ মনে পড়ল, আরে, খরগোশের কাছে যাই না কেন? খরগোশ বেশ চটপটে। বুদ্ধিশুদ্ধিও ভালো তার। সে হয়তো এই মুশকিলের কোনো আসান দিতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ। শিয়াল হানা দিল খরগোশের আস্তানায়। শিয়াল হাঁক দেয়, হুক্কাহুয়া। বলি ও খরগোশ ভায়া। বাড়িতে আছ নাকি? বড্ড বিপদে পড়ে তোমার কাছে আসা। খরগোশ বাড়িতেই ছিল। হুক্কাহুয়া শুনে গুহা থেকে মুখ বাড়িয়ে দেয়। এসো মামা, এসো। দুদণ্ড জিরোও। তারপর বলো কী সমাচার। শিয়াল বসে। দৌড়িয়ে এসেছে। হাঁপাচ্ছিল তাই। একটুখানি জিরিয়ে নেয়। তারপর জানায় বৃত্তান্ত। বেজার মুখে বলে, আর বোলো না ভাগনে। বড় মুসিবতে পড়ে গেছি। কয়েক দিন হলো তোমার মামির শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। মুখে একটুও রুচি নেই। কিছু খেতে পারছে না। শরীর রোগা–দুবলা হয়ে পড়েছে। কী করা যায় বলো তো? এই বিপদে তুমিই একমাত্র ভরসা। খরগোশ খানিকটা ভাবে। তারপর বলে, হুম, উপায় একটা আছে। কাঁকড়া খেলে মুখে রুচি ফিরে পাবে। চলো চলো, আমরা কাঁকড়ার খোঁজে বেরোই।

তা–ই করে দুজন। কাঁকড়া শিকার করতে হবে। খরগোশ এ কাজ ভালোই পারে। অনেকবার করেছে তো। কিছুক্ষণ পর নদীর ধারে পৌঁছানো গেল। দুজনই দুদিকে কাঁকড়ার খোঁজ লাগায়। হদিস মিলবে নিশ্চয়ই। দুজনই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। কোন গর্তে কাঁকড়া আছে, সেটা বের করতে হবে। পেয়েছি, পেয়ে গেছি। খরগোশ চেঁচিয়ে ওঠে। কাদার ভেতরে একটা গর্ত। তার মধ্যে নাদুসনুদুস একটা কাঁকড়া। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। খরগোশ তো মহাখুশি। এখন এটাকে পাকড়াও করতে হবে। আবিষ্কারের যে কী আনন্দ! খরগোশ হাসতে হাসতে বলে, দেখো দেখো, শিয়াল মামা, মোটাসোটা একখানা কাঁকড়া পেয়ে গেছি। এখন এটাকে ধরে আনব। তুমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখো। এ কথা বলে খরগোশ গর্তে হাত ঢুকিয়ে দেয়। খুবই সাবধানে। একটু এদিক–ওদিক হয়ে গেলে বিপদে পড়ার আশঙ্কা। গর্তটা বেশ গভীর। সেটা বোঝার উপায় নেই। হাত ঢোকানোর পর টের পাওয়া যাচ্ছে। নাহ, হাতে নাগাল পাওয়া যাচ্ছে। খরগোশ তখন লেজটা ঢুকিয়ে দেয়। এই গল্প যে সময়ের, সেই আদ্যিকালে খরগোশের লেজ এত ছোট ছিল না। বেশ বড়ই ছিল। লেজ তো গর্তে ঢোকানো হলো। তারপর? বিপদে পড়তে হলো তার পরপরই। বেশ ভালো বিপদই। লেজ শক্ত করে কামড়ে ধরেছে কাঁকড়া। এমন জোরসে কামড় দিয়েছে যে ছাড়া পাওয়া মুশকিল। ব্যথা–যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে খরগোশ। বেচারা। ব্যথা সহ্য করতে না পেরে চিত্কার করে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। উঁহ মাগো। কাঁকড়া আমার লেজ ছিঁড়ে ফেলছে গো। বাঁচাও! বাঁচাও! শিয়াল মামা, এসো আমাকে রক্ষা করো। কাঁকড়া আমাকে মেরেই ফেলবে গো। শিয়াল ছিল অল্প দূরে। আর্তনাদ শুনে পড়িমরি করে ছুটে আসে। সর্বনাশ! কী করা যায়। শিয়াল করে কী, খরগোশের কান ধরে হ্যাঁচকা টান দেয়। জোরে, খুব জোরে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, ওই তো দেখা যাচ্ছে লেজ। কাঁকড়াও পাঁজি কম না। সে আরও জোরে কামড় দেয়। শরীরে যতটা শক্তি আছে, সবটুকু দিয়ে। খরগোশ মরণচিত্কার দেয়। তীব্র যন্ত্রণায় নীল হয়ে গেছে তার শরীর। কাঁদতে কাঁদতে সে বলে, দস্যি কাঁকড়ার কামড়ে আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছে। শিয়াল মামা, জলদি আরও কিছু করো। শিয়াল এবার খরগোশের দুই কান ধরে আরও জোরে টান দেয়—হেঁইয়ো, হেঁইয়ো। এবারের টানাটানিতে কাজ হয়। টানের চোটে খরগোশের লেজ ছিঁড়ে যায়। ছেঁড়া অংশটুকু রয়ে যায় কাঁকড়ার কাছে। তারপর? খরগোশ তো জানে বাঁচল। কিন্তু দুদুটি বড় ক্ষতি হয়ে লেজ গেল ছোট্ট হয়ে। প্রায় অর্ধেকটা খোয়া গেল। আর, আর কী হলো? শিয়াল যে হুড়োহুড়ি করে দুই কান ধরে মহা টানাটানি করেছে, তার কী ফল। কান হয়েছে বেশ লম্বা। বেঢপ সাইজ। কাটা লেজে ঔষধি গাছগাছড়ার রস লাগাতে হলো বেশ কিছুদিন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply