Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» »Unlabelled » প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান




আওয়ামী লীগের গত সরকারের আমলে গ্রেপ্তার করে প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে নেয়া হয় একটা গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁকেসহ তাঁর ঢাকার বাসায় গিয়ে তল্লাশি হবে। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাঁকে জানালেন, আপনার বাসায় যাবো আমরা, চলুন। কেন বাসায় যাচ্ছেন জানতে চান শফিক রেহমান। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার উত্তর, আপনি দেশে ভালোবাসা দিবসের প্রবর্তক। ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে ম্যাডামকে (শফিক রেহমানের স্ত্রী) কতো সোনাদানা কিনে দিয়েছেন, সেটা দেখতে যাবো। শফিক রেহমান স্মিত হেসে জবাব দেন, বাসায় স্বাগতম! আপনাদের ম্যাডামের সোনাদানা বলতে আমার একটি সোনা আর দুটি দানা (পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ) আছে! পাকিস্তান আমল, সাংবাদিক এবিএম মূসা তখন অবজার্ভার'র বার্তা সম্পাদক। নিজে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, ভালোবাসাবাসির কদর জানতেন! শফিক রেহমানের সঙ্গে তালেয়া রেহমানের (পরে স্ত্রী) অপ্রতিরোধ্য প্রেম চলছে। তালেয়ার বাবা তা মেনে নিচ্ছিলেন না। অবজার্ভারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়- 'শফিক-তালেয়া গতকাল বিয়ে করেছেন'! তখনো তাঁদের বিয়ে হয়নি। প্রতিবেদন দেখে তালেয়ার বাবা রেগে আগুনের রূপ ধরে ফোন করেন এবিএম মূসাকে- 'এমন প্রতিবেদন ছাপলেন কেন?' বার্তা সম্পাদক এবিএম মূসা জানালেন, 'তাঁদের বিয়ের পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা যাচাইয়ের জন্য'! প্রেমের জীবনে শফিক রেহমান-তালেয়া রেহমানের অনেক স্মৃতিজড়িত চট্টগ্রামের 'লাভ লেন'। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনকে দ্বিতীয়বারের মতো দৈনিকে রূপান্তরিত করার পর শফিক রেহমান ভাবলেন, পত্রিকাটির কার্যালয় ঢাকার তেজগাঁওয়ের যে সড়কে অবস্থিত, 'লাভ লেনের' অনুকরণে এর নাম 'লাভ রোড' করা যায়! ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে আবেদন করা হয়। বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা তখন অখণ্ডিত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। 'ভালোবাসা সড়ক' নামকরণের আবেদনপত্র পেয়ে তিনি একদিন সোজা চলে আসেন যায়যায়দিনের কার্যালয়ে। সম্পাদক শফিক রেহমানের কাছে জানতে চান খোকা- সব ভালোবাসা শুধু লাভ রোডে হলে আমরা পুরান ঢাকাবাসীর কি হবে? শফিক রেহমান বলেন, ভালোবাসা সব সড়কে আছে, এজন্যই দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত, তবে লাভ রোডে বেশি। দেশের বড়ো দুটি রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ, বিএনপি) শীর্ষনেতাদের মধ্যে ভালোবাসাবাসির অভাব আছে। একদল ভালোবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) হরতাল ডাকে, আরেকদলের সরকার হরতাল ডাকার উপলক্ষ্য তৈরি করে দেয়। ভালোবাসাকে কী আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করেন শফিক রেহমান, আরেকটি ঘটনা থেকেও তা জানা যায়। এক কবি নিজের জন্মদিনে জীবনবৃত্তান্ত দৈনিক যায়যায়দিনে ছাপাতে পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন, 'বিবাহিত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক'। এর কয়েক মাস পর ওই কবির সঙ্গে শফিক রেহমানের দেখা। তিনি কবিকে বলেন, অবিবাহিত জীবনে আপনার কোনো সন্তান থেকে না থাকলে আপনি 'বিবাহিত জীবনে দুটি সন্তানের জনক'- এটা লেখার দরকার নেই। দুটি সন্তানের বাবা লিখলেই যথেষ্ট। সন্তান ভালোবাসাবাসির ফসল। ভালোবাসার 'বিবাহিত-অবিবাহিত' বিশেষণ দরকার হয় না। শফিক রেহমানের জন্ম প্রগতিশীল পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন শিক্ষাবিদ সাইদুর রহমান। ধর্মের প্রতি সাইদুর রহমানের অবিশ্বাসের কথা খোলামেলাভাবে স্বীকার করার সৎ সাহস ছিলো। সেজন্য তাঁর বাড়ির নাম রেখেছিলেন- 'সংশয়'। তিনি রাষ্ট্রের স্থপতি নায়ক বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। রাজনীতির বাস্তবতা কতো অদ্ভূত! শফিক রেহমান এখন বিএনপির সমর্থক, দলটির পরামর্শক! এটাও সত্য, জিয়াউর রহমানের শাসনামলের শেষ দিকে 'সন্ধানী' পত্রিকায় 'যায়যায়দিন' শিরোনামের কলামে এক লেখায় শফিক রেহমান তাঁর পরকীয়ারত কাল্পনিক চরিত্র মঈন-মিলার সংলাপের মধ্য দিয়ে বলেন- 'বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার এখন দেশে ফিরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, সংগ্রাম করা উচিত।' শেখ হাসিনা তখনো বিদেশে। ওই সময় তাঁর দেশে ফেরার পক্ষে শফিক রেহমানের মতো এমন সাহসী উচ্চারণ আর কোনো সাংবাদিক করেছিলেন কী-না, তা অনেক চেষ্টা করেও জানা যায় না। পতিত স্বৈরাচারী হু.মু এরশাদ লোভের ফাঁদে যে কজন সাংবাদিককে আটকাতে পারেননি, শফিক রেহমান নিঃসন্দেহে তাঁদের মধ্যে একজন। আশ্চর্যজনক হচ্ছে, সাংবাদিকতা, লেখালেখির কারণে তিনি প্রথম মামলার শিকার হন বিএনপির সরকারের আমলে, '৯১-'৯৬ সালে। বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকাল '৯৭ সালে লেখে, শফিক রেহমান ভারতীয় হাই-কমিশন থেকে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা নেন 'দেশটির পক্ষে দালালির ফি' হিসেবে! আওয়ামী লীগের আমলেও তিনি নির্যাতিত হন। জীবনের অনস্বীকার্য সত্য যৌনতা নিয়ে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে খোলামেলা আলোচনার জন্য শফিক রেহমানকে যাঁরা একসময় 'অশ্লীল সম্পাদক' বলতেন, তাঁরা নিতান্তই ভুল ছিলেন। শফিক রেহমান নিঃসন্দেহে একবিংশ, বা দ্বাবিংশ শতাব্দির সাংবাদিক, যাঁর জন্ম ভুল করে হয়েছিলো বিংশ শতাব্দিতে। তিনি গত শতাব্দিতেও ছিলেন উত্তরাধুনিক। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে ফিরে তাঁর দেয়া কিছু বক্তব্য অবশ্যই একপেশে, বিতর্কিত, বা অশ্লীল। এ সময়ের মধ্যে তাঁর কিছু আচরণও অগ্রহণযোগ্য। আজ তাঁর জন্মদিন। নমিত অভিবাদন, শুভ জন্মদিন। আওয়ামী লীগের গত সরকারের আমলে গ্রেপ্তার করে প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে নেয়া হয় একটা গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁকেসহ তাঁর ঢাকার বাসায় গিয়ে তল্লাশি হবে। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাঁকে জানালেন, আপনার বাসায় যাবো আমরা, চলুন। কেন বাসায় যাচ্ছেন জানতে চান শফিক রেহমান। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার উত্তর, আপনি দেশে ভালোবাসা দিবসের প্রবর্তক। ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে ম্যাডামকে (শফিক রেহমানের স্ত্রী) কতো সোনাদানা কিনে দিয়েছেন, সেটা দেখতে যাবো। শফিক রেহমান স্মিত হেসে জবাব দেন, বাসায় স্বাগতম! আপনাদের ম্যাডামের সোনাদানা বলতে আমার একটি সোনা আর দুটি দানা (পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ) আছে! পাকিস্তান আমল, সাংবাদিক এবিএম মূসা তখন অবজার্ভার'র বার্তা সম্পাদক। নিজে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, ভালোবাসাবাসির কদর জানতেন! শফিক রেহমানের সঙ্গে তালেয়া রেহমানের (পরে স্ত্রী) অপ্রতিরোধ্য প্রেম চলছে। তালেয়ার বাবা তা মেনে নিচ্ছিলেন না। অবজার্ভারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়- 'শফিক-তালেয়া গতকাল বিয়ে করেছেন'! তখনো তাঁদের বিয়ে হয়নি। প্রতিবেদন দেখে তালেয়ার বাবা রেগে আগুনের রূপ ধরে ফোন করেন এবিএম মূসাকে- 'এমন প্রতিবেদন ছাপলেন কেন?' বার্তা সম্পাদক এবিএম মূসা জানালেন, 'তাঁদের বিয়ের পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা যাচাইয়ের জন্য'! প্রেমের জীবনে শফিক রেহমান-তালেয়া রেহমানের অনেক স্মৃতিজড়িত চট্টগ্রামের 'লাভ লেন'। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনকে দ্বিতীয়বারের মতো দৈনিকে রূপান্তরিত করার পর শফিক রেহমান ভাবলেন, পত্রিকাটির কার্যালয় ঢাকার তেজগাঁওয়ের যে সড়কে অবস্থিত, 'লাভ লেনের' অনুকরণে এর নাম 'লাভ রোড' করা যায়! ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে আবেদন করা হয়। বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা তখন অখণ্ডিত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। 'ভালোবাসা সড়ক' নামকরণের আবেদনপত্র পেয়ে তিনি একদিন সোজা চলে আসেন যায়যায়দিনের কার্যালয়ে। সম্পাদক শফিক রেহমানের কাছে জানতে চান খোকা- সব ভালোবাসা শুধু লাভ রোডে হলে আমরা পুরান ঢাকাবাসীর কি হবে? শফিক রেহমান বলেন, ভালোবাসা সব সড়কে আছে, এজন্যই দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত, তবে লাভ রোডে বেশি। দেশের বড়ো দুটি রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ, বিএনপি) শীর্ষনেতাদের মধ্যে ভালোবাসাবাসির অভাব আছে। একদল ভালোবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) হরতাল ডাকে, আরেকদলের সরকার হরতাল ডাকার উপলক্ষ্য তৈরি করে দেয়। ভালোবাসাকে কী আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করেন শফিক রেহমান, আরেকটি ঘটনা থেকেও তা জানা যায়। এক কবি নিজের জন্মদিনে জীবনবৃত্তান্ত দৈনিক যায়যায়দিনে ছাপাতে পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন, 'বিবাহিত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক'। এর কয়েক মাস পর ওই কবির সঙ্গে শফিক রেহমানের দেখা। তিনি কবিকে বলেন, অবিবাহিত জীবনে আপনার কোনো সন্তান থেকে না থাকলে আপনি 'বিবাহিত জীবনে দুটি সন্তানের জনক'- এটা লেখার দরকার নেই। দুটি সন্তানের বাবা লিখলেই যথেষ্ট। সন্তান ভালোবাসাবাসির ফসল। ভালোবাসার 'বিবাহিত-অবিবাহিত' বিশেষণ দরকার হয় না। শফিক রেহমানের জন্ম প্রগতিশীল পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন শিক্ষাবিদ সাইদুর রহমান। ধর্মের প্রতি সাইদুর রহমানের অবিশ্বাসের কথা খোলামেলাভাবে স্বীকার করার সৎ সাহস ছিলো। সেজন্য তাঁর বাড়ির নাম রেখেছিলেন- 'সংশয়'। তিনি রাষ্ট্রের স্থপতি নায়ক বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। রাজনীতির বাস্তবতা কতো অদ্ভূত! শফিক রেহমান এখন বিএনপির সমর্থক, দলটির পরামর্শক! এটাও সত্য, জিয়াউর রহমানের শাসনামলের শেষ দিকে 'সন্ধানী' পত্রিকায় 'যায়যায়দিন' শিরোনামের কলামে এক লেখায় শফিক রেহমান তাঁর পরকীয়ারত কাল্পনিক চরিত্র মঈন-মিলার সংলাপের মধ্য দিয়ে বলেন- 'বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার এখন দেশে ফিরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, সংগ্রাম করা উচিত।' শেখ হাসিনা তখনো বিদেশে। ওই সময় তাঁর দেশে ফেরার পক্ষে শফিক রেহমানের মতো এমন সাহসী উচ্চারণ আর কোনো সাংবাদিক করেছিলেন কী-না, তা অনেক চেষ্টা করেও জানা যায় না। পতিত স্বৈরাচারী হু.মু এরশাদ লোভের ফাঁদে যে কজন সাংবাদিককে আটকাতে পারেননি, শফিক রেহমান নিঃসন্দেহে তাঁদের মধ্যে একজন। আশ্চর্যজনক হচ্ছে, সাংবাদিকতা, লেখালেখির কারণে তিনি প্রথম মামলার শিকার হন বিএনপির সরকারের আমলে, '৯১-'৯৬ সালে। বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকাল '৯৭ সালে লেখে, শফিক রেহমান ভারতীয় হাই-কমিশন থেকে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা নেন 'দেশটির পক্ষে দালালির ফি' হিসেবে! আওয়ামী লীগের আমলেও তিনি নির্যাতিত হন। জীবনের অনস্বীকার্য সত্য যৌনতা নিয়ে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে খোলামেলা আলোচনার জন্য শফিক রেহমানকে যাঁরা একসময় 'অশ্লীল সম্পাদক' বলতেন, তাঁরা নিতান্তই ভুল ছিলেন। শফিক রেহমান নিঃসন্দেহে একবিংশ, বা দ্বাবিংশ শতাব্দির সাংবাদিক, যাঁর জন্ম ভুল করে হয়েছিলো বিংশ শতাব্দিতে। তিনি গত শতাব্দিতেও ছিলেন উত্তরাধুনিক। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে ফিরে তাঁর দেয়া কিছু বক্তব্য অবশ্যই একপেশে, বিতর্কিত, বা অশ্লীল। এ সময়ের মধ্যে তাঁর কিছু আচরণও অগ্রহণযোগ্য। আজ তাঁর জন্মদিন। নমিত অভিবাদন, শুভ জন্মদিন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply