বাংলাদেশের বিদ্যমান বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা

বাংলাদেশের বিদ্যমান বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষা ব্যবস্থা একটি দেশের চালিকাশক্তি বা মেরুদন্ড।কারণ এর মাধ্যমে সেই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ণয় হয়।অর্থাৎ যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যত উন্নত সে দেশের ভবিষ্যৎ তত উন্নত বা সমৃদ্ধ। কিন্তু, কোন দেশের মূল চালিকাশক্তি বা মেরুদণ্ড যদি নষ্ট হয় বা ভঙ্গুর হয় অর্থাৎ সেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যদি হয় বা একেবারে নিম্নমানের হয়, তাহলে সেই দেশের ভবিষ্যৎ কেমন হবে ? নিঃসন্দেহে বলা যায় , সেদেশের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার।কারণ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তিনটি বিষয় জড়িত। ১.অর্থনীতি, ২.রাজনীতি, ৩.দেশাত্মবোধ।এই তিনটি বিষয়ে যদি কোন দেশ মুক্তি পেতে চায় তাহলে, সে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা তাদেরকে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে দিনে দিনে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে।তা না হলে এদেশের ভবিষ্যৎপুরো অন্ধকার, তা এখনই বলা যাবে নির্দ্বিধায়। এখন আমরা যদি আমাদের দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশকে নিয়ে, আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাপকাঠি ও ২০১৪-২০২৫ সালের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা দিয়ে যদি, আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিমাপ করি, তাহলে দেখা যাবে যে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মান একেবারে নিম্নমানের। যা আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য এক ভয়ংকর হুমকির কারণ হবে।আমরা যদি ১৮০ টি দেশের ব্যবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থান(HUMAN DEVELOPMENT INDEX(HDI),GLOBAL EDUCATION DEVELOPMENT INDEX,EDUCATION QUALITY RANKING ইত্যাদি তত্ত্বের মাধ্যমে)।এবং যদি ২০১৪-২০২৪ এবং ২০২৪ এর এসএসসি, এইচএসসি এবং বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার সমীকরণ মিলিয়ে দেখি, তাহলে স্পষ্ট ফুটে উঠে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর বা নিম্নমানের । এখন আসুন, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার মূল কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করি : আমাদের দেশের ব্যবস্থা হওয়ার যেই কারণ তা হলো, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অর্থাৎ দিনে দিনে উন্নতির থেকে উন্নতির পথে কিভাবে যাওয়া যায় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তা নিয়ে সঠিকভাবে কোন গভারমেন্টই কাজ করেনি।শুধু দেখানোর জন্য নানা সময়ে উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু এর ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে একবারে মনিটরিং না করা, এর সাথে লিস্ট অফ ব্যক্তিদের গা ছাড়া ভাব। পর্যাপ্ত বাজেট না থাকা, অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত করা। শিক্ষা ব্যবস্থাকেনিয়ে উল্টাপাল্টা এক্সপেরিমেন্ট চালানো। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার স্বতন্ত্রতা না থাকা। খারাপ পাঠদান পদ্ধতি সহ আর নানা কারণ। আমাদের দেশের মধ্যে বর্তমানে দুটি পদ্ধতির মাধ্যমে পাঠদান প্রক্রিয়া চালু আছে। এক সরকারি এবং দুই বেসরকারি। এখন আমরা যদি এ দুটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সমীকরণ তৈরি করে দেখতে চাই কাদের শিক্ষার্থীরা সেরা। তাহলে আমরা দেখতে পাই বেসরকারি শিক্ষার্থীরা ।অর্থাৎ আমাদের দেশের আমাদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান একেবারে নিম্নমানের, মানে সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকারি পাঠদান প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা একেবারে নাজেহাল। আমরা যদি ২০১৪ থেকে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের বোর্ডের রেজাল্ট দেখি এবং বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাগুলো দেখি তাহলে আমরা দেখতে পাই বেসরকারি পাঠদান প্রতিষ্ঠান গুলো সবসময় এগিয়ে। এমনকি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও বেসরকারি পাঠদান প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে থাকে সবসময়।অথচ সব দিক থেকে এগিয়ে থাকার কথা ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমেও। কিন্তু তা আজ স্বপ্ন, কবে তা সত্য হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের খারাপ রেজাল্ট ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে এগিয়ে না থাকার কারণ হলো: ক্লাসের পাঠদান প্রক্রিয়া, ক্লাসের সময় অর্থাৎ প্রোডাক্টিভ সময়,মনিটরিং এর অভাব, ঠিকঠাকভাবে ক্লাস না নেওয়া, দায়িত্ব রত ব্যক্তিদের গা ছড়া ভাব, ভর্তির সময় যাচাই-বাছাই না করা।এবং সহশিক্ষা কার্যক্রম গুলোতে পিছিয়ে থাকার মূল যেই কারণ এককথায় হলো পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাব।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্ট ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে এগিয়ে থাকার কারণগুলো হলো : তাদের পাঠদান প্রক্রিয়া, ক্লাসের সময় প্রোডাক্টিভ করা, চমৎকার মনিটরিং, ঠিকঠাকভাবে ক্লাস নেওয়া, দায়িত্ব রত ব্যক্তিদের দায়িত্বশীল আচরণ এবং ভর্তি সময় যাচাই-বাছাই করা স্বশিক্ষা কার্যক্রম গুলোর জন্য চমৎকার উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনা। এখন যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নত করতে হবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং স্বতন্ত্র শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার যে সমস্যাগুলো আছে তা খুঁজে বের করে দ্রুত সমাধান করতে হবে।কারণ এই শিক্ষাব্যবস্থার সাথেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। আমাদেরকে সব সময় একটি কথা মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেমন হবে আমাদের দেশও ঠিক তেমন হবে।।